পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ২০১৮ সালের ভিমা-কোরেগাঁও মামলা নিয়ে বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের কয়েকজন মন্ত্রীর সঙ্গে বিশেষ বৈঠক করলেন এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ার। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শক্তি মন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা নিতিন রাউত। বৈঠক শেষে তিনি বলেন, “ষড়যন্ত্রকারী ‘প্রকৃত অপরাধী’ কারা, তা নিয়ে তদন্ত করতে বিশেষ তদন্তকারী কমিটি গঠন করার ব্যাপারে ‘গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা’ হয়েছে” বৈঠকে।
রাউত ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখ, জলসম্পদ মন্ত্রী জয়ন্ত পাটিল(সকলেই এনসিপির)এবং স্কুল শিক্ষামন্ত্রী বর্ষা গায়কোয়াড(কংগ্রেস)। রাউত পরে টুইট করে বৈঠকের কথা জানান। তাতে তিনি বলেন, “বিজেপি সরকার যাদের যেসব প্রকৃত দোষীকে আড়াল করে রাখছে, তাদের আর ছাড়া হবে না”।
চলতি বছরের শুরুতে এই মামলার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল(সিট) গঠন করার জন্য মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরেকে চিঠি লিখেছিলেন। এদিনের বৈঠকের পর তিনি বলেন, “কিছু ব্যক্তিকে নকশালপন্থী তকমা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এটা ঠিক বলে মনে করছি না। তাই প্রকৃত পরিস্থিতিটা বোঝার জন্য আমরা বিষয়টা নতুন করে মূল্যায়ন করলাম এবং এ ব্যাপারে কী করা যায়, তা বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করব”।
জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা ওই মামলার তদন্ত করছে। শরদ পাওয়ার বলেন, ওটা কেন্দ্রের বিষয়, তা নিয়ে ওদের কিছু বলার নেই। কিন্তু রাজ্য সরকারেরও কিছু ক্ষমতা রয়েছে। সেই ক্ষমতা প্রয়োগ করা ঠিক হবে কিনা, তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।
১৮১৮ সালের ১ জানুয়ারির কোরেগাঁও ভিমা যুদ্ধের দ্বিশতবর্ষ পূর্তি উদ্যাপনের দিন(২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি) পুনেতে হিংসাত্মক পরিস্থিতি তৈরি হয়। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বাহিনী(যা তৈরি হয়েছিল দলিত মাহার জাতির সৈন্যদের নিয়ে)পুনের ব্রাহ্মণ পেশোয়া শাসকদের পরাজিত করে ১৮১৮ সালের যুদ্ধে। দলিতরা এই ঘটনাকে পুরনো ব্রাহ্মণ শাসকদের পরাজয় হিসেবে উদ্যাপন করে থাকে। পুনে পুলিশের দাবি ঘটনার আগের দিনের এলগার পরিষদের সভায় কিছু প্ররোচনামূলক বক্তব্য উঠে আসে, তার ফলেই পরের দিন হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। ওই সভার পেছনে ছিল মাওবাদীরা। মহারাষ্ট্রে বিজেপি বিরোধী সরকার আসার পর চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারি ওই মামলার দায়িত্ব এনআইএ-র ওপর ন্যস্ত করে কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের বেশ কিছু কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, বিদ্বজ্জনকে ওই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। এখনও গ্রেফতারি চলছে। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠন কবীর কলা মঞ্চের তিনজন কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বারবার জেরা ও বাড়িতে তল্লাশি করে ভয় দেখানো হচ্ছে বিভিন্ন বুদ্ধিজীবী ও শিক্ষাবিদকে।