পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: বনভূমি দখল করে অবৈধ ভাবে বাড়ি তৈরি করেছে স্থানীয় এক ব্যবসায়ী। সঙ্গে একটি দোকান। সংগঠিত ভাবে নির্মাণ স্থলে গিয়ে প্রতিবাদ জানান উত্তর প্রদেশের শোনভদ্র জেলার মুইরপুর থানা এলাকার লিলাসি গ্রামের আদিবাসীরা। তারপর থেকেই তাদের খুনের হুমকি দিচ্ছে ওই ব্যবসায়ীর পোষা গুন্ডারা।
লিলাসি বাজার এলাকার ওই নির্মাণ স্থলে গিয়ে ব্যবসায়ী রামভ্রুক্ষ সাহুকে ৪০-৫০ জন আদিবাসী জানান, ওই জমির ওপর তাদের সম্প্রদায়ের মালিকানা দাবি করে সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে। এটা তাদের অধিকার। ওই আবেদন সরকারের বিবেচনাধীন। তাছাড়া বনভূমিতে কোনো নির্মাণ বেআইনি। সে সময় সাহুর পোষা গুন্ডারা আদিবাসীদের গালাগালি করে তাড়িয়ে দেয়। তাদের জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়ারও হুমকি দেয়।
তারপরই স্থানীয় আদিবাসীরা জেলা শাসক, শোনভদ্রর পুলিস সুপার, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ার পার্সন, তফসিলি উপজাতির জাতীয় কমিশনে চিঠি লিখে অভিযোগ করেন। তাদের দাবি স্থানীয় মুইরপুর থানা ওই অবৈধ নির্মাণের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। ঘটনার পর লিলাসি গ্রাম এবং মুইরপুর থানা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কারণ শুধু পুলিশ নয়, স্থানীয় বনকর্তাদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ রয়েছে গ্রামবাসীদের। এর আগে আদিবাসীরা বনভূমির ওপর অধিকার আদায়ের লড়াই করলে, সেখানে ফসল উৎপাদন করলে তাদের বিরুদ্ধে ভুয়ো মামলা দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ জানিয়ে চিঠি দেওয়ার পাশাপাশি ওই জমির অধিকার নিয়ে জনশুনানির আবেদন জানানো হয়েছে উত্তর প্রদেশের স্বরাষ্ট্র দফতরে। কিন্তু তা নিয়ে সরকারি স্তরে এখনও সক্রিয়তা দেখা যায়নি।
শুধু এই ঘটনা নয়, দেশজুড়ে বিভিন্ন ঘটনায় জীবনজীবিকা রক্ষা করতে সমস্যায় পড়ছেন আদিবাসীরা। বনভূমিতে তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে গেলেই তাদের ওপর অত্যাচার নামিয়ে আনছে পুলিশ ও বন দফতর। কিছুদিন আগে উত্তর প্রদেশের দুধওয়া ব্যাঘ্র্ প্রকল্পে থারু উপজাতির মহিলাদের দিনের বেলায় মারধর ও শ্লীলতাহানি করে বনকর্মীরা। অন্যদিকে দেরাদুনের রাজাজি জাতীয় উদ্যানে ভান গুজ্জর সম্প্রদায়ের মানুষদের ব্যাপক মারধর করে বনকর্মীরা, তাদের বাড়িঘর ভেঙে দেওয়া হয়। তাদের থানায় আটক করে পেটানোও হয়। এমনকি মহিলাদের যৌন হেনস্থাও করা হয়।
সব মিলিয়ে দেশে আদিবাসীদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে।