পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: চিনের জিয়াংশু প্রদেশের নানজিং কলেজকে একটি ভোকেশনাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এই সিদ্ধান্তকে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মর্যাদা হানিকর বলে মনে করছেন পড়ুয়ারা। তাদের মতে, এর ফলে তাদের ডিগ্রির মান নেমে যাবে। প্রতিবাদে তারা কলেজের অধ্যক্ষকে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় বন্দি করে রাখেন।
ঘটনায় বেশ কয়েকজন প্রতিবাদী ছাত্র আহত হয়েছেন বলে খবর। অভিযোগ, পুলিশ ছাত্রদের ওপর লাঠিচার্জ করে এবং মরিচ গুড়ো ছড়িয়ে দেয়।
চিনে গণ আন্দোলন নিয়ন্ত্রিত। সেখানে এই ধরনের ঘটনা বিরল।
পুলিশ জানিয়েছে কলেজের স্নাতক স্তরের পড়ুয়ারা রবিবার থেকে সেখানে ‘জড়ো’ হয় এবং ৫৫ বছর বয়সি অধ্যক্ষকে ৩০ ঘণ্টারও বেশি সময় আটক করে রাখে।
ছাত্ররা চিৎকার করে শ্লোগান দিচ্ছিল এবং পুলিশকে ঢুকতে বাধা দিচ্ছিল। এমনকি কর্তৃপক্ষ দুই প্রতিষ্ঠানকে যুক্ত করার পরিকল্পনা বাতিল করার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরেও তারা অধ্যক্ষকে ছাড়তে রাজি হয়নি বলে দাবি পুলিশের।
চিনের সামাজিক মাধ্যমে পুলিশের লাঠিচার্জ ও মরিচ গুড়ো ছড়ানোর ছবি পোস্ট করেন অনেকেই। দেখা যায় এক ছাত্রীর মাথা থেকে রক্ত ঝড়ছে।
পুলিশের বক্তব্য, ক্যাম্পাসে শৃঙ্খলা ফেরাতে তারা ‘প্রয়োজনীয়’ ব্যবস্থা নিয়েছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সামাজিক মাধ্যম ওয়েইবোতে ছড়িয়ে পড়ে হ্যাশট্যাগ “Nanjing Normal University Zhongbei College students injured by violent law enforcement” । মঙ্গলবার বিকেলে তা ব্লক করে দেওয়া হয়।
কিন্তু একটি ভিডিওতে দেখা যায় হাজারও ছাত্র শ্লোগান দিচ্ছে। বাইরে দাঁড়িয়ে রয়েছে বহু পুলিশ। পুলিশ এরপর একেকজন ছাত্রকে টেনে বের করে নিয়ে আসে।
ঘটনার পর জিয়াংশু প্রদেশের ছটি কলেজই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কলেজ যুক্ত করার পরিকল্পনা বাতিল করেছে। ওই পরিকল্পনা মার্চ মাসে ঘোষিত হয়েছিল। স্বাধীন কলেজগুলিকে ভোকেশনাল স্কুলে পরিণত করার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রক।
এর আগে প্রদেশের অন্য চারটি কলেজেও একই ধরনের প্রতিবাদ হয়েছে। কোথাও কোথাও মারামারিও হয়েছে।
স্বাধীন কলেজগুলি বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বা ব্যক্তির যৌথ আর্থিক সাহায্যে পরিচালিত হয়। যেসব পড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্ত্তির উপযুক্ত নম্বর পায় না, তারা ডিগ্রিলাভের জন্য এই সব কলেজে ভর্তি হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে তাদের পড়াশোনার জন্য বাড়তি খরচ বহন করতে হয়।
এখানকার ডিগ্রিকে ভোকেশনাল ডিগ্রির চেয়ে বেশি মর্যাদার বলে মনে করা হয়। স্নাতকরা মনে করেন, এই ডিগ্রির ফলে দেশের কঠিন চাকরির বাজারে তারা কিছু বাড়তি সুবিধা পাবেন।
এ বছর চিনে ৯০ লক্ষ পড়ুয়া স্নাতক হয়েছে। যা একটি রেকর্ড।