পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন এবং/অথবা জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ কার্যকর হলে ভারত কোনো অভিবাসীকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না- এই মর্মে ভারতের কাছে লিখিত আশ্বাস চাইল বাংলাদেশ।
গত অক্টোবরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন ভারত সফরে এসেছিলেন, তখন তিনিও এই প্রশ্ন করেছিলেন। তখন ভারতের পক্ষ থেকে মৌখিক ভাবে জানানো হয়েছিল, অসমে নাগরিকপঞ্জিতে যাদের নাম বাদ পড়েছে, তাদের বাংলাদেশে পাঠানো হবে না। এবার নতুন পরিস্থিতিতে লিখিত আশ্বাস চাওয়া হয়েছে। যদিও ভারত জানিয়ে দিয়েছে, কোনো লিখিত আশ্বাস দেওয়া সম্ভব নয়।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শদাতা গওহর রিজভি সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন, ভারতে যদি কোনো বাংলাদেশি নাগরিক বেআইনি ভাবে থাকেন, তাহলে তাঁরা তাদের ফিরিয়ে নেবেন। কিন্তু ভারতকে সেটা প্রমাণ করতে হবে।
এনআরসি এবং সিএএ নিয়ে ভারত জুড়ে প্রতিবাদের মধ্যে, ভারত সফর বাতিল করেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও বিদেশমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।
ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, ভারতের পক্ষে বাংলাদেশকে এই বিষয়ে কোনো লিখিত প্রতিশ্রুতি দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ, এনআরসি নিয়ে যারা প্রতিবাদ করছেন, তারা মনে করেন, সস্তা শ্রমিক বা ক্রীতদাসের বাহিনী তৈরি করাই এই পঞ্জিকরণের লক্ষ্য। উপযুক্ত নথির অভাবে সমাজের প্রান্তিক মানুষদের অনেকেই এনআরসি-তে নাম তুলতে পারবেন না। তাদেরকে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দি করে সস্তা মজুর হিসেবে রাষ্ট্র কাজে লাগাতে চায়। ভারত কাউকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে না, এমন লিখিত আশ্বাস যদি দিল্লি ঢাকাকে দেয়- তাহলে সেই দাবিই সত্যি প্রমাণিত হবে। অন্যদিকে দেশজুড়ে যে ভাবে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দিনদিন বাড়ছে, তাতে মুসলমান অনুপ্রবেশকারীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর লিখিত বক্তব্যও এই মুহূর্তে জানানো সম্ভব নয়। তাছাড়া, সরকারি ভাবে তাদের বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে প্রমাণ করাও বেশ কঠিন। এই পরিস্থিতিতে লিখিত উত্তরের পথে না হাঁটাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে মনে করছে মোদিশা সরকার।