পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: বিশ্বব্যাঙ্ক ও আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার নির্দেশিত আর্থিক সংস্কার নীতির যাঁতাকলে পাকিস্তানের শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। সরকারের বিভিন্ন শ্রমিক বিরোধী নীতির প্রতিবাদে রাজধানী ইসলামাবাদে বুধবার সারা দেশ থেকে জড়ো হয়েছিলেন সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্রের শ্রমিক-কর্মচারীরা। ছিলেন পেনশনভোগী, চিকিৎসক, নার্স, নারী স্বাস্থ্যকর্মী, প্যারা মেডিক্যাল কর্মীরাও। ‘অল পাকিস্তান এমপ্লয়িজ, পেনশনার্স অ্যান্ড লেবার মুভমেন্ট’-এর ব্যানারে প্রতিবাদীরা ইসলামাবাদ প্রেস ক্লাব থেকে ডি চক পর্যন্ত মিছিল করেন। নয়া উদারনৈতিক আর্থিক নীতিকে চিরতরে দেশ থেকে বিদায় করার দাবিতে মুখরিত ছিল মিছিল ও সমাবেশ। প্রতিবাদীদের বক্তব্য, শ্রমজীবী ও গরিবদের জন্য যে সামান্য সুযোগসুবিধা এতদিন ছিল, সেটুকুও কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। খাদ্য ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। সরকারি সংস্থার বেসরকারিকরণ হচ্ছে। স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ কমানো হচ্ছে। দেশজুড়ে চলছে ব্যাপক ছাঁটাই।
ইস্পাত কারখানা, রেল, বিমানকর্মী, নারী স্বাস্থ্যকর্মী, শিক্ষক, শ্রমিক, বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন ও পেনশনভোগীরা এদিন জড়ো হয়েছিলেন রাজধানীতে।
https://www.facebook.com/watch/live/?v=871518303254416&ref=watch_permalink
এই গোটা আন্দোলনের সমর্থনে বিশাল জমায়েত করে নারী গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের ইসলামাবাদ-রাওয়ালপিন্ডি ইউনিট। সংগঠনের তথ্য বিভাগের সচিব তুবা সইদ বলেন, এটি একটি সমাজতান্ত্রিক-নারীবাদী সংগঠন। তারা পাকিস্তানের সব নারী শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, সুস্থ কাজের পরিবেশ ও সরকারি সুযোগসুবিধার দাবিতে আন্দোলনকে সমর্থন করেন। তুবা বলেন, লাগামছাড়া পুঁজিবাদ পাকিস্তানি নারীদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। নারীদের মধ্যে দারিদ্র্যের প্রকোপ বেশি। যতদিন যাচ্ছে, আরও বেশি বেশি মানুষ খাদ্য, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এবং পরিশ্রুত পানীয় জলের অধিকার থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট ইসমত শাহজাহান বলেন, শ্রমিক শ্রেণির এই জোট একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলির নয়া উদারনৈতিক আর্থিক নীতির ওপর পাকিস্তান সরকারের নির্ভরশীলতার জন্য দেশের মানুষের জীবন ক্রমেই দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। জনগণের খাদ্য ও বাসস্থানের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে নিতে হবে।
এদিন শ্রমিকদের মূল দাবির মধ্যে ছিল, কাজ ও মজুরির নিরাপত্তা, মূল্যবৃদ্ধ ও মজুরি বৃদ্ধি, ঠিকাকর্মীদের স্থায়ীকরণ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য পরিষেবার বেসরকারিকরণ অবিলম্বে বন্ধ করা।