Home খবর মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আরও সংকটে ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত সিরিয়া
0

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আরও সংকটে ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত সিরিয়া

মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় আরও সংকটে ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত সিরিয়া
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত ৬ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ায় সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর প্রথম দিকে আমেরিকা ও তার ইউরোপের বন্ধুরা তুরস্ককে বহু সাহায্য পাঠায় কিন্তু সিরিয়াকে পুরোপুরি অবহেলা করে। আঅরও যেটা খারাপ তা হল, আমেরিকা সিরিয়ার ওপর চাপানো নিষেধাজ্ঞা ও আর্থিক অবরোধ তুলতে অস্বীকার করে। ফলে বিভিন্ন মানবতাবাদী সংগঠন ঘটনার অব্যবহিত পরে সিরিয়ায় সাহায্য ও উদ্ধারকারী দল পাঠাতে পারেনি।

ভূমিকম্পটি ছিল শক্তিশালী এবং মাটির উপরিভাগের, ফলে যে অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়, সেখানে ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক। তবে শুধু প্রাকৃতিক কারণই নয়, ওই সব ভূমিকম্প-প্রবণ অঞ্চলগুলিতে বাড়িগুলিও ওই এলাকার উপযোগী কায়দায় তৈরি হয়নি। তুরস্কের ক্ষেত্রে, এর পেছনে প্রেসিডেন্ট এরদোগান ও প্রমোটিং-মাফিয়াদের সম্পর্কের কথাই উঠে আসছে।

যাই হোক, ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে আমেরিকা ১০ ফেব্রুয়ারি, সিরিয়ার উপর থেকে কিছু  নিষেধাজ্ঞা ১৮০ দিনের জন্য তুলতে বাধ্য হয়।

সিরিয়ার সরকার অবশ্য এই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার ঘটনাকে ভম্ডামি ও লোক-দেখানো বলে মন্তব্য করেছে। এটা আমেরিকার মুখরক্ষার চেষ্টা বলেও জানানো হয়েছে। তারা দাবি করেছে, আমেরিকার উচিত, সিরিয়ার জনগণের ওপর থেকে সকল নিষ্ঠুর ও একপাক্ষিক অবরোধ তুলে নেওয়া। এই অবরোধগুলি সিরিয়ার মানুষের জীবনে ব্যাপক দুর্দশা বয়ে এনেছে।

এমনকি রাষ্ট্রপুঞ্জের বিশেষজ্ঞরাও মনে করছেন, কিছু নিষেধা৫আ তুলে নেওয়াটা যথেষ্ট নয়। ১০ ফেব্রুয়ারি এক বিবৃতিতে তারা সকল অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান, যাতে সিরিয়াতে সবরকম মানবিক সাহায্য, বিভিন্ন প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও যন্ত্রপাতি পাঠানো যায়।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান মার্কিন নিষেধাজ্ঞা খুব বেশি করে মেনে চলায়, রাষ্ট্রপুঞ্জের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্যরা সিরিয়ার জন্য যথেষ্ট খাবার ও অন্যান্য সামগ্রী জোগাড় করতে পারছে না। নিষেধাজ্ঞা না মানলে আমেরিকা তাদের ওপর শাস্তি চাপাবে বলে মনে করছে বিভিন্ন সংস্থা।

গত নভেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের প্রতিনিধি অ্যালেনা ডৌহান জানিয়েছিলেন, সিরিয়ার সঙ্গে আমেরিকা ১২ বছর ধরে ছায়াযুদ্ধ চালানোয় সে দেশে যে ধ্বংস ও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা তা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। ভূমিকম্পের আগেও সিরিয়ার ৯০ শতাংশ জনগণ দারিদ্র্যে ডুবে আছে। খাদ্য, পানীয়, বিদ্যুৎ, বাড়ি, জ্বালানির কাঠ, পরিবহণ ও স্বাস্থ্য পরিষেবার যোগান সীমিত। ডৌহান বলেন, সিরিয়ার জনগণের বুনিয়াদি মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনও যৌক্তিকতা নেই।
৯ ফেব্রুয়ারি কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি একপাক্ষিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে। তারা বলে, তুরস্ক সরকার আক্রমণ না করলে, তারাও কোনো আক্রমণ করবে না। দেশের জনগণের যন্ত্রণার উপশম না হওয়া অবধি এই যুদ্ধবিরতি তারা চালিয়ে যাবে বলে ঘোষণা করে। তুরস্ক সরকার এই ঘোষণার কোনো উত্তর দেয়নি।

অন্যদিকে রাশিয়া, চিন ও কিউবা ভূমিকম্পের পরপরই তুরস্ক ও সিরিয়ায় সাহায্য, ওষুধ ও উদ্ধারকারী দল পাঠায়। মেক্সিকো এবং লাতিন আমেরিকার ব্রাজিল, ভেনেজুয়েলা, এল সালভাদোর এবং কলোম্বিয়াও তাই করে। এমনকি সংকটের মধ্যে থাকা লেবানন এবং প্যালেস্তাইনও ধ্বংসস্তূপ থেকে মানুষকে উদ্ধার করতে সিরিয়ায় নিজেদের কর্মী পাঠায়।

আমেরিকার বন্ধুদের মধ্যে ইতালি সরাসরি সিরিয়ায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তাদের সাহায্য-ভর্তি বিমান মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জন্য লেবাননে নামতে বাধ্য হয়।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *