পার্সেল পিছু মজুরি কমিয়েছে ব্লিঙ্কিট, অনির্দিষ্টকাল ধর্মঘটে কর্মীরা
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত বছরের সেপ্টেম্বরে এক বিশাল ধর্মঘটের মধ্যে দিয়ে পার্সেল পিছু ২৫ টাকা মজুরি নির্দিষ্ট করতে পেরেছিলেন খাদ্য সরবরাহ সংস্থা ব্লিঙ্কিটের কর্মচারীরা। কিন্তু সম্প্রতি নতুন কর্মীদের ক্ষেত্রে তা কমিয়ে ১৫ টাকা করার ঘোষণা করেছে ব্লিঙ্কিট কর্তৃপক্ষ। এর বিরুদ্ধে এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ধর্মঘট চালাচ্ছেন ব্লিঙ্কিটের কলকাতার কর্মীরা।
বর্তমানে কেষ্টোপুর ও নিউটাউনের ১৫০ জন কর্মী ধর্মঘট চালাচ্ছেন। চিনার পার্কের কর্মীরা আপাতত লড়াই থামিয়েছেন। আন্দোলনের প্রতিক্রিয়ায় কর্তৃপক্ষে সকল কর্মীর মজুরি ১৫ টাকা করে দিয়েছে। দুপক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে বটে, তবে কর্মীদের দাবি মানার কোনো লক্ষণ নেই কর্তৃপক্ষের তরফে।
গত সেপ্টেম্বরে, সংস্থা কর্মীদের পার্সেল পিছু মজুরি একধাক্কায় ৫০ টাকা থেকে কমিয়ে ২০ টাকা করে দিয়েছিল। প্রতিবাদে কর্মীরা শহরের সব কটি কর্মকেন্দ্র বন্ধ করে দেন। একমাস আন্দোলন চলে। তাতে মজুরি বেড়ে ২৫ টাকা হয় এবং ১০০টি পার্সেল ডেলিভারি করলে যে উৎসাহ ভাতা স্থির হয়, তাতে ডেলিভারি পিছু ৪০ টাকা মজুরি হয়ে যেত। সংস্থা প্রতিশ্রুতি দেয়, আগামী ৩ বছর এই রেট কার্ড পালটানো হবে না। যদিও কোনো লিখিত চুক্তি হয়নি। সেই প্রতিশ্রুতি সংস্থা এবার ভেঙে দিয়েছে।
জানা গিয়েছে, নতুন কর্মীদের মজুরি কম দেওয়ার পাশাপাশি কর্তৃপক্ষ তাদের ৩ কিলোমিটারের বেশি দূরত্বে ডেলিভাবির করতে বাধ্য করছে(সাধারণ ভাবে ৩ কিলোমিটারের মধ্যেই ডেলিভারি করা হয়), ফলে তারা দিনে কম ডেলিভারি করতে পারছে। তার ওপর তাদের ডেলিভারির জায়গা থেকে কর্মকেন্দ্রে ফেরার দায়িত্বও নিচ্ছে না। অর্থাৎ পেট্রোল ও বাইক রক্ষণাবেক্ষণের খরচও বেড়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ নতুন কর্মীদের ওপর শোষণ অনেকগুন বেড়ে যাচ্ছে। তাদের আয় কমছে বেশ খানিকটা।
ধর্মঘটী শ্রমিকদের বক্তব্য, নতুন নীতি কার্যকর করে সংস্থা নতুন কর্মীদের হাতেই বেশি ডেলিভারি দিচ্ছে। এতে সংস্থার খরচ কমে যাচ্ছে, কারণ তাদের মজুরি ১৫ টাকা। এতে পুরনো কর্মীরা পার্সেল পিছু বেশি টাকা পেলেও তাদের মোট উপার্জন কমে যাচ্ছে। তাছাড়া এর ফলে নতুন ও পুরনো কর্মীদের মধ্যে অনৈক্য তৈরি হচ্ছে।
সংস্থা বলছে, তাদের লোকসান হচ্ছে, তাই তারা মজুরি বাড়াতে পারছে না। কিন্তু কর্মীরা বলছেন, সংস্থা বিজ্ঞাপনে প্রচুর টাকা খরচ করছে এবং মধ্যমগ্রাম ও বিরাটিতে নতুন কেন্দ্র খুলেছে অথচ মুখে লোকসানের কথা বলছে। সম্প্রতি ব্লিঙ্কিটের সিইও আলবিন্দার ধিন্দসা ইকনমিক টাইমসকে বলেন, তারা আগামী ১২ মাসের মধ্যে অনায়াসে তাদের ডার্ক স্টোর বা বড়ো বড়ো গুদামের সংখ্যা ৩০ থেকে ৪০% বাড়াতে পারার অবস্থায় রয়েছে। গত অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সংস্থার মুনাফা হয়েছে ৩০১ কোটি টাকা, যা আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় ২৮ শতাংশ বেশি। ওই একই সময় তারা মোট অর্ডার পেয়েছে ১৭৪৯ কোটি টাকার, যা আগের ত্রৈমাসিকের তুলনায় ১৮% বেশি।