নিজস্ব সংবাদদাতা: বিজেপিকে ভোট না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কলকাতায় একটি ফ্যাসিবিরোধী মঞ্চের উদ্যোগ চললেও তাদের সব বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন সংসদীয় বাম রাজনীতির বাইরে থাকা সকল বামপন্থী গণ আন্দোলনকর্মীরা। এনআরসি বিরোধী আন্দোলনের দিনগুলোয় গড়ে উঠেছিল এনআরসি-এনপিআর প্রতিরোধ মঞ্চ। বর্তমান পরিস্থিতিতে শুধুমাত্র এনআরসি-বিরোধী লড়াইয়ের মধ্যে নিজেদের সীমিত না রেখে বৃহত্তর ফ্যাসিবিরোধী সংগ্রামের স্বার্থে অন্যান্য সংগঠনের সঙ্গে জোট বাঁধতে চায় তারাও। ফ্যআসিবিরোধী মঞ্চ গঠনের জন্য তারা একটি পৃথক প্রস্তাবও রেখেছে।তবে কুশল দেবনাথদের বক্তব্যের সঙ্গে তাদের কিছু ফারাক আছে।
আরও পড়ুন: শুধু শাসক দল নয়, নির্বাচনে বিজেপিকে ঠেকাতে জোট বাঁধছেন গণ আন্দোলনকর্মী ও বুদ্ধিজীবীরাও
এনআরসি এনপিআর প্রতিরোধ মঞ্চের আহ্বায়ক ডঃ আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম আমরা। ডঃ হোসেন বলেন,“যত দিন যাচ্ছে তত আগ্রাসী হয়ে উঠছে ফ্যাসিবাদী শক্তি এবং ভোট দিয়ে এর নিষ্পত্তি হবে না। ফলে সমস্ত বামপন্থী, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল শক্তিগুলিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে বড়ো আকারে যৌথমঞ্চ গড়ে তোলা এই মুহূর্তের আশু কর্তব্য”। তার মতে বিজেপি এই মুহূর্তে বড়ো শত্রু হলেও অর্থনৈতিক উদারীকরণ, সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির অবাধ অনুপ্রবেশের ক্ষেত্রে বাকি শাসক দলগুলির ভূমিকা ভুলে গেলে চলবে না। তাদের সাথে বিজেপির ফারাক আগ্রাসী হিন্দুত্ব এবং সাম্প্রদায়িকতার কৌশলের। বাকি বিষয়গুলিতে প্রত্যেকটি সংসদীয় দল একই। সমগ্র ফ্যাসিবাদী অ্যাজেন্ডা, জনবিরোধী নীতি, দুর্নীতি ইত্যাদির বিরোধিতা করতে গেলে শুধু বিজেপি বিরোধী প্রচার করলে হবে না, তাকে প্রধান শত্রু হিসেবে প্রচার করলেও বাকি দলগুলির অ্যাজন্ডা যে বিজেপির থেকে কেবল কৌশলগত ভাবে আলাদা, তা ওতুলে ধরতে হবে। আলাদা করে কোনো একটি দলকে ভয়ঙ্কর দেখিয়ে বাকি দলগুলির ব্যাপারে চুপ করে থাকা, তার মতে কোনো মানে হয় না। ডঃ হোসেনের মতে মানুষকে শুধু নির্দিষ্ট কোন দলকে ভোট না দেওয়ার আহ্বানের সমস্যা হচ্ছে, এই প্রচার তাদেরকে লড়াই বিমুখ করে বোতাম টেপায় সমাধানের রাস্তায় নিয়ে যাচ্ছে। সামনের নির্বাচনে বিজেপি হেরে গেলে ফ্যাসিবাদ থেমে যাবে না বরং আরও আগ্রাসী হয়ে উঠবে, তাই শুধু সামনের ভোটে বিজেপিকে আটকানোর কর্মসূচিতে সীমাবদ্ধ না থেকে দরকার দীর্ঘ মেয়াদি লড়াইয়ের।
তবে কিছু প্রশ্নে বিরোধ থাকলেও কুশলবাবুদের সঙ্গে যৌথ ভাবে ফ্যাসিবিরোধী আন্দোলন করার ব্যাপারে এখনই নেতিবাচক মনোভাব নিয়ে চলার পক্ষপাতি নয় এনআরসি-এনপিআর প্রতিরোধ মঞ্চ।