Home খবর বিশ্ব পুঁজিবাদের বর্তমান অবস্থাটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল ‘ফোর্বস ২০০০’
0

বিশ্ব পুঁজিবাদের বর্তমান অবস্থাটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল ‘ফোর্বস ২০০০’

বিশ্ব পুঁজিবাদের বর্তমান অবস্থাটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিল ‘ফোর্বস ২০০০’
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: একচেটিয়া পুঁজিবাদের দুনিয়ার অন্যতম প্রধান পত্রিকা ফোর্বস। এই পত্রিকায় সম্প্রতি পৃথিবীর বৃহত্তম ২০০০টি সংস্থার তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। এই তালিকাটি মন দিয়ে দেখলে বিশ্ব পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বর্তমান ছবিটা স্পষ্ট হবে। বোঝা যাবে, এই মুহূর্তে কারা সবচেয়ে বড়ো পুঁজিবাদী এবং হাতেগোনা কিছু একচেটিয়া পুঁজিপতির হাতে কী বিশাল পরিমাণ পুঁজি কেন্দ্রীভূত হয়ে রয়েছে।

একচেটিয়া পুঁজিবাদের বুনিয়াদি চরিত্রগুলি সম্পর্কে লেনিন যে কথাগুলি বলেছিলেন, ফোর্বসের তালিকায় সেই কথাগুলিই নতুন করে সত্য প্রমাণিত হয়েছে।

১. এই ২০০০টি বৃহত্তম কর্পোরেট সংস্থার মোট সম্পদ ২২৩.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অঙ্কটা ২০১৯-২০-তে আমেরিকার দুনিয়া জোড়া উৎপাদনের(৮৪.৫ ট্রিলিয়ন ডলার)দ্বিগুনেরও বেশি এবং গোটা পৃথিবীতে আমেরিকার যা মোট সম্পদ(৩৫৮.৪ ট্রিলিয়ন ডলার), তার ৬২.৩৩%।

সামগ্রিক ভাবে এই ২০০০টি কর্পোরেট সংস্থা ছড়িয়ে রয়েছে পৃথিবীর ৬১টি দেশে, যা দুনিয়ার সর্বমোট দেশের ৩১% মাত্র। এদের মোট পুঁজি বা সম্পদের অর্ধেকের বেশি কেন্দ্রীভূত রয়েছে মাত্র তিনটি দেশে। আমেরিকা, চিন ও জাপান।

২. চিনে যে কটি বৃহত্তম কর্পোরেট সংস্থা রয়েছে, আমেরিকায় রয়েছে তার দ্বিগুন। কিন্তু চিনা হংকং-এর সংস্থাগুলির মোট সম্পদের মূল্য(৫০.২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার), মার্কিন সংস্থাগুলির মোট সম্পদের(৫১.৭৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার) প্রায় সমান।

৩. এই সংস্থাগুলির মধ্যে সবচেয়ে বড়ো সংস্থাগুলি তিন ধরনের আর্থিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত। তার মধ্যে রয়েছে ২৯৮টি ব্যাঙ্ক, ১৩২টি বিবিধ আর্থিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত(গৃহঞণ, ক্রেডিট কার্ড ইত্যাদি), ১১৪টি বিমা সংস্থা। এই সংস্থাগুলির মোট সম্পদের পরিমাণ ১৫৬.৪ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বৃহত্তম সংস্থাগুলির মোট সম্পদের ৭০%। শুধু ব্যাঙ্কগুলির সম্পদই ১০৭.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা মোট সম্পদের ৪৮.১২%।

সবচেয়ে বড়ো ব্যাঙ্কগুলির ৪৪টি চিনে, ৪০টি জাপানে, ৩৬টি আমেরিকায়, অর্থাৎ মোট ব্যাঙ্কের ৪১.৫২%। সবচেয়ে বেশি সম্পদশালী ৪টি ব্যাঙ্কই চিনে। দ্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড কমার্শিয়াল ব্যাঙ্ক অফ চায়না, চায়না কনস্ট্রাকশন ব্যাঙ্ক, এগ্রিকালচারাল ব্যাঙ্ক অফ চায়না এবং ব্যাঙ্ক অফ চায়না।

বিবিধ আর্থি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির ৫৫.৩% আমেরিকা(৫৪)ও চিনে(১৯)।যদিও বিমা সংস্থাগুলির ২৮.০৭% রয়েছে আমেরিকায়, কিন্তু বিমা ক্ষেত্রের বৃহত্তম সংস্থাগুলি রয়েছে জাপানে, তাদের হাতে রয়েছে বিমা ক্ষেত্রের মোট সম্পদের ১৭.৪৪%।

৪. সম্পদের দিক থেকে অন্যান্য ১০টি বৃহত্তম ক্ষেত্র হল- ব্যবসায়িক পরিষেবা এবং সরবরাহ, তেল ও গ্যাস সংস্থা, নির্মাণ শিল্প, ভোগ্যপণ্য, ইউটিলিটি, টেলিকমিউনিকেশন, ওষুধ ও বায়েটেকনোলজি।

নির্মাণ ক্ষেত্রের মোট সম্পদের ৭৪.৯ % রয়েছে ৬৭টি চিনা সংস্থার হাতে। তাদের অনেক পেছনে রয়েছে জাপানের ১৯টি সংস্থা(৬.৭৪%) এবং আমেরিকার ১৭টি সংস্থা(৩.৩৬%)।

তেল উৎপাদন ও বণ্ট সংস্থাগুলির হাতে রয়েছে মোট ৬.৭৯৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০টি সবচেয়ে বড়ো সংস্থার হাতে এই ক্ষেত্রের ৬৫.৮৯% সম্পদ। সবচেয়ে বড়ো তেল সংস্থাগুলির মধ্যে ২১টি আমেরিকার, ৭টি রাশিয়ার, ৬টি কানাডার, ৬টি জাপানের, ৫টি ভারতের, চিন ও দক্ষিণ কোরিয়ার ৪টি করে।

ফোর্বস ম্যাগাজিনের তালিকা অনুযায়ী সবচেয়ে বড়ো তেল সংস্থাগুলি হল, সৌদি আরামকো, পেট্রোল চায়না, রয়্যাল ডাচ শেল, এক্সনমোবিল, গ্যাজপ্রোম, বিপি, টোটাল, সাইনোপেক, শেভ্রন এবং রোজনেফ্ট। বিক্রির ওপর অংশীদারিত্বের দিক থেকে বৃহত্তম দুটি চিনা সংস্থা(মোট বিক্রির ১৬.৩%)।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *