Home খবর মাওবাদীদের শক্তি বৃদ্ধির খবরে তেলেঙ্গনায় পুলিশি সক্রিয়তা চরমে, গুলির লড়াই, মাওবাদীদের বিবৃতি
0

মাওবাদীদের শক্তি বৃদ্ধির খবরে তেলেঙ্গনায় পুলিশি সক্রিয়তা চরমে, গুলির লড়াই, মাওবাদীদের বিবৃতি

মাওবাদীদের শক্তি বৃদ্ধির খবরে তেলেঙ্গনায় পুলিশি সক্রিয়তা চরমে, গুলির লড়াই, মাওবাদীদের বিবৃতি
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত কয়েকদিন ধরেই তেলেঙ্গনায় সংবাদের শিরোনামে মাওবাদীরা। তাদের সশস্ত্র বাহিনীর খোঁজে গোদাবরী তীরের জেলাগুলিতে পুলিশ অভিযান অনেক গুন বেড়ে গেছে। পুলিশের সক্রিয়তা কেন্দ্রীভূত হয়েছে কুমারমভিম আসিফাবাদ ও ভদ্রাদ্রি কোট্টাগুদেম জেলায়। গত ১৫ তারিখ আদিলাবাদ ও কোট্টাগুদেমে পুলিশ ও মাওবাদীদের গুলি বিনিময়ও হয়। কোট্টাগুদেমে আহত হন এক পুলিশকর্মী।

২০১৪ সালে পৃথক তেলেঙ্গনা রাজ্য তৈরি হয়। তার আগে অবধি ভদ্রাচলম এজেন্সি অঞ্চল থেকে নিয়মিত মাওবাদী সক্রিয়তার খবর আসত। কিন্তু তেলেঙ্গনা রাজ্য গঠিত হওয়ার পর নানা ভাবে মাওবাদী সক্রিয়তা কমে। শোনা যাচ্ছিল, পার্শ্ববর্তী ছত্তীসগঢ় থেকেই কাজ করছে তেলেঙ্গনা রাজ্য কমিটি। তবে বর্ষাকালে তারা নদীতীরের জঙ্গল ঘেরা গ্রামগুলিতে আসাযাওয়া করত। সম্প্রতি শোনা যায় মাওবাদীদের অন্তত চারটি দল ওই জেলাগুলিতে সক্রিয়তা বাড়িয়েছে। গত আড়াই মাস ধরে তারা তেলেঙ্গনাতেই রয়েছে। এলাকায় নিজেদের ভিত্তি বাড়াচ্ছে তারা। নদীতীরের জঙ্গল ঘেরা গ্রামগুলি আদিবাসী অধ্যুষিত।

এরপরই বাড়ে পুলিশি সক্রিয়তা। গত সাতদিন ধরে জঙ্গল ঘেরা গ্রামগুলি ঘিরে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ ও গ্রে হাউন্ড বাহিনী। মাওবাদী বিরোধী অভিযানে যোগ দিয়েছে ছত্তীসগঢ়, অন্ধ্র্প্রদেশ, মহারাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনীও। মাওবাদীদের তেলেঙ্গনা রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য ভাস্করকে নিকেষ করাই তাদের মূল লক্ষ্য। কিন্তু ১৫ তারিখের গুলি বিনিময়েরও পর পালিয়ে যায় ভাস্করের নেতৃত্বাধীন বাহিনী। এখনও বিশাল পুলিশ বাহিনী জঙ্গল ঘিরে রেখেছে। একাংশ গ্রামে গ্রামে গিয়ে মাওবাদীদের খোঁজে তল্লাশি করছে। গোদাবরী নদীর ওপর নজর রাখছে পুলিশের অনেকগুলি দল, যাতে মাওবাদীরা ছত্তীসগঢে় চলে যেতে না পারে।    

তারপরই প্রেস বিবৃতি দেয় মাওবাদীদের তেলেঙ্গনা রাজ্য কমিটি।বিবৃতিতে তারা জানায়, জঙ্গল ঘেরা গ্রামগুলিতে ব্যাপক অত্যাচার চালাচ্ছে পুলিশ। প্রায় ৬০ জন আদিবাসীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অনেককে গ্রেফতার না করে আটকে রাখা হচ্ছে। গ্রামবাসীদের ওপর অত্যাচার করছে পুলিশ। মেয়েদের ধর্ষণ করা হচ্ছে। গত কয়েক মাসে তেলেঙ্গানায় তাদের একজন রিজিওনাল কমিটি সদস্য সহ কয়েকজনকে হত্যা করেছে পুলিশ। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত গোটা দণ্ডকারণ্যে ২০ জন মাওবাদী কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। ওই প্রেস বিবৃতিতে তেলেঙ্গনা রাজ্য কমিটির মুখপাত্র জগনের দাবি, তারা অতিমারির জন্য বন্দুকের যুদ্ধে জড়াতে চাইছেন না। কেবল জনগণকে সংগঠিত করে প্রতিরোধ করছেন। কিন্তু লকডাউনকে কাজে লাগিয়ে মাওবাদী আন্দোলনকে দমন করতে চাইছে টিআরএস-বিজেপি। ২০২২-এর মধ্যে মাওবাদী আন্দোলনকে শেষ করা বিজেপির লক্ষ্য। হিন্দু রাষ্ট্র কায়েমের জন্য মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নিতে চাইছে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা। মাওবাদীদের দাবি তারা এখনও নিজেদের সংযত রেখেছেন কিন্তু পুলিশ জনগণের ওপর অত্যাচার এবং তল্লাশি বন্ধ না করলে তারা স্থানীয় টিআরএস ও বিজেপি নেতাদের ‘শাস্তি’ দিতে বাধ্য হবেন।

মাওবাদীদের বিবৃতি প্রকাশ্যে আসার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় তেলেঙ্গনা প্রশাসনে। রাজ্য পুলিশের ডিজি ঝটিকা সফলে কুমারমভিম আসিফাবাদ জেলায় চলে যান। সেখানে উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারপর সাংবাদিকদের বলেন, মাওবাদীদের বক্তব্য মিথ্যে। আদিবাসীদের সঙ্গে পুলিশের সম্পর্ক খুবই ভালো। তারা পুলিশদের সাহায্য করেন। আদিবাসীরা শান্তিপ্রিয়, তাদের গ্রামে গিয়ে মাওবাদীরা অশান্তি তৈরি করছে।        

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *