অটোমেশনের ধাক্কায় আগামী বছরের মধ্যে কাজ হারাবেন দেশের ৩০ লক্ষ কম দক্ষতার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: সমস্ত শিল্পেই ক্রমে বাড়ছে অটোমেশন বা স্বয়ংক্রিয় উৎপাদন ব্যবস্থা। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে স্বাভাবিক ভাবেই এর হার বেশি। অটোমেশন যত বাড়ছে, তত বাড়ছে কর্মী ছাঁটাইয়ের ঘটনা। একটি হিসেবে সম্প্রতি দেখা গেছে দেশের সফটওয়ার সংস্থাগুলি থেকে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ কাজ হারাবেন আগামী বছরের মধ্যে।
ন্যাসকমের তথ্য অনুযায়ী,ভারতের সফটওয়ার সংস্থাগুলিতে চাকরি করেন প্রায় ১ কোটি ৬০ লক্ষ মানুষ। তার মধ্যে ৯০লক্ষ কম দক্ষ পরিষেবা ও বিপিও ক্ষেত্রে কাজ করেন। তার ৩০% চাকরি হারাবেন বলে আশঙ্কা। যা কমবেশি ৩০ লক্ষ। ‘রোবোট প্রসেস অটোমেশন’-এর জন্যই হারিয়ে যাবে প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষের কাজ।
কেবল রোবোটিক প্রযুক্তির জন্যই চাকরি যাবে ৭ লক্ষ কর্মীর। বাকি কাজ হারিয়ে যাবে প্রযুক্তির উন্নতি ও অন্যান্য কর্মীদের দক্ষা বৃদ্ধির জন্য।
টিসিএস, ইনফোসিস, উইপ্রো, এইচসিএল, টেক মাহিন্দ্রা, কগনিজ্যান্ট ও অন্যান্যরা ২০২২-এর মধ্যে ৩০ লক্ষ কম দক্ষতার কর্মচারী ছাঁটাইয়ের পরিকল্পনা করছে বলে ব্যাঙ্ক অফ আমেরিকার রিপোর্টে বলা হয়েছে। এর ফলে সব মিলিয়ে তাদের বছরে প্রায় ৭ লক্ষ ৪১ হাজার কোটি টাকারও বেশি খরচ বাঁচবে। যার বেশির ভাগটাই কর্মীদের বেতন। উল্টোদিকে, মুনাফা বাড়বে ৭৪ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি নতুন সফটওয়ার তৈরির জন্য ৭,৪০০ কোটি টাকার কাজের সুযোগ তৈরি হবে।
ভারতের জিডিপিতে ১৯৯৮ সালে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্র ১ শতাংশ অবদান রাখত। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৭ শতাংশ। ২০০৫ থেকে ২০১৯-এর মধ্যে এদের বার্ষিক রাজস্ব বেড়েছে ১৮ শতাংশ। অ্যাকসেনচিউর, ক্যাপজেমিনি, অ্যাটসের মতো বিদেশি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার থেকে এদের বৃদ্ধি অনেক বেশি।
এই গোটা প্রক্রিয়ায় সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়বে ভারত ও চিনের সংস্থাগুলির কর্মীরা। এর ফলে বিশাল সমস্যায় পড়বে বাংলাদেশ ও কেনিয়া। উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন কর্মীর সংখ্যা কমে যাওয়াতেই বেশি বেশি করে অটোমেশনের পথে হাঁটছে এই সংস্থাগুলি।
অন্যদিকে সমস্যা বাড়বে ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রের কর্মচারীদেরও। এখানে মূলত কম ও মাঝারি দক্ষতার তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীরা কাজ করেন। ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্র শীর্ষে উঠেছিল ২০০২ সালে। বিশ্ব জোড়া অতি উৎপাদনের সমস্যার জন্য তা এখন পড়তির দিকে। এর কোপ পড়বে ওই কর্মীদের উপর।