বন্দি বহনে পুলিশকে প্রত্যাখ্যান বাস চালকের, শ্রমিক ঐক্যের পথে নতুন যাত্রা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: মিনেসোটায় জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গকে সাদা চামড়ার মার্কিন পুলিশ খুন করার পর থেকেই উত্তাল সে দেশ। প্রথম দিকের বিক্ষোভ মিনেসোটায় সীমাবদ্ধ থাকলেও ক্রমেই গণবিক্ষোভ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনার সময় উপস্থিত চার পুলিশ অফিসারকে বরখাস্ত করা, মূল দোষীকে গ্রেফতার করার পরও বিক্ষোভ থামার নাম নেই। গত কয়েক বছরে বারবার সাদা চামড়ার ওপর পুলিশের হাতে মৃত্যু হয়েছে কৃষ্ণাঙ্গ গরিব মানুষের। যারা সকলেই শ্রমিক শ্রেণির অংশ।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত শ্রমিক ইউনিয়নগুলির সংশোধবাদী চরিত্র গত পঞ্চাশ বছরে বারবার প্রকাশ্যে এসেছে। শ্রমিক শ্রেণির ঐক্য গড়ে তোলার বদলে অভিজাত শ্রমিকদের স্বার্থরক্ষাতেই তাদের বরাবরের মনোযোগ। সেই দুর্বলতার ফলে মিনেসোটার আন্দোলনেও কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটেছে। ক্ষোভে উন্মত্ত বিক্ষোভকারীরা গ্রন্থাগার জ্বালিয়ে দিয়েছে। পরিবারকেন্দ্রিক ছোটো ব্যবসাকেন্দ্রে আগুন লাগিয়েছে। এই সব ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই পুলিশ আন্দোলনকারীদের ওপর দমন নামানোর সুযোগ পেয়েছে। যদিও এখনও স্পষ্ট নয়, ওই সব ঘটনার পেছনে কোনো চক্রান্ত রয়েছে কিনা।
এ সবের মধ্যে সে দেশের বিশ কিছু ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের স্বপক্ষে যৌথ বিবৃতি প্রকাশ করে। তার ফল মিলতে শুরু করেছে।
শুক্রবার জর্জরে হত্যার প্রতিবাদে লকডাউন ভেঙে নিউইয়র্কে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন বহু মানুষ। সেই প্রতিবাদ ভেঙে দেয় পুলিশ। বহু আন্দোলনকারীকে গ্রেফতার করে। তারপরই ঘটে যায় চমকপ্রদ ঘটনা। একসঙ্গে অনেককে থানায় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাস জোটাতে গিয়ে থমকে যায় পুলিশ। বাসচালকরা বন্দিদের নিয়ে যেতে অস্বীকার করে। পরিবহণের মতো রণনৈতিক ক্ষেত্রের শ্রমিক শ্রেণির পক্ষ থেকে গণ আন্দোলনে এমন সংহতি জ্ঞাপন প্রায় অভূতপূর্ব। শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে যে সীমাহীন ক্ষমতা রয়েছে, তার প্রমাণ এই ঘটনা। পরিবহণ সহ বহু ক্ষেত্রের শ্রমিকরা গণ আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। পুঁজিবাদের কেন্দ্রে শ্রমিক শ্রেণির এই ঐক্য যে গোটা দুনিয়ার সমাজ বদলের লড়াইয়ের পরিপ্রেক্ষিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা, তা বলাই বাহুল্য।