Home খবর খসড়া শ্রম বিধি আরও বেশি শ্রমিক শোষণের পথ খুলে দেবে

খসড়া শ্রম বিধি আরও বেশি শ্রমিক শোষণের পথ খুলে দেবে

খসড়া শ্রম বিধি আরও বেশি শ্রমিক শোষণের পথ খুলে দেবে
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: কিছুদিনের মধ্যেই প্রকাশিত হবে নয়া শ্রমকোডের বিধিগুলি। যেটুকু জানা যাচ্ছে, তাতে এটি শ্রমিক শ্রেণিকে আরও বেশি  শোষণের দিকে ঠেলে দেবে। মোদি সরকার এই খসড়া বিধিগুলিকে ‘কাঙ্ক্ষিত শ্রম সংস্কা’ বলে প্রচার চালালেও আসলে বিদেশি ও দেশি বড়ো শিল্প ও ব্যবসার স্বার্থেই এই আইন নিয়ে আসছে।

খসড়া বিধিগুলি দেশের ৪৪টি কেন্দ্রীয় শ্রম আইনকে চারটি নতুন শ্রম কোডের মধ্যে যুক্ত করছে। মজুরি কোড ২০১৯, শিল্প সম্পর্ক কোড, ২০২০; পেশাগত সুরক্ষা, স্বাস্থ্য ও কাজের পরিবেশ সম্পর্কিত কোড,২০২০; এবং সামাজিক সুরক্ষা সম্পর্কিত কোড ২০২০ এই চারটি কোড সংসদে পাশ হয়ছিল। কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলি এই চারটি শ্রম কোডকে “শ্রমিক বিরোধী” বলে আখ্যায়িত করেছে এবং সর্বভারতীয় স্তরে ধর্মঘট পালন করেছিল এর বিরুদ্ধে।

লকডাউনের সময় যখন শ্রমিকরা কাজ হারিয়েছে, যেই সময় তাদের সুরক্ষা ও সহায়তার প্রয়োজন বেশি ছিল, সেই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে বিক্ষোভ এড়াতে নির্লজ্জভাবে সংসদে পাস করা হয় শ্রমিক বিরোধী ও বড়ো কর্পোরেট স্বার্থ রক্ষার এই আইন। মোদি সরকার তার নির্লজ্জ কাজকে আখ্যা দিয়েছে ‘আত্মনির্ভর ভারত অভিযান’ ও ‘জাতীয় স্বার্থ’ নামে। যা আসলে দেশের মানুষ বা শ্রমিকদের স্বার্থে নয় বড়ো কর্পোরেটদের স্বার্থের কথা চিন্তা করে করা হয়েছিলো।

শ্রম মন্ত্রালয় সচিবের কথা অনুযায়ী শ্রমিকদের বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং চারদিনের কার্যদিবস, অর্থাৎ তিনদিনের ছুটি নিয়ে চারদিনের দৈনিক ১২ ঘণ্টা কাজের সুযোগ থাকছে নয়া বিধিতে। তবে শ্রম মন্ত্রালয় উপেক্ষা করছে, আট ঘণ্টার বেশি কাউকে দিয়ে কাজ না করানোর নীতি, সপ্তাহে সপ্তম দিনে সাপ্তাহিক ছুটি দিয়ে ছয় দিন কার্যদিবসের নীতি। অমানবিক শোষণের ও বেশি সময় ধরে অমানবিক পরিশ্রম করানোর বিরুদ্ধে শ্রমিকশ্রেণির এক বিশাল লড়াইয়ের পর এই ৮ ঘণ্টার কাজের নীতি পাওয়া গেছিল, যা উপেক্ষা করে মোদি সরকার পূর্বের সেই অমানবিক শোষণ ব্যবস্থাকেই ফিরিয়ে আনতে চলেছে।

কাজের সময় বাড়ানোর অর্থই হচ্ছে শ্রমিকদের পক্ষে বিপত্তি বাড়ানো, যদি শ্রমিক পরিবারগুলির স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাই নষ্ট হয়ো যায় তবে আর তিনদিন ছুটি ও বিনামূল্যে চেকআপ ও অন্যান্য সামাজিক সুরক্ষা দেওয়ার মানে কী? একজন ব্যক্তিকে  কাজের যন্ত্রের মতো ব্যাবহার করা যায় না, কারণ তাদের জীবন আছে,  পরিবার আছে। উন্নত জীবনের জন্য পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোটাও অত্যন্ত জরুরি।

এই জাতীয় পরিস্থিতি দেশের শোষণমূলক ব্যবস্থা‌টিকে বহুগুন তীব্র করবে, যার ফলে দেশের উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাবে। নতুন বিধিগুলি শ্রমিকদের পক্ষে নিয়োগকর্তাদের সাথে মজুরি ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা করা এবং প্রতিবাদ, ধর্মঘট করাকেও কঠিন করে তুলবে।  এর মধ্যে শ্রমিক নেতারা নিজেদের প্রতিষ্ঠানে শাস্তির শিকার হবে।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *