পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: রোদ্দুরে পুড়ে যাওয়া শরীর, শীতের কামড়, শিলাবৃষ্টিতে মৃত্যু, সরকারি চক্রান্ত, হত্যার চেষ্টা, খুন, আক্রমণ, অপপ্রচার, ৬০০ সঙ্গীর মৃত্যু- এই সমস্ত কিছুকে প্রতিরোধ করে কৃষকরা সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। পেরিয়ে গেছে ৩৪০ দিন।
কেন্দ্রের তিনটি জনবিরোধী, কর্পোরেটের স্বার্থবাহী কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আজ থেকে ১১ মাস আগে, গত বছরের ২৬ নভেম্বর পঞ্জাবের দশ হাজার কৃষক দিল্লির সিংঘু ও টিকরি সীমান্তে পুলিসের ব্যারিকেড ভাঙে, সেই সময় থেকে তারা পথেই দিন কাটাচ্ছেন। তখন থেকে প্রতিদিন আন্দোলন শক্তি বাড়িয়েছে, বিস্তৃত হয়েছে। হাজার হাজার মানুষ দিল্লির সীমানা পেরিয়ে ঢুকে পড়েছে। শুরুতে কৃষকরা কেবল সিংঘু ও টিকরি সীমান্তে ছিলেন, পরে তারা গাজিয়াবাদ সীমান্তের জড়ো হন।
আন্দোলন পঞ্জাব থেকে শুরু হলেও পরে তা হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড, বিহার ও মহারাষ্ট্রে ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ ভারত থেকেও হাজার হাজার কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে দিল্লি সীমান্তে জড়ো হন।
আন্দোলনের শক্তিবৃদ্ধির সাথে সাথে কেন্দ্রীয় সরকারের চক্রান্তও বাড়তে থাকে। পাশাপাশি আন্দোলনকে দমানোর জন্য শুরু হয় হিংসার ব্যবহার। পুলিসের পাশাপাশি বিজেপি কর্মীরাও এ কাজে হাত লাগায়। সঙ্গে চলতে থাকে ভুয়ো খবর ছড়ানো। তা সত্ত্বেও সরকার কৃষকদের ঐক্য ভাঙতে পারেনি।
আন্দোলন ভাঙার জন্য নানা চক্রান্ত চললেও কৃষকরা সতর্ক রয়েছেন। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী বারবার বলেছেন, তার সঙ্গে কৃষক নেতাদের যোগাযোগ রয়েছে, আন্দোলন অচিরেই শেষ হয়ে যাবে। তাতে লাব কিছুই হয়নি।
কৃষকরা আশঙ্কা করছেন, আন্দোলন ভাঙার জন্য আগামী দিনে আরও চেষ্টা চালানো হবে। তাদের দাবি, হরিয়ানার বিজেপি সরকার আন্দোলনের ওপর আক্রমণ চালানোর জন্য ১০০০ জনের বাহিনী তৈরি করার পরিকল্পনা করেছে।
কৃষক নেতাদের দাবি, গত ১১ মাসে সরকার মান্ডি ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে প্রচুর চেষ্টা করেছে। কৃষকরা যাতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ছাড়াই ফসল বিক্রি করেন, তার জন্য সরকারের তরফ থেকে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কিন্তু ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাহল রাখার দাবি, কৃষি আইন বাতিলের জন্য আন্দোলনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত বলেই বক্তব্য কৃষক নেতাদের।
অন্যদিকে কৃষক নেতাদের বক্তব্য, উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে চার কৃষকের হত্যার ঘটনা, আন্দোলনরত কৃষকদের মধ্যে বিজেপি বিরোধী মনোভাব আরও তীব্র করেছে।