পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: তিউনিসিয়া জুড়ে খনি শহরগুলিতে চাকরি ও এলাকার উন্নয়নের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ফসফেট ভাণ্ডার তাতাওউইন প্রদেশ। সেখানকার কামোউর পম্পেজ খনিতে গত তিন মাস ধরে অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন বিদ্রোহীরা। গত ২০১৭ সালে তিউনিসিয়ার সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এলাকার উন্নয়নে প্রতি মছর ২৫ মিলিয়ন ইউরো খরচ করা হবে। সঙ্গে প্রতি বছর ১০০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। তার জেরেই চলছিল বিক্ষোভ। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মেচিচি বিদ্রোহীদের দাবি মেনে নেন। তিনি বলেন ৩ মাসের অবরোধে দেশের ৩০০ মিলিয়ন ইউরোর বেশি ক্ষতি হয়েছে।
ইতিমধ্যে কামোউরের বিদ্রোহ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা দেশে। বিভিন্ন খনি প্রধান শহরে কামোউরের মতো প্রতিরোধ কমিটি তৈরি হয়েছে। কেফ, মেধিলা, তাউজের, কেবিল, গেবস সহ বিভিন্ন শহরে ফসফেট খনি ও রাসায়নিক করাখানার কাজ বন্ধ করে দিয়েছে কর্মহীন যুবকরা। বহু জায়গায় পুলিশের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের সংঘর্ষ বেধেছে। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, যে সব জায়গায় ঝামেলা চলছে, সর্বত্র তিনি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন।
দেশের কোনা পরিস্থিতিও ভালো নয়। অতিমারি ঘোষণা হওয়ার পর প্রথম পাঁচ মাসে মৃত্রে সংখ্যা ছিল ৫০। পরের সাড়ে তিন মাসে তা বেড়ে হয়েছে ২১৫০। যেখানে আক্রান্ত মাত্র ৭৬ হাজার। তিউনিসিয়ার হু-র প্রতিনিধি সব দায় চাপিয়েছেন সাধারণ মানুষের সচেতনতার ওপর। কিন্তু সেখানকার বিপ্লবী কমিউনিস্ট এল কাদেহিন পার্টি জানিয়েছে, সমস্ত বেসরকারি হাসপাতালকে জাতীয়করণ করাটাই এই মুহূর্তের বিপ্লবী দাবি। শুধুমাত্র সাবান, মুখোশ আর শারীরিক দূরত্ব দিয়ে অতিমারির মোকাবিলা অসম্ভব।
এই জটিল পরিস্থিতির মধ্যে তিউনিসিয়া ও ইতালির বড়ো পুঁজিপতি সংস্থাগুলি দেশকে দূষিত করে মুনাফার ধান্দা করে চলেছে। এক ইতালিয় সংস্থা ৪৮ ইউরো প্রতি টন দরে ৩২০ টন আবর্জনা তিউনিসিয়ার এক সংস্থাকে বিক্রি করেছে। তার মধ্যে ১২০ টন দেশে ঢুকে গেলেও বাকি ২০০ টন বন্দরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এ নিয়ে দেশ জুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ এর আগে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন সিদ্ধান্ত নিয়েচিল তাদের অন্তর্গত কোনো দেশ আফ্রিকায় আবর্জনা ফেলতে পারবে না। বিতর্কের জেরে ২০০ টন জঞ্জাল ইতালিতে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তিউনিসিয়ার জাতীয় আবর্জনা দেখভাল এজেন্সির প্রধানকে বহিস্কার করা হয়েছে।