ঝাড়খণ্ড,ওড়িশা,তেলেঙ্গনার ‘প্রায় নির্মূল’ হয়ে যাওয়া জেলাগুলিতে বাড়ছে মাওবাদী কর্মকাণ্ড, উদ্বিগ্ন প্রশাসন
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত চার-পাঁচ মাসের লকডাউন পর্যায়ে বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশ করোনা মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকার সুযোগে মধ্য ভারতের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মাওবাদীরা তাদের কর্মকাণ্ড বাড়িয়েছে। বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের রিপোর্ট দিয়েছে গোয়েন্দা দফতরগুলি। গোটা লকডাউন এবং আংশিক লকডাউনের দিনগুলোয় মাওবাদীদের সঙ্গে নিরাপত্তাবাহিনীর বিভিন্ন সংঘর্ষের ঘটনা থেকে তারই প্রমাণ মেলে। ওই সব সংঘর্ষগুলিতে দুপক্ষেরই ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, জুনের শেষ অথবা জুলাইয়ের প্রথম দিকে ওড়িশার কন্ধমাল জেলার সমরবান্ধা জঙ্গলে একটি বিশাল মাওবাদী শিবির আয়োজিত হয়। পুলিশ শেষ মুহূর্তে খবর পেয়ে হানা দিয়ে কিছু ব্যানার ও মাওবাদী সাহিত্য উদ্ধার করে।পুলিশ রিপোর্ট অনুযায়ী, উড়িষ্যার দশটি জেলা: কোরাপুট, মালকানগিরি, রায়গঢ়া, বড়গড়, বলাঙ্গির, নবরঙ্গপুর, কালাহান্ডি, নুপাডা, কান্ধামাল ও সুন্দরগড় মাওবাদীদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুযায়ী, জুলাইয়ের শুরুতে ঝাড়খণ্ডে মাওবাদীরা ব্যাপক ভাবে নিয়োগে সফল হয়েছে। শাসকদের মতে, এই জেলাগুলিতে মাওবাদী তৎপরতা ‘প্রায় নির্মূল’ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু রাজ্যে ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের মধ্যে রাজনৈতিক প্রচার চালিয়ে সংগঠন বাড়িয়েছে তারা। একই ছবি দেখা গেছে বিহারেও। বহুদিন নিরুত্তাপ থাকা লক্ষ্মীসরাই, জামুই, পূর্ব চম্পারণ, কিষাণগঞ্জের মতো জেলাগুলিতে নতুন করে মাওবাদী তৎপরতার খবর পাওয়া গেছে।
জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে, ঝাড়খণ্ড রাজ্যর পশ্চিম সিংভূম জেলায় বন বিভাগের বারোটি ভবন উড়িয়ে দেয় মাওবাদীরা। একই সময়ে সেখানে একটি রাস্তায উড়িয়ে দেওয়া হয় এবং ১৩ টি গাড়িতে আগুন দেয় তারা।
একই সময়ে তেলেঙ্গনায় সিপিআই (মাওবাদী) এবং সুরক্ষা বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ হয়। কুমরামভিম আসিফাবাদ ও আরও দু-একটি জেলায় গুলিবিনিময় হয়। ভারাভারা রাও সহ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির দাবিতে ২৫ জুলাই তেলেঙ্গনা বন্ধের ডাক দেয় মাওবাদীরা। ওই দিন তেলেঙ্গনা ও অন্ধ্রপ্রদেশের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তা কেটে দেয় মাওবাদীরা।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ২০২২ সালের মধ্যে দেশকে মাওবাদী মুক্ত করার কর্মসূচি নিয়েছে। ১৫ আগস্টের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, সরকার যে নতুন নতুন বেসরকারিকরণের কর্মসূচিগুলি নিয়েছে, তার বাস্তবায়নের জন্য আগামি ২ বছর খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘আরবান নকশাল’ তকমা দিয়ে একের পর বুদ্ধিজীবীকে গ্রেফতার ও জেরা করার ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই মনে করছেন আগামী ২ বছরে মাওবাদীদের সঙ্গে প্রশাসনের সংঘাত নতুন মাত্রায় পৌঁছবে।