পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: উত্তর প্রদেশ ও বিহারের গঙ্গায় কোভিড আক্রান্তদের দেহ ভেসে যাওয়া নিয়ে লেখা গুজরাটি কবি পারুল খাখারের একটি কবিতা(শববাহিনী গঙ্গা) সম্প্রতি দেশ জুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। এবার সেই কবিতা নিয়ে সরাসরি খড়্গহস্ত হল বিজেপি ও আরএসএস। গুজরাট সাহিত্য একাডেমির নিজস্ব প্রকাশনী শব্দশ্রুতির জুন সংস্করণের সম্পাদকীয়কে ওই কবিতাকে তীব্র আক্রমণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই কবিতা নৈরাজ্য প্রচার করছে। শুধু তাই নয়, যারা এই কবিতাটি নিয়ে আলোচনা করছেন বা এই কবিতাটি প্রচার করছেন,সম্পাদকীয় তাদের ‘সাহিত্যিক নকশাল’ বলে অভিহিত করেছে।
একাডেমির চেয়ারম্যান বিষ্ণু পাণ্ড্য জানিয়েছেন যে সম্পাদকীয়টি তিনিই লিখেছেন। সরাসরি ‘শববাহিনী গঙ্গা’ কবিতার নাম উল্লেখ না করলেও তিনি যে ওই কবিতাটির কথাই সম্পাদকীয়তে বলতে চেয়েছেন, তাও নিশ্চিত করেছেন পাণ্ড্য। কবিতাটি ইতিমধ্যে বহু প্রশংসিত এবং বেশ কয়েকটি ভাষায় অনূদিতও হয়েছে।
কবিতাটিতে ‘আন্দোলনের আকারে অর্থহীন আশঙ্কা প্রকাশ’ করা হয়েছে বলে ওই সম্পাদকীয়টিতে দাবি করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কবিতার শব্দগুলি ‘কেন্দ্রবিরোধী এবং কেন্দ্রের জাতীয়তাবাদী ভাবনার বিরোধী শক্তির দ্বারা অপব্যবহার করা হয়েছে’। সম্পাদকীয়টিতে আরও বলা হয়েছে ‘উক্ত কবিতাটি এমন কিছু ব্যক্তিদের দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে যারা চক্রান্ত করছে, যাদের দায়বদ্ধতা ভারতের জন্য নয়, অন্য কোনও কিছুর জন্য, এরা বামপন্থী, তথাকথিত উদারপন্থী, যাদের কেউ পাত্তা দেয়না… এই জাতীয় লোকেরা ভারতে দ্রুত বিশৃঙ্খলা ও অরাজকতা তৈরি করতে চায়… এরা সমস্ত ফ্রন্টেই সক্রিয় এবং একইভাবে তারা নোংরা উদ্দেশ্য নিয়ে সাহিত্যেও ঝাঁপিয়ে পড়েছে। এই সাহিত্যিক নকশালদের উদ্দেশ্য হল লেখনী বা এই কবিতাটির দ্বারা এমন শ্রেণির মানুষদের প্রভাবিত করা যারা এই কবিতার সাথে নিজেদের সুখ ও দুঃখের সম্পর্ক খুঁজে পাবে’। সম্পাদকীয়তে গুজরাটি ভাষায় ‘সাহিত্যিক নকশাল’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে।
সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে, খাখারের লেখা আগে একাডেমি প্রকাশ করেছে। আশ্বস্ত করা হয়েছে, ‘তিনি যদি ভবিষ্যতে ভালো কিছু লেখেন, তবে তা গুজরাটি পাঠকদের সমাদর পাবে’।
পাণ্ড্য বলেন ‘এতে যথার্থ কবিতার কোনো নির্যাস নেই। এটি কবিতা লেখার সঠিক পদ্ধতিও নয়। এটি কেবল একজনের ক্রোধ বা হতাশাকেই ফুটিয়ে তুলেছে এবং উদারপন্থী, বামপন্থী, মোদী বিরোধী, বিজেপি ও সঙ্ঘ(আরএসএস) বিরোধী শক্তিগুলির দ্বারা এটির অপব্যবহার হচ্ছে’।
পাণ্ড্য বলেন, খাখারের বিরুদ্ধে তার কোনো ‘ব্যক্তিগত ক্ষোভ’ নেই। কিন্তু ‘এটা কোনো কবিতা নয় এবং বেশ কিছু শক্তি এটিকে সামাজিক বিভাজনের কাজে লাগাচ্ছে’।