Home খবর উৎপাদন বেশি, জোগান কম: ভারতে টিকাকরণ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই

উৎপাদন বেশি, জোগান কম: ভারতে টিকাকরণ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই

উৎপাদন বেশি, জোগান কম: ভারতে টিকাকরণ নিয়ে রহস্যের শেষ নেই
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ভারতের টিকাকরণের সংখ্যায় একটি রহস্য রয়েছে যা সরকারি পরিসংখ্যানগুলি ব্যাখ্যা করতে সক্ষম বলে মনে হয় না। এই রহস্যটি হ’ল সরকারি ঘোষণা এবং ভ্যাকসিন নির্মাতাদের দাবি, উভয়েরই তথ্য অনুযায়ী ভারতে গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ২৭ লাখ ডোজ উৎপাদন হয়।  তবুও, মে মাসের প্রথম তিন সপ্তাহে  গড়ে দৈনিক১৬.২ লক্ষ ডোজ দেওয়ার পর রাজ্যগুলি টিকার অভাবের অভিযোগ করছে।

এই মাসের শুরুর দিকে সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি হলফনামায় বলেছিল যে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (এসআইআই) একমাসে কোভিশিল্ডের ৬.৫ কোটি ডোজ এবং ভারত বায়োটেক এক মাসে কোভাক্সিনের ২ কোটি ডোজ উৎপাদন করছে, যা জুলাইয়ের মধ্যে বাড়িয়ে প্রতি মাসে ৫.৫ কোটি ডোজ করা হবে। তারা আরও বলে, স্পুটনিক বর্তমানে প্রতি মাসে  ৩০ লাখ ডোজ  উৎপাদন করছে, জুলাইয়ের মধ্যে তা বাড়িয়ে এক মাসে ১.২ কোটি উৎপাদন করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

সেরাম নিজেই বারবার বলেছে যে তারা মাসে ৬-৭ কোটি ডোজ উৎপাদন করছে।  ভারত বায়োটেকের সিএমডি কৃষ্ণ এল্লা বলেছেন, তাদের সংস্থা এপ্রিলে ২ কোটি ডোজ উৎপাদন করত এবং মে মাস থেকে তারা ৩ কোটি ডোজ উত্পাদন করছে।

অর্থাৎ, যদি আমরা কম করেও ধরি, তাহলে দেখা যাচ্ছে, ৩১ দিনের মে মাসে প্রতিদিন গড়ে ২৭.৪ লক্ষ ডোজ উৎপাদন হচ্ছে।

এখন, কোউইন পোর্টাল থেকে টিকা দেওয়ার পরিসংখ্যানগুলি দেখা যাক। কোউইনের তথ্য দেখায় যে মে মাসের প্রথম ২২ দিনের মধ্যে ভারত প্রতিদিন গড়ে ১৬.২ লক্ষ ডোজ ধরে  প্রায় ৩.৬ কোটি ডোজ টিকার জোগান দিয়েছে।  এই হারে চললে এ মাসে ৫ কোটি ডোজ টিকাকরণ হবে। যাইহোক, টিকাদানের সংখ্যা ক্রমাগত হ্রাস পাচ্ছে এবং ১৬ থেকে ২২ মে- এই সাত দিনে গড়ে ১৩ লক্ষের কম টিকাকরণ হয়েছে।

যদি মাসে দেশে ৮.৫ কোটি ডোজ উৎপাদন হয় আর ৫ কোটি টিকাকরণ হয়, তাহলে প্রশ্ন ওঠে বাকি ৩.৫ কোটি কী হল? একটা সম্ভাব্য উত্তর, বেশি কিছু টিকা কর্পোরেট হাউজগুলোর কাছে গেছে। তবু মোট উৎপাদিত টিকার এক চতুর্থাংশ নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এর পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। তার মধ্যে একটা হল, সরকারের সঙ্গে এই সংস্থাগুলির চুক্তিতে দেরি হওয়া। কিন্তু তা দিয়েও সবটার ব্যাখ্যা হয় না।

রাজ্যগুলি বারবার সরবরাহের ঘাটতির অভিযোগ করেছে।  উদাহরণস্বরূপ, কর্ণাটকে ভ্যাকসিনের অভাবের ফলে ১৮-৪৪ বয়সের গ্রুপের টিকা দেওয়া বন্ধ হয়েছে। দিল্লি এবং  মহারাষ্ট্রের সরকারও একই ধরনের পদক্ষেপ করেছিল।  অন্ধ্র প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী, বেসরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিন সরবরাহ বন্ধের দাবি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখেন।  তিনি চিঠিতে যে কারণগুলির উল্লেখ করেছিলেন তা হ’ল  সরকারের কাছে সরবরাহ কম হচ্ছে এবং বেসরকারি  হাসপাতালগুলি ভ্যাকসিনের জন্য অত্যাধিক পরিমাণে টাকা নিচ্ছে মানুষের থেকে।

কোউইন পোর্টালে টিকার স্লট বুক করাও বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। টিকার অভাবটা এর থেকেও বোঝা যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়, উৎপাদিত সব টিকার সঠিক ব্যবহার হচ্ছে কি? নাকি সেগুলো হারিয়ে যাচ্ছে বা কোনো গলি পথে আটকে থাকছে।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *