পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: তাঁরা বলছেন, বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকে ওই জমিতে তারা ফসল ফলাচ্ছেন। বর্তমানে সেই ফসল ফলানোর জন্য ৩ লক্ষ টাকা ধারও নিয়েছেন। মঙ্গলবার চোখের সামনে সেই ফসল নষ্ট করে দিয় মধ্যপ্রদেশের গুনা জেলার ভূমি রাজস্ব দফতর। সঙ্গে ছিল বিশাল পুলিশ বাহিনী।
ওরা রামকুমার আহিরওয়ার ও সাবিত্রী দেবী। দলিত দম্পতি। ওই জমিতেই ছেলেমেয়েদের নিয়ে থাকেন তারা। চোখের সামনে কঠিন পরিশ্রমে ফলানো ফসল নষ্ট হয়ে যেতে দেখে নিজেদের স্থির রাখতে পারেননি দম্পতি। কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাদের পিটিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে তোলে। বাবামায়ের কাছে আসতে চাওয়া সন্তানদের গালাগালি দিয়ে সরিয়ে দেয়। প্রশাসন অবশ্য সরকারের কাজে বাধা দেওয়ার জন্য দম্পতির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। ক্লিন চিট পেয়েছে পুলিশ।
গুনার জেলাশাসক বলেছেন, পুলিশ উদ্যোগ না নিলে দম্পতির মৃত্যু হত। সেটা না হওয়ায় কেসের সংখ্যা বাড়েনি।
একটি কলেজ তৈরির জন্য ২০১৮ সালে ২০ বিঘা খাস জমি চিহ্নিত করে মধ্যপ্রদেশ সরকার। সেই জমিতে পাঁচিল তুলতে মঙ্গলবার গিয়েছিল ভূমি রাজস্ব দফতর। সাবিত্রী দেবীর বক্তব্য, ফসল ফলানোর জন্য ৩ লক্ষ টাকা ধার নিয়েছেন তারা। সেই টাকা কে শোধ দেবে? সরকার? মরা ছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। আপাতত সুস্থ আছেন দম্পতি।
প্রশাসনের বক্তব্য, স্থানীয় এক গ্যাংস্টার এলাকায় ৪৫ বিঘা জমি দখল করে আছে। তাকে ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে ওই জমিতে চাষ করছিলেন ওই দম্পতি। জমির দখল রাখতে ওই পরিবারকে কাজে লাগাচ্ছে ওই গ্যাংস্টার।
এই ঘটনা আরও একবার প্রমাণ করল, আমূল ভূমি সংস্কার না হওয়াই ভারতীয় অর্থনীতির বিকাশে প্রধান অন্তরায়। ভূমিহীন কৃষকদের সিংহভাগই দলিত ও আদিবাসী মানুষ। কৃষি ক্ষেত্রে কোটি কোটি টাকা সাম্রাজ্যবাদী পুঁজি ঢুকিয়ও এই সমস্যার সমাধান করতে পারবে না ভারতের শাসক শ্রেণি।