পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ‘গুরুতর ও নতুন’ হুমকি। বিষয়টিকে এভাবেই দেখছে কেন্দ্রীয় সরকার। অক্টোবর মাসেই প্রথম সামনে আসে বিষয়টি। ছত্তীসগঢ়ের সুকমা জেলার দুটি সিআরপিএফ শিবিরের ওপর তিন দিনে মোট চারবার উড়ে যায় একটি চার পা-ওলা দ্রোন। সেগুলি থেকে সাদা ও লাল আলো বেরোচ্ছিল।
মৃদু আওয়াজ শুনে সিআরপিএফ কর্মীরা আতঙ্কিত হয়ে বন্দুক নিয়ে পজিশন নেন। কিন্তু গুলি চালানোর আগেই দ্রোনটি চলে যায়। ওই দুটি শিবিরই মাওবাদী দমনের রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের দিক থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রয়েছে। কিস্তারাম ও পালোধিতে। শিবির দুটি ওড়িশা ও মহারাষ্ট্রের সীমান্তে। এছাড়া ওই অঞ্চল থেকে জঙ্গল পথে অন্ধ্রপ্রদেশেও চলে যাওয়া যায়। তাছাড়া ওই শিবিরগুলির পাশে ভালো রাস্তাঘাটও নেই। ঘন জঙ্গলের মধ্যে অবস্থিত হওয়ায় মাওবাদীদের গতিবিধিও ঠিকমতো নজর রাখা যায় না।
ঘটনার পরই দ্রোন আতঙ্ক তৈরি হয় সিআরপিএফে। ঘটনাটি উপর মহলে জানানো হয়। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের যে কেন্ত্রীভূত কমান্ড রয়েছে, তারা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক ভাবে মুম্বইয়ের একটি সংস্থাকে চিহ্নিত করা হয়। যারা বেশ কয়েকজন অজানা ক্রেতাকে দ্রোন বিক্রি করেছে। তাদের মধ্যে মাওবাদীরাও রয়েছে বলে অনুমান। নিরাপত্তা সংস্থার দাবি, তারা অনেকদিন ধরেই মনে করছিলেন মাওবাদীদের কাছে দ্রোনের মতো উন্নত প্রযুক্তি রয়েছে। এই ঘটনায় তার প্রমাণ মিলল। ওই দ্রোন দিয়ে সিআরপিএফ শিবির দুটির বিস্তৃত ভিডিও ও স্থিরচিত্র তোলা হয়েছে মনে করছে নিরাপত্তা সংস্থা। এই ধরনের দ্রোনগুলি মাটি থেকে রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে চালনা করা যায়।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সমস্ত ‘উগ্র বামপন্থা কবলিত’ রাজ্যগুলির আধা সেনাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে এমন কোনো দ্রোন বা নিরস্ত্র আকাশযান দেখলেই গুলি করে নামানো হয়। এতদিন শত্রু রাষ্ট্রের দ্রোনের ক্ষেত্রে এমন নির্দেশ দেওয়া ছিল। দেশের মধ্যেকার কোনো দ্রোনের জন্য এমন নির্দেশ এই প্রথম।
কেন্দ্রীয় সরাষ্ট্র দফতরের হিসেব অনুযায়ী ভারতে এই মুহূর্তে মালিকানা তথ্যবিহীন মোট ৬ লক্ষ দ্রোন রয়েছে। সেগুলি দেশের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক বলেই মনে করছে কেন্দ্রীয় সরকার। দ্রোনঘাতী অস্ত্র কেনা ও তৈরির ব্যাপারেও মনোযোগ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার।