Home খবর কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য ছাড়াই ইজরায়েলকে প্রতিরোধ করছে ফিলিস্তিনিরা, তাদের পাশে দাঁড়ান
0

কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য ছাড়াই ইজরায়েলকে প্রতিরোধ করছে ফিলিস্তিনিরা, তাদের পাশে দাঁড়ান

কোনো আন্তর্জাতিক সাহায্য ছাড়াই ইজরায়েলকে প্রতিরোধ করছে ফিলিস্তিনিরা, তাদের পাশে দাঁড়ান
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ইজরায়েল আবার গাজা, ওয়েস্ট ব্যাংক ও পূর্ব জেরুজালেমে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের ওপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে। আবারও, ধোঁয়া বোমা ফিলিস্তিনিদের দম বন্ধ করে দিচ্ছে। গাজায় ফিলিস্তিনিদের বাড়িগুলি আবারও ধ্বংসস্তুপে পরিণত হচ্ছে।

ইজরায়েলের রাবার বুলেটে ফিলিস্তিনিদের চোখ অন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফিলিস্তিনি মরদেহগুলিকে আঘাত করছে ইজরায়েলের ব্যাটন। ফিলিস্তিনের হাড় ভেঙে দেওয়া হচ্ছে।  ভয়াবহ মারণাস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হচ্ছে ফিলিস্তিনি শিশুদের। পথ ধুয়ে যাচ্ছে শিশুদের রক্তে।

গোটা পরিস্থিতিটাকে কোনো সংবাদ মাধ্যম বলছে ‘হিংসার চক্র’। কেউ বলছে ‘আরও একবার ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন সংঘর্ষ’। এই সব শব্দের আড়ালে থেকে যাচ্ছে একটি জাতিকে নির্মূল করার প্রকল্প, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলে আসছে।

ইজরায়েলের এই নতুন আক্রমণ শেক জারার আশেপাশে শুরু হয়েছিল, তারপর আল আকসা মসজিদে এবং এখন গাজায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্যালেস্টাইনকে  ফিলিস্তিনিদের থেকে মুক্ত করার জন্য বা তাদের মানুষ হিসেবে পরাস্ত করার জন্য এটির নকশা তৈরি করা হয়েছে। এটার লক্ষ্য ফিলিস্তিনিদের জাতীয়তাবাদী চেতনাকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া, তাদের উদ্দীপনাকে ধ্বংস করা।

ইজরায়েলি সামরিক নেতারা এই সম্পর্কে খোলামেলা।  ২০০৩ সালে, ইজরায়েলি জেনারেল মোশে ইয়াওলন বলেছিলেন যে ওনার কাজ হল, ফিলিস্তিনিরা যাতে ‘ চেতনার গভীর থেকে বুঝতে পারে যে তারা পরাজিত মানুষ’।

একে ‘হিংসার চক্র’ বলা মানে জড়িত সকল পক্ষকে এক চোখে দেখা। কিন্তু পরিস্থিতি আদৌ তেমন নয়। এখানে রয়েছে অত্যাচারী এবং অত্যাচারিত। একদিকে রয়েছে পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত ইজরায়েল। প্রচুর অর্থ দিয়ে তৈরি তাদের উন্নত অস্ত ভাণ্ডার। বেশিরভাগ বড়ো পাশ্চাত্য শক্তি তাদের পেছনে রয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে প্যালেস্তাইনের বাসিন্দারা। যাদের ছোট্ট একটি অঞ্চলে কার্যত বন্দি করে রাখা হয়েছে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য। গাজার জনগণকে চোদ্দ বছর ধরে অবরূদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের গোটা জীবনটাই যেন পক্ষাঘাতগ্রস্থ। সেখানে অতিমারি চলছে। তার মধ্যেই গাজার নাগরিকদের ওপর এই চতুর্থ যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে যুদ্ধের মূল লক্ষ্যই হল নিরীহ জনগণকে হত্যা করা।

মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছিলেন, “সব পক্ষকে পরিস্থিতি নিরসনে, উত্তেজনা হ্রাস করতে, পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য ব্যবহারিক পদক্ষেপ নিতে হবে”। এটি চূড়ান্ত দ্বিচারিতা।  বিডেন প্রশাসন এমন বহু ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই দিয়েছে, যা থেকে বোঝা যায় যে তারা পূর্ববর্তী প্রতিটি মার্কিন সরকারের মতোই ইজরায়েলের সাথে অন্তরঙ্গ সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক অব্যাহত রাখতে নিবেদিত প্রাণ। প্রকৃতপক্ষে, বিডেন প্রশাসন জেরুজালেমে মার্কিন দূতাবাস চালিয়ে যাওয়ার পক্ষেই রয়েছে। এটি ছিল ট্রাম্প-জমানার একটি উস্কানিমূলক সিদ্ধান্ত। যা  শেখ জারাহ থেকে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ করার ব্যাপারে ইজরায়েলকে সবুজ সংকেত দেয়।  ফিলিস্তিনিদের  ‘শান্ত’ হতে বলা বা ‘যুদ্ধের তীব্রতা কমাতে’ বলাটা আসলে তাদের বর্তমান পরিস্থিতিকে চুপচাপ মেনেনিতে বলা ছাড়া কিছুই নয়। ধন্যবাদ, পূর্ব জেরুজালেমের যুবকেরা, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কের গ্রামবাসীরা, হেব্রন এবং জেনিন এবং গাজার লোকেরা যে ব্লিংকেনের মধুর শব্দ এবং রক্তস্নাত কূটনীতিকে মোটেই পাত্তা দেয়নি, এজন্য তাদের ধন্যবাদ প্রাপ্য।

বশংবদ, দুর্নীতিগ্রস্থ, দ্বিচারী ফিলিস্তিনি নেতৃত্বের(মান্যতাপ্রাপ্ত) কথাকে অস্বীকার করে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ করছেন।  জন্ম নিয়েছে এক নতুন প্রজন্মের মুক্তিযোদ্ধা।  তারা আল-আকসায় ইজরায়েলি সেনার প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছিল, তারা তার আশেপাশে এবং এখন প্যালেস্তাইন জুড়ে শহরে শহরে শহিদ হয়ে ইজরায়েলি সেনাদের প্রবেশের প্রতিবাদ করছে, তারা বিক্ষোভ করছে, ইজরায়েলি পতাকা পোড়াচ্ছে এবং ফিলিস্তিনি পতাকা উত্তোলন করছে।  ইজরায়েলি পুলিশ এবং সুরক্ষাকর্মীদের দ্বারা তরুণ ফিলিস্তিনিদের গ্রেফতার করার ছবিগুলি তাদের অবাধ্যতাকে স্পষ্ট করে দেখিয়ে দিচ্ছে।  অনেকের মুখেই দুষ্টুমির হাসি, যেন বলছেন, ‘ প্রতিরোধের মধ্যে দিয়েই আমরা মানুষ হয়ে উঠছি’।

উত্তরের উম্মে আল ফাহাম শহরের বিক্ষোভগুলি থেকে শোনা যাচ্ছে “ধ্বংসস্তুপের নীচ থেকে আমরা উঠে দাঁড়াই … ধ্বংসের মধ্য থেকে আমরা পুনর্জন্ম লাভ করি”।  এ জাতীয় নতুন প্রজন্মের যোদ্ধাদের কোনও আনুষ্ঠানিক অনুমোদন নেই, আরবের কোনো সরকার তাদের সমর্থন করছে না,  তাদের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক কূটনীতি চলছে না। তাদের রয়েছে শুধু কণ্ঠস্বর, দেহ ও দৃঢ় সংকল্প — দুনিয়া জুড়ে প্রতিবাদ জানিয়ে আমাদের উচিত সেই তালিকায় যুক্ত হওয়া।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *