পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ২০১৮ সালের হিসেব অনুযায়ী কানহা জাতীয় উদ্যানের ব্যাঘ্র অভয়ারণ্যে ১৩০টি বাঘ আছে। করবেট জাতীয় উদ্যান, কাজিরাঙ্গা, রনথম্বোরের পর এখানেই সবচেয়ে বেশি বাঘ রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের বালাঘাট ও মান্ডলা জেলা জুড়ে বিস্তৃত কানহা জাতীয় উদ্যান। এই ন্যাশনাল পার্ক এখন হয়ে উঠেছে মাওবাদীদের শক্ত ঘাঁটি। বলছেন পুলিশ কর্তারা। তাদের দাবি, পার্কের বনকর্মীরাই মাওবাদীদের খাবারদাবার ও অন্যান্য জরুরি জিনিসপত্র জোগাচ্ছেন।
বছর দুয়েক আগে পর্যন্তও পরিস্থিতি এমন ছিল না। সে সময়ই মাওবাদীরা কানহার ঘন জঙ্গল ও দুর্গম এলাকাকে তাদের পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে আসে। ২০১৭ সালে তারা সেখানে একটি প্লাটুন গঠন করে এলাকায় প্রভাব বাড়াতে শুরু করে। স্থানীয়দের বাহিনীতে নিয়োগ করতেও শুরু করে।
বালাঘাটের পুলিশ সুপার অভিষেক তিওয়ারি বলেন, তার আগে কানহা ব্যাঘ্র অভয়ারণ্যের ছোটো একটি নিরাপদ অঞ্চলে মাওবাদীদের প্রভাব ছিল। ছত্তীসগঢ় ও মহারাষ্ট্রের মধ্যে যাতায়াতের জন্য তারা ওই এলাকাটিকে কাজে লাগাতো।
“এখন মাওবাদীদের বিস্তার দলম(প্লাটুন)তাদের এলাকা পালটে ব্যাঘ্র প্রকল্পের মূল এলাকায়(বালাঘাট ও মান্ডলা জেলা)চলে এসেছে। এই অঞ্চলকে কাজে লাগিয়ে তারা বিন্ধ্যাঞ্চল সহ মধ্যপ্রদেশের অন্যান্য জায়গায় রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়াতে চাইছে”, বলেন তিওয়ারি। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বাদল সিং মরকম নামে এক মাওবাদীকে ওই এলাকা থেকে গ্রেফতারের পর এই তথ্য জেনেছে পুলিশ, বক্তব্য সুপারের।
মধ্যপ্রদেশের নকশাল-দমন শাখার এক কর্তার বক্তব্য, ব্যাঘ্র্ প্রকল্পের মূল এলাকায় মাওবাদীদের উপস্থিতি তাদের কাছে এক নতুন ও অন্য ধরনের চ্যালেঞ্জ। কারণ সেখানে মানুষজনের যাতায়াত খুবই নিয়ন্ত্রিত আর মোবাইল সংযোগের ব্যবস্থাও খুব খারাপ।
বালাঘাট পুলিশ কানহা ব্যাঘ্র্ প্রকল্পের বন দফতরের কর্তাদের বার্তা পাঠিয়েছে, যাতে তারা জঙ্গলে মাওবাদীদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পুলিশকে দেয়।
বালাঘাটের আইজি কেপি ভেঙ্কটেশ্বর বলেন, “বন দফতরের কর্তাদের উচিত পুলিশকে সাহায্য করা কারণ এটা তাদের কর্তব্য”। তিনি বলেন, বনকর্মীদের বলা হয়েছে, তারা মাওবাদীদের সম্পর্কে তথ্য দিলে তাদের নিরাপত্তা দেওয়া হবে নইলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ব্যাপারে কানহার বন দফতেরর কোনো বক্তব্য জানা যায়নি। তবে জানা গেছে প্রতি ৮-১০ কিলোমিটার অঞ্চলে বন দফতরের শিবির আছে। সেখানে মাওবাদীরা মাঝেমধ্যে এসে প্রয়োজনীয় সামগ্রী ও খাবার নিয়ে যায়।
নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক পুলিশ-কর্তার বক্তব্য, লকডাউনের সময় বনাঞ্চলে পুলিশের নজরদারি কমে যাওয়াতে কানহা এবং তার আশেপাশের অঞ্চলে মাওবাদীদের কাজকর্ম অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে। তিনি বলেন মাওবাদীদের মহারাষ্ট্র-মধ্যপ্রদেশ-ছত্তীসগড়(এমএমসি) বিশেষ অঞ্চলের সম্পাদক দীপক তেলতুম্বে ওরফে জিভাকে মান্ডলা ও বালাঘাট অঞ্চলে দেখা গিয়েছে।
বালাঘাট অঞ্চলে ৮০০ জন মাওবাদী দমন বাহিনীর পুলিশকর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে।