লকডাউন:স্বাস্থ্য পরিষেবার দায়িত্ব না নিয়ে শ্রমজীবীদের মৃত্যু ঘণ্টা বাজাল মোদি সরকার
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ট্রেন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল আগেই। এলাকাভিত্তিক পরীক্ষা করে করোনা আক্রান্তদের চিহ্নিত করে চিকিৎসা বা গৃহবন্দি করে দেওয়ার সুযোগ ছিল যথেষ্ট। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি সামাল দিতে পারার আত্মবিশ্বাস দেখাতে পারল না কেন্দ্রীয় সরকার। দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার তুমুল দুর্দশা কার্যত স্বীকার করে নিয়ে শ্রমজীবী বিরোধী দীর্ঘ লকডাউনের পথে হাঁটল মোদি সরকার।
এই লকডাউন গায়ে লাগবে না ব্যবসায়ীদের। কারণ তাদের রিটার্ন জমা দেওয়া ও ঋণ পাওয়ার সুবিধার কথা দুপুরেই জানিয়ে দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন।গায়ে লাগবে না সরকারি চাকুরিজীবীদের। গায়ে লাগবে না, সেইসব আইটি বা আইটি নির্ভর পরিষেবা দেওয়ার সংস্থার কর্মীদের, যাদের ঘরে বসে কাজ করলেও চলে। গায়ে লাগবে তাদেরই, যাদের ওপর সব বোঝা চাপিয়ে নিশ্চিন্তে থাকা যায়। শ্রমজীবী। অথচ তাদের নামও মুখে আনলেন না প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী।
নরেন্দ্র মোদির লকডাউনের ঘোষণায় স্বাস্থ্য পরিষেবার(করোনা চিকিৎসা)উন্নতিতে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করার ঘোষণা রয়েছে। কিন্তু এই সময়কালে যেসব শ্রমজীবীরা দৈনিক মজুরিতে কাজ করেন, তাদের কী হবে, তা নিয়ে কোনো ঘোষণা নেই। যেসব নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা ছোটো বেসরকারি সংস্থায় কাজ করেন, যে সব ছোটো দোকানদার নামমাত্র সঞ্চয় করেন, তারা কীভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুত করবেন, সে সম্পর্কে কোনো বক্তব্য নেই।অথচ ইউনিসেফের হিসেব অনুযায়ী আমাদের দেশে ২০১৮ সালে ৯ লক্ষ শিশু অপুষ্টিতে মারা গেছে।বাজেটে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নামমাত্র বরাদ্দ, ১০০০০ জনসংখ্যায় ০.৯ টি হাসপাতাল বেডের দেশে করোনা সামাল দেওয়া অসম্ভব বুঝেই শ্রমজীবীদের নতুন করে বলি করল বড়লোকদের রাষ্ট্র।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দারিদ্র্যসীমার নীচের মানুষের জন্য মাসিক ৫ লক্ষ চাল-গম বিনা পয়সায় দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের জন্য মাসিক ১০০০টাকা ভাতার ঘোষণাও করেছেন। কিন্তু ওই টাকায় যে সংসার চলে না, তা বোঝার জন্য অঙ্ক জানার দরকার পড়ে না।