Home খবর ‘উপসর্গহীন ব্যক্তিদের থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নজির খুবই বিরল’: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

‘উপসর্গহীন ব্যক্তিদের থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নজির খুবই বিরল’: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা

‘উপসর্গহীন ব্যক্তিদের থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নজির খুবই বিরল’: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক:  জ্বর-সর্দি হলে অন্যদের কাছে যাওয়া উচিৎ নয়, তাতে তাদেরও হতে পারে। এ আমরা ছোটো থেকে শুনেছি। পালনও করেছি। ছোটো থেকেই দেখে এসেছি, অসুখ হলে, ডাক্তারবাবুর কাছে গেলে প্রয়োজনে তিনি রক্ত বা অন্যান্য পরীক্ষা করতে দেন।

করোনা অতিমারি আমাদের চেনা সব অভিজ্ঞতা পালটে দিল। জানা গেল, এ এমন রোগ, যদি কারও নাও হয় তবু সে অন্য মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। অর্থাত উপসর্গহীন ব্যক্তিও রোগ ছড়াতে পারেন। তাই যার তার রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। রোগীর সংষ্পর্শে কেউ এলেই তাকে নিভৃতবাসে পাঠিয়ে দিতে হবে। সকলের সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। যার পোশাকি নাম সোশাল ডিসট্যান্সিং। কারণ প্রতিটি মানুষই সম্ভাব্য করোনা বাহক।

সেই পরিস্থিতি এবার পালটাতে চলেছে। সোমবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, উপসর্গহীন ব্যক্তির থেকে করোনা সংক্রমনের নজির ‘খুবই বিরল’। প্রথম দিকে দু-একটা ঘটনা দেখে তাদের মনে হয়েছিল বটে, যে আপাত দৃষ্টিতে সুস্থ ব্যক্তিও রোগ ছড়াচ্ছেন, কিন্তু এখন সারা পৃথিবী থেকে প্রচুর রিপোর্ট হাতে পেয়ে তাদের উল্টো মনে হচ্ছে।

এই নতুন তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ কোভিড এমনই রোগ, যাতে ৮০ ভাগ আক্রান্তেরই কোনো উপসর্গ হয় না বা মৃদু উপসর্গ হয়। অনেক আক্রান্তের আবার সংক্রমিত হওয়ার বেশ কিছুদিন পর উপসর্গ দেখা দেয়। বস্তুত, এই নতুন তথ্য সামনে আসার পর উপসর্গহীন ব্যক্তির সঙ্গে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তাই প্রশ্নের মুখে পড়়ে গেল। মনে করা হচ্ছে, কিছুদিনের মধ্যেই করোনা প্রতিরোধে যে সব পদ্ধতি সব দেশগুলো মেনে চলছিল, তাতে ব্যাপক পরিবর্তন আসতে চলেছে।

হু-র ইমার্জিং ডিজিজ অ্যান্ড জুনোসিস ইউনিটের প্রধান, ডা. মারিয়া ভ্যান কেরখোভ জানিয়েছেন, এখন থেকে সরকারগুলির দায়িত্ব হবে, শুধুমাত্র উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে রক্ত পরীক্ষা করা এবং তাদের সংসষ্পর্শে আসা মানুষদের নজরে রাখা।

অথচ উপসর্গহীন ব্যক্তিরাও সংক্রমণ ছড়াতে পারেন বলেই এতদিন দেশে দেশে লকডাউন চলছে বা চলছে। দীর্ঘ লকডাউনে দুনিয়া জুড়ে অধিকাংশ মানুষের জীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে, বাণিজ্যে গভীর সংকট তৈরি হয়েছে। এখন দেখা যাচ্ছে, লকডাউনের বুনিয়াদটাই ছিল ভুল ধারণাপ্রসূত। তাহলে এই বিপর্যয়ের দায় কে নেবে? বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা?

এমন গুরুতর বিষয় নিয়ে নিশ্চিন্ত না হয়ে মানব সমাজকে কেন বিপর্যয়ে ঠেলে দেওয়া হল? এর সঙ্গে স্বাস্থ্য ব্যবসা জড়িয়ে কিনা, আর্থিক মন্দার দায় পুঁজিবাদের বদলে একটি ভাইরাসের ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। কারণ গোটা লকডাউন পর্যায়ে শেয়ার বাজারে ধ্বস নামেনি, ধনকুবেরদের সম্পদ বৃদ্ধি থেমে থাকেনি। জীবন দুর্বিসহ হয়েছে শ্রমজীবী ও অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মচারীদের।

এটা ঠিক যে পর্যাপ্ত তথ্য ও গবেষণা ছাড়া বিজ্ঞানে কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছনো যায় না। তার জন্য সময় লাগে। তাহলে সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর আগেই কেন আতঙ্ক ছড়ানো হল? দেখাই যাচ্ছে, যা যা গত তিন মাসে হয়েছে, তাতে ক্ষমতাসীনদের শ্রেণি স্বার্থে তেমন ঘা পড়েনি। যদি কোনো বড়ো চক্রান্ত নাও হয়ে থাকে, তাহলে বুঝতে হবে উপরতলার মানুষদের আতঙ্কের দায় চুকোতে হচ্ছে নীচের তলার মানুষদের। এর ফলাফল অনেক দূর যাবে।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *