পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: সপ্তাহ পেরিয়ে গিয়েছে। কিন্তু লাতিন আমেরিকার কলম্বিয়ায় বিক্ষোভ থামার লক্ষণ নেই। সে দেশের কমিউনিস্ট বিপ্লবী এবং অন্যান্য সংগ্রামী শক্তিগুলো অনির্দিষ্ট কাল ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ চলছে। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ২৪ জনের, আহত হয়েছে ৮০০-রও বেশি। মৃতদের মধ্যে ১১ জন পুলিশের গুলির শিকার। সরকারের ভূমিকা নিয়ে দুনিয়া জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। সরকার বলছে, আন্দোলনে কমিউনিস্ট গেরিলারা ‘ঢুকে পড়েছে’ বলেই কড়া হাতে বিক্ষোভ দমনের পথে যেতে হয়েছে।
গত ২৮ এপ্রিল আন্দোলন শুরু হয়। মূলত করোনা কালে দেশের ভেঙে পড়া অর্থনীতি চাঙ্গা করতে কর সংস্কারের সরকারি প্রস্তাবের বিরোধিতা দিয়েই শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোভের জেরে সেই প্রস্তাব স্থগিত হয়ে যায়। অর্থমন্ত্রী পদত্যাগ করেন। কিন্তু আন্দোলন আরও তীব্র আকার ধারণ করে হিংসাত্মক আকার নেয়। কর সংস্কারের দাবি পেরিয়ে তা এখন ছড়িয়ে গেছে দেশের বাড়তে থাকা অসাম্য, করোনার চেয়ে বেড়ে যাওয়া দারিদ্র্য এবং খুব ধীর গতিতে প্রতিষেধক দেওয়ার বিরোধিতায়। দেশের শ্রমিক ইউনিয়নগুলো প্রাথমিক ভাবে ধর্মঘটের ডাক দিলেও, দ্রতই শ্রমিকদের সঙ্গে যোগ দেয় মধ্যবিত্তরা। নতুন কর সংস্কারের প্রস্তাবে তারাও সমস্যায় পড়বেন বলে মনে করছেন।
আন্দোলনের মধ্যে জনগণ বাস, থানা, ব্যাঙ্ক, এটিএমে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। দেশের তৃতীয় বৃহত্তম শহর কালিতে গুলি চালায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, দুই বিপ্লবী সংগঠন রেভলিউশনারি আর্মড ফোর্সেস অফ কলম্বিয়া ও ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির সদস্যরা গোলমাল পাকাচ্ছে। শহর জুড়ে দাপিয়ে পবেড়াচ্ছে আরবান গেরিলারা। একে শহুরে সন্ত্রাসবাদ বলে চিহ্নিত করেছে সে দেশের সরকার। তাদের দাবি, ৭৬৯ জন পুলিশ আহত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ইভান ডুকের সমর্থকরা বলছেন, অশান্তি সৃষ্টি করে গেরিলারা দেশে নিজেদের ক্ষমতা বাড়াচ্ছে এবং বামপন্থীরা পরের বছরের ভোটের জমি তৈরি করছে।
বস্তুত, ২০১৯ থেকেই অশান্ত কলম্বিয়া। মাঝে অতিমারির জন্য পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। অনেকেই মনে করছেন, ২০১৯ সালে চিলির বি৭ওভের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছিল ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর সহ গোটা লাতিন আমেরিকায়। এবার সেই স্ফূলিঙ্গ কলম্বিয়া থেকেই দাবানল হয়ে যেতে পারে।