পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত তিনদিন ধরেই ছড়িয়েছে খবরটা। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সিপিআই(মাওবাদী)-র কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটির সম্পাদক রাভুলা শ্রীনিবাস ওরফে রামান্না। মঙ্গলবার ছত্তীসগঢ়ের বিজাপুর জেলার পামেড়ে এক মাওবাদী নেতার শেষকৃত্যে বিশাল জনসমাগমের খবরে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। যদিও মাওবাদীদের তরফে বিবৃতি দিয়ে ঘটনার সত্যতা স্বীকার এখনও করা হয়নি।
আরও পড়ুন: সাম্প্রদায়িক ‘নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯’-এর বিরুদ্ধে লড়েই ঠেকাতে হবে এনআরসি
ছত্তীসগঢ়ের ডিজিপি ডিএম অবস্থি মঙ্গলবার টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, “আমরা জেনেছি বিজাপুরের পামেড়ে একজন সিনিয়র মাওবাদী নেতার শবদাহ করা হয়েছে। সেখানে বহু মাওবাদী কর্মী উপস্থিত ছিল। মৃত নেতা রামান্না কিনা, সেটা এখনই নিশ্চিত ভাবে বলতে পারছি না। তবে আমাদের সন্দেহ রামান্নাই ওই মৃত নেতা”। তবে বস্তারের আইজি পি সুন্দররাজ বলেছেন, রামান্নার মৃত্যুর খবর ‘প্রায় নিশ্চিত’। এ ব্যাপারে ঠিক খবরের জন্য সিআরপিএফ তার সূত্রদের সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
৫৬ বছর বয়সি রামান্না গত তিন দশক ধরে বস্তারে মাওবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। ২০১১ সালে তিনি দণ্ডকারণ্য স্পেশাল জোনাল কমিটির সম্পাদক হন। ২০১৩ সালে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পান। বস্তারে মাওবাদীদের সংগঠন শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ২০১০ সালে দান্তেওয়াড়ায় মাওবাদী হামলায় সিআরপিএফ-এর ৭৫ জন নিহত হয়, ২০১২ সালে জিরাম ঘাটির হামলায় মারা যান বড়ো মাপের কংগ্রেস নেতারা, ২০১৭ সালে বুরকাপালের হামলায় ২৫ জন সিআরপিএফ নিহত হয়- সবকটিতেই রামান্না অন্যতম প্রধান ভূমিকায় ছিলেন বলে নিরাপত্তা সংস্থাগুলির দাবি। ছত্তীসগঢ়, তেলেঙ্গনা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ড- চারটি রাজ্যেই ‘মোস্ট ওয়া্ন্টেড’ রামান্না। সব মিলিয়ে তাঁর মাথার দাম ১.৩৭ কোটি টাকা।
তবে পুলিশের সন্দেহ সহজে যাচ্ছে না। কারণ এর আগে রামান্না নিজেই নিজের মৃত্যুর খবর ছড়িয়েছেন, নতুন কোনো হামলার পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে। এছাড়াও নিরাপত্তা সংস্থাগুলি মনে করছে, কোনো হাসপাতালে রামান্নার চিকিৎসা করানোর জন্যও তাঁর মৃত্যুর ভুয়ো খবর ছড়াতে পারে মাওবাদীরা। রামান্নার ডায়াবেটিস রয়েছে বলে তথ্য রয়েছে পুলিসের কাছে।
১৯৮২ সালে মাওবাদী সংগঠনে যোগ দেন বর্তমান তেলেঙ্গনার সিদ্দিপেট জেলার বাসিন্দা রামান্না। ১৯৮৮ সাল থেকে তিনি বস্তারে রেয়েছেন। ১৯৯৪ সালে তাঁর ভাই ও ভাতৃবধূ পুলিশের গুলিতে মারা যান। তাঁরাও মাওবাদী সংগঠন করতেন। মাওবাদাদের স্কোয়াড সদস্য সোধি হিদমে ওরফে সাবিত্রীকে বিয়ে করেন রামান্না। রামান্না বর্তমানে কিস্তারাম এরিয়া কমিটির সদস্য। তাঁদের ছেলে রঞ্জিতও মাওবাদীদের স্কোয়াড সদস্য।