Home মানবাধিকার ভারতের আইন ব্যবস্থার কাঠামো গরিবদের প্রতি বৈষম্যমূলক: ওড়িষা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি

ভারতের আইন ব্যবস্থার কাঠামো গরিবদের প্রতি বৈষম্যমূলক: ওড়িষা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি

ভারতের আইন ব্যবস্থার কাঠামো গরিবদের প্রতি বৈষম্যমূলক: ওড়িষা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ভারতের আইন ব্যবস্থার কাঠামোটাই এমন ভাবে তৈরি, যে সেটা গরিবদের প্রতি বৈষম্যমূলক। কোনো মানবাধিকার কর্মী নয়, বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেছেন ওড়িষা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি এস মূরলীধর। বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মদিন উপলক্ষ্যে প্রান্তিক মানুষদের আইন পরিষেবার সুযোগ নিয়ে এক আলোচনা সভায় এই মন্তব্য করেন তিনি। মূরলীধর বলেন, ন্যায়বিচার পেতে প্রান্তিক মানুষকে বহু বাধার মুখে পড়তে হয়। ‘ব্যবস্থাটা গরিবদের জন্য অন্য ভাবে কাজ করে’।

তাঁর ভাষণে প্রধান বিচারপতি বলেন, ভারতের যে ৩.৭২ লক্ষ জনগণ বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন, তাদের ৫৫ শতাংশই তফশিলি জাতি ও অন্যান্য পিছিয়ে থাকা শ্রেণির মানুষ। অপরাধী সাব্যস্ত হওয়া ১.১৩ লক্ষ মানুষের মধ্যে ২১ শতাংশ তফশিলি জাতি এবং ৩৭ শতাংশ অন্যান্য পিছিয়ে থাকা অংশের মানুষ। মূরলীধর আরও বলেন, যাদের বিচার চলছে, তাদের ১৭ শতাংশ এবং দোষী প্রমাণিত হওয়া মানুষের ১৯.৫ শতাংশ মুসলিম। তিনি বলেন, “অথচ নিজেদের অধিকার অর্জনের জন্য এগিয়ে এসে লড়াই করাটা এইসব মানুষদের পক্ষেই কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে”।

যাদের বিচার চলছে, তাদের মধ্যে অনেকেই জামিন পেয়ে যাওয়া সত্ত্বেও জেলে রয়েছেন, কারণ তাদের হয়ে বন্ড দেওয়ার কেউ নেই। যারা নিজেরা আইনি লড়াইয়ের খরচ বহন করতে পারে না, দেশে তাদের আইনি সাহায্য পরিষেবার গুণমান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মূরলীধর। তিনি বলেন, কল্যাণমূলক পরিষেবাগুলি নিয়ে গরিব মানুষের ধারণা হল, যা বিনা পয়সায় পাওয়া যায় বা যাতে যথেষ্ট পরিমাণ ভর্তুকি দেওয়া হয়, সেই সব পণ্যের গুণমান নিয়ে দাবি তোলা যাবে না। রেশনের খাদ্যদ্রব্য এবং আইনি পরিষেবা- দুই ক্ষেত্রেই তা সত্য।

প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, একটি স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, দলিত এবং আদিবাসী সম্প্রদায় থেকে যেসব মানুবাধিকারকর্মী আইনজীবীরা আসেন, তাদের ‘মাওবাদী’ বা ‘নকশালপন্থী’ ছাপ মেরে দেওয়া হয়। তাঁর কথায়, “দুর্ভাগ্যজনক ভাবে আজকাল একটা প্রবণতা দেখা যাচ্ছে, তা হল, প্রান্তিক মানুষের জন্য কেউ সওয়াল করলেই, সেটা তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান বলে মনে করা হচ্ছে’।

তাঁর মতে, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষজন সাধারণ ভাবে মনে করেন, তাদের জীবনধারণ ও ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে আইনি ব্যবস্থার কোনো মূল্য নেই।  “তাদের অভিজ্ঞতা বলে, তাঁদের নিপীড়ন করার জন্য এই আইনি ব্যবস্থাটা চালানো হয়, তাই এর মধ্যে ঢোকার থেকে একে এড়িয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করেন তারা। মূরলীধর বলেন, এই সমস্যা নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *