নয়া শ্রম কোডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথে শ্রমিকরা
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ১ এপ্রিল নতুন অর্থবর্ষে পা রাখল ভারত। আর একই সঙ্গে কার্যকর হয়ে গেল ৪টি নয়া শ্রম কোড। এর বিরুদ্ধে আন্দোলনকে নয়া উচ্চতায় পৌঁছে দিতে কোমর বেঁধেছে দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলি।
গত ১৫ মার্চ থেকে মোদী সরকারের বেশ কয়েকটি নীতি, যেমন ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থা এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি প্রতিবাদ হয়েছে, শুধু তাই নয় তিনটি কৃষি আইনের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ জারি রয়েছে।
কোভিড ১৯ অতিমারির পর থেকেই দুনিয়ার মেহনতি জনতার জীবনে ‘আধুনিক দাসত্ত্বে’র চিহ্নগুলি দেখা যাচ্ছে। নিয়োগকর্তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো শ্রমিকদের দিয়ে যেকোনো কাজ করিয়ে নিচ্ছে, শ্রমিকরাও বাধ্য হয়ে তা মেনে নিচ্ছে। লক্ষ লক্ষ ক্ষেত্রে শ্রমিকরা ন্যূনতম মজুরিও পাচ্ছে না। অর্থাৎ জাতীয় পর্যায় তারা প্রতিদিন ১৭৬ টাকা করে পাচ্ছেন না, রোজ কাজও জুটছে না। ফলে যেটুকু উপার্জন হতে পারত, তাও হচ্ছে না।
এই জন্যই শ্রমিক শ্রেণি এই চারটি শ্রম কোডকে তাদের জীবনের বিপদ হিসেবে দেখছে। তাদের বেশিরভাগই বিশ্বাস করেন যে অদুর ভবিষ্যতে অর্থনীতিতে উন্নতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। শ্রমিকদের ভয় ভিত্তিহীন নয়। বাড়ি কেনবার জন্য মানুষের টাকা নেই এবং বাড়ি কেনার চাহিদা না থাকায় কোন নির্মাণ ব্যবসায়ীদের হাতেও টাকা নেই নির্মাণকাজে বিনিয়োগ করার জন্য। কাজেই নির্মাণকাজের সাথে যুক্ত থাকা শ্রমিকরা খুব কঠিন অবস্থাতেই পড়েছেন।
শ্রমিক শ্রেণি জানে যে খাতায় কলমে ৮ ঘণ্টা কাজ যখন ছিল তখনও তাদের কিভাবে ১০-১২ ঘণ্টা করে কাজ করতে হয়েছে, তারা এই নয়া শ্রম কোডের ১২ ঘণ্টার কাজের কথা শোনার পর থেকে আরও শোষণের ভয় পাচ্ছেন। এই আইনের মাধ্যমে নিয়োগকর্তাদের হাতে বেশিরভাগ ক্ষমতা দিয়ে রাখা হয়েছে, তারা যখন ইচ্ছে শ্রমিকদের বরখাস্ত করে দিতে পারে বা বেগার খাটাতে পারে, তবে এই নিয়মটি আজ শুধু আইন সঙ্গত হল কারণ এই নিয়ম সমস্ত জায়গায় আইন বহির্ভূতভাবেই চলে আসছিল।
শ্রমিকরা যে এই আইনের বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিরোধমুখী তা স্পষ্ট বোঝা যায়। এবং শুধু শ্রমিকই নয় এর ফলে দেশে যে মারাত্মক অস্থিরতার সৃষ্টি হতে চলেছে তা বুঝতে পারছে সবাই।