পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: এলগার পরিষদ মামলায় গত জুলাইয়ে গ্রেপ্তার হওয়া দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হ্যানি বাবু কোভিডে আক্রান্ত। তাকে প্রথমে মুম্বইয়ের জেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং পরে জিটি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। ৫৫ বছর বয়সী হ্যানি বাবুর গত ৩ মে চোখে সংক্রমণ দেখা দেয়, তখন থেকে তার পরিবার এবং আইনজীবীরা তার যথাযথ চিকিৎসার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন।
জেজে হাসপাতালের ডিন ডাঃ রঞ্জিত মানকেশ্বর জানিয়েছেন, ১৩ মে ভোরে চোখের সংক্রমণের কারণে হ্যানি বাবু হাসপাতালে ভর্তি হন। কোভিডের পরীক্ষাও করা হয়েছিল ভর্তির সময়। মানকেশ্বর একটি বার্তায় দাবি করেছেন যে হ্যানি বাবুর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ ও তার বাম চোখে ডবল ভিশনের কারণে সমস্যা হচ্ছে।
হ্যানি বাবু-র স্ত্রী এবং দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেনি রোয়েনা বলেছেন, কারাগার থেকে অধ্যাপকের স্বাস্থ্যের বিষয়ে তথ্য পেতে খুবই কাঠখড় পোয়াতে হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতীয় তদন্ত সংস্থা (এনআইএ) এবং কারাগারের কর্মকর্তারা উভয়ই পরিবারকে অধ্যাপকের স্বাস্থ্যের খবর দিতে অস্বীকার করেছেন।
রোয়েনার জারি করা এক প্রেস বিবৃতিতে বাবুর মা ফাতিমা এবং তার দুই ভাই – হরিশ এম.টি. এবং এম.টি. আনসারি- দাবি করেন যে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা অবধি তাদের হ্যানি বাবুর স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। ১৩ মে সন্ধ্যা ৭:৩০ নাগাদ ফাতেমা জেজে হাসপাতালে পৌঁছলে নার্সদের থেকে ভাইরাস সংক্রমণ সম্পর্কে জানতে পারেন। বাবুর স্বাস্থ্যের অবস্থা নিয়ে উদ্বিগ্ন রোয়েনা গতকাল রাতে দিল্লি থেকে মুম্বই পৌঁছেছেন।
হ্যানি বাবু, ২৮ জুলাই গ্রেফতার হয়ে, তালোজা কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন, যা অত্যন্ত ভিড়ে ঠাসা জেল। ২,১২৪ জন বন্দি থাকার ব্যবস্থা থাকলেও এই কারাগারটিতে ৩,৫০০ এরও বেশি বন্দি রয়েছে। কারাগারে কোভিড সংক্রমণের মারাত্মক প্রকোপ দেখা গিয়েছে এবং চলতি বছরের মার্চ থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ফলে কমপক্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। অতিরিক্ত জঞ্জাল থাকার পাশাপাশি কারাগারে সুচিকিৎসার সুবিধা নেই। বম্বে হাইকোর্ট সম্প্রতি রাজ্যের কারাগারে পর্যাপ্ত যোগ্য ডাক্তার নিয়োগ করার জন্য বারবার রাজ্যকে বলেছে।
হ্যানি বাবুর পরিবার তাকে একটি মাল্টিস্পেশালিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করার জন্য রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ভারতে মারাত্মক আকার ধারণ করেছে, স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এবং কিছু অসুস্থতা আছে, এমন ব্যক্তিদের মৃত্যু হচ্ছে এর ফলে। পরিবারের দাবি এই অবস্থায় অসুস্থ হ্যানিকে সাধারণ কোভিড হাসপাতালে রাখলে তার জীবনের ঝুঁকি হতে পারে।
এনআইএ-র চলমান এলগার পরিষদ তদন্তে গ্রেফতার হওয়া ১৬জন সমাজ কর্মী, শিক্ষাবিদ ও আইনজীবীর অন্যতম হ্যানি বাবু। তিনি বর্ণবাদবিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। ১৬ জনের মধ্যে ৮০ বছর বয়সি কবি ওয়ারওয়ারা রাও তার কারাগারে স্বাস্থ্য গুরুতর খারাপ হওয়ার ফলে তিনি ছয় মাসের জন্য জামিনে মুক্তি পেয়েছেন।