পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার চেয়ে তিনি তালোজা কারাগারে মারা যেতে চান। বম্বে হাইকোর্টে বললেন আদিবাসী অধিকার রক্ষা কর্মী ফাদার স্টান সামি। ৮০ বছর বয়সি সামি এদিন বম্বে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। যদিও তার আবেদন খারিজ হয়ে গিয়েছে।
বিচারপতি এসজে কাঠাওয়ালা এবং এসপি তাভাডের ডিভিশন বেঞ্চ স্টান স্বামীর স্বাস্থ্যের বিষয়ে খোঁজ নেওয়ার সময় তাঁকে জিজ্ঞাসা করেন যে, তার স্বাস্থ্যের উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত তিনি মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে ভর্তি হতে চান কিনা। এর উত্তরে সামি বলেন: “আমি সেখানে দু’বার গেছি। আমি জেজে হাসপাতালে ভর্তি হতে চাইছি না। এতে আমার স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে না, দীর্ঘদিন একই রকম থাকবে। বরং পরিস্থিতি যদি এমনই চলতে থাকে তবে খুব শীঘ্রই আমি এখানেই মারা যাব”।
বেঞ্চ তাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে তিনি অন্য কোনও সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে চান কিনা। তিনি সাফ জানিয়ে দেন যে তিনি অন্য কোনো হাসপাতালে ভর্তি হতে চান না। তিনি আরও বলেন যে “আমি বিচার বিভাগকে অনুরোধ করব কেবলমাত্র অন্তর্বর্তীকালীন জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য। এটাই আমার একমাত্র অনুরোধ”।
বিচারপতিদের বেঞ্চ বলে যে সামির অনুরোধের ভিত্তিতে তাকে তাঁর বাড়ি রাঁচিতে কিছুতেই পাঠানো সম্ভব না। তাতে সামি কোর্টকে বলেন যে তার শারীরিক অবস্থা যাই ঘটুক না কেন, তিনি শেষ পর্যন্ত তার কাছের মানুষদের সাথে থাকতে চান।
স্টান স্বামি আদালতকে জানিয়েছেন যে তিনি তালোজা জেলে আট মাস থাকার পরে তাঁর স্বাস্থ্যের অবস্থা ক্রমশ অবনতি হয়েছে। তিনি বলেন যে তিনি এখন এমন পরিস্থিতিতে আছেন যেখানে তিনি নিজে খেতে, স্নান করতে, লিখতে বা নিজে ঠিক মতো হাঁটতে যেতেও পারছেন না।
সামি বলেন, আজ মাস আগে তিনি নিজে খেতে পারতেন, স্নান করতে পারতেন, হাঁটতেন, লিখতেও পারতেন। এখন তিনি কিছুই পারেন না। কেন তাঁর শারীরিক অবস্থার এই অবনতি হল, তা তিনি আদালতকে বিবেচনা করে দেখতে বলেন। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার তাকে জেজে হাসপাতালে নিয়ে আযওয়া হয়েছিল। সেখানে তিনি পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। তবে হাসপাতাল থেকে যে ছোটো ট্যাবলেট তাকে খেতে দেওয়া হয়, তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতির তুলনায় তা কিছুই নয়।
গত ১৯ তারিখ আদালত জেজে হাসপাতালের একটি কমিটি তৈরি করে। তারা শুক্রবার আদালতে রিপোর্ট দেয়।
এদিন সামির উকিল মিহির দেশাই সামিকে হাসপাতালে ভর্তিতে রাজি করানোর জন্য আদালতের কাচে আরও কিছুটা সময় চান। তিনি বলেন, এর আগে সামি ৬ মাস জেল হাসপাতালে থেকেছেন। কিন্তু সেখানে কোনো চিকিৎসক নেই, চিকিৎসার কোনো পরিকাঠামোও নেই।
সামি হাসপাতালে যেতে চাইছেন না, তাই কোর্ট বলে এই বিষয় পরবর্তী শুনানি হবে ৭ জুন, ততদিন পর্যন্ত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে জেজে হাসপাতাল কমিটিকে।
সিপিআই (মাওবাদী) পার্টি ও অন্য নিষিদ্ধ সংগঠনের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগে ফাদার স্টান স্বামীকে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর ইউএপিএ সহ অন্যান্য ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাকে এলগার পরিষদ মামলায় যুক্ত করা হয়েছে। সামির সাথে একই অভিযোগে অভিযুক্ত আরও ১৫জন সমাজ কর্মী, লেখক ও আইনজীবী।