
সর্বহারা ও জনগণের হাতে ক্ষমতা, সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের পথে এগনোর জন্য পুঁজিবাদী/সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লড়াই করুন ও প্রতিরোধ করুন
এই মে দিবসে সারা বিশ্বের শ্রমিক শ্রেণি ও নিপীড়িত মানুষ অতিমারির সম্মুখীন। এই অতিমারিতে ১৩ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন ও ৩০লক্ষ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আর তা হয়েছে শুধু মাত্র পুঁজিবাদী উৎপাদন ব্যবস্থা, সাম্রাজ্যবাদ, তাদের রাষ্ট্র, সরকার ও দালালদের কারণেই।
অতীতে ইতিমধ্যেই সাম্রাজ্যবাদীরা প্রকৃতি ও সমাজের ধ্বংস, পারমাণবিক ও জৈবিক অস্ত্র পরীক্ষার ফলে বহু ভাইরাসের সৃষ্টি করেছে।
পুঁজিবাদী ব্যবস্থার কারণে অতিমারিটি দুর্ভোগ ও গণহত্যায় রূপান্তরিত হয়েছে। বিজ্ঞানীরা নিজেরাই এখন স্বীকার করছেন যে সরকারগুলি অতিমারি রোধ করতে অক্ষম এবং এতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে পুঁজিবাদ আর কার্যকর ব্যবস্থা নয়।
আমরা জানি যে গণ প্রতিষেধক কর্মসূচি এই প্রবল সংক্রমণকে আংশিকভাবে কমাতে পারে, তবে বিশ্বের বহু দেশেই ভ্যাক্সিন সে দেশের সকল মানুষের জন্য নয়। পুঁজিবাদী/সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থায়, সমস্ত কিছুই বহুজাতিক সংস্থার হাতে থাকে, সমস্ত কিছু মুনাফার জন্য করা হয়, এমনকি পেটেন্ট এবং ভ্যাকসিনগুলি পুঁজির আইন অনুযায়ী বিশ্ব বাজারে কেনাবেচা হয়।
শীর্ষস্থানীয় ৫টি ভ্যাকসিন নির্মাণকারী সংস্থা এ পর্যন্ত ৬০ বিলিয়ন ইউরোর মুনাফা করেছে এবং এ বছর আরও ৭০ বিলিয়ন ইউরো নেট মুনাফা হওয়ার সম্ভাবনা আছে।
একচেটিয়া বাজারের অধিকারী ওষুধ সংস্থাগুলির সকলেরই প্রধান দফতর হাতেগোনাসাম্রাজ্যবাদী দেশগুলিতে এবং তারা প্রধানত কয়েকটি মুখ্য সাম্রাজ্যবাদী দেশেরই সেবা করছে, যারা বিশ্বের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে শোষণ ও নিপীড়ন করে। এখনও অবধি ৮০% ভ্যাকসিন এই জাতীয় দেশে বিক্রি হয়েছে এবং এইভাবে বিশ্বের জনসংখ্যার মাত্র ১৪% এই ভ্যাকসিনগুলি পাবে, বাকি ৮৫% নির্ভর করে আছে কেবলমাত্র ২০%-এর ওপর।
‘ভ্যাকসিন যুদ্ধ’ সর্বহারা ও জনগণের ওপর চাপানো হয়েছে। ধনীদের জন্য ভ্যাকসিন ও দরিদ্রদের জন্য মৃত্যু। গরিবদের জন্য প্রতিষেধক নেই। সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলির জন্য ভ্যাকসিন রয়েছে, অন্যদিকে নিপীড়িত দেশ ও জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন নেই। অতিমারি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য গরিব মানুষের ভ্যাকসিন প্রয়োজন, কিন্তু তা আসলে বুর্জোয়াদের বড়ো মাপের আন্তর্জাতিক ব্যবসার বস্তু। সেখানে গরিবের জীবন ও স্বাস্থ্য গুরুত্বহীন।
যতদিন এই মহামারির মতো সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থা চলবে, ততদিন অতিমারি আর যুদ্ধও চলবে। মানবতা, পরিবেশ, সংস্কৃতি ও সমাজের জন্য ধ্বংসাত্মক এই ব্যবস্থা এখন মৃত্যু শয্যায় রেয়েছ এবং দ্রুত এটি বিলুপ্ত ধ্বংস হওয়া দরকার।
মহামারিটি সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থার সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলেছিল, যা দিন দিন আরও ধ্বংসাত্মক হয়ে যাচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদ, আমলাতন্ত্র, পুঁজিপতি ও সামন্ত শ্রেণি করোনা ভাইরাস জনিত সংকটকে তাদের পক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে। পুঁজিবাদীদের এই সংকট থেকে উদ্ধার করার চেষ্টা করছে এবং তার জন্য শ্রমিক, কৃষক ও পেটি বুর্জোয়া শ্রেণির ওপর বোঝা চাপিয়ে দিতে চাইছে।
শ্রমিকদের অধিকারে আক্রমণ, কর্মক্ষেত্রের সুরক্ষা বিধিমালা হ্রাস, কর্মঘণ্টা ১২ ঘণ্টা অবধি বৃদ্ধি, ন্যূনতম মজুরি অস্বীকার, শ্রম, জনকল্যাণ, পরিবেশ ও শিক্ষা আইনের অবনতি।
ট্রেড ইউনিয়ন, শ্রমিক শ্রেণির সংগঠন ও সংগ্রামী শ্রমিক সংগঠনগুলির উপর হামলা।
স্বাস্থ্য পরিষেবা, স্কুল, গণ পরিষেবা ও রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগের বেসরকারিকরণ।
অনলাইন শিক্ষার প্রসার যা দরিদ্র জনসাধারণকে শিক্ষা থেকে দূরে রেখে দেয় এবং শিক্ষার্থীদের প্রায় রোবটে পরিণত করে।
হাই-টেক সংস্থাগুলি এআই এবং আইটির মাধ্যমে শাসক শ্রেণির শোষণ করার ক্ষমতা এবং তাদের সম্পদ বৃদ্ধি করছে।
ধনীদের কর ও সম্পদে নজর দেওয়া হচ্ছে না।
পুঁজিবাদী/সাম্রাজ্যবাদী অর্থনীতি যখন সঙ্কটের মধ্যে ডুবে গেছে, সে সময় কোভিড ১৯ এর প্রসারের কারণে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি আরও ধাক্কা খায়। লকডাউন জনগণের জীবনকে স্তব্ধ করে দেয় এবং শ্রমিক, কৃষক, জনগণ এবং অন্যান্য নিপীড়িতদের বিরাট অসুবিধার মধ্যে ফেলে। বিশেষত অভিবাসী শ্রমিকরা খাবার বা জল ছাড়াই রাস্তায় পড়ে পড়ে মরতে বাধ্য হয়। বহু মধ্যবিত্ত সর্বহারায় পরিণত হয়।
মহামারি কয়েকজনের হাতে বিপুল পরিমাণে সম্পদ জমার জন্য আরও একটি সুযোগ হয়ে ওঠে। একদিকে রাজকোশে ঘাটতি বাড়ে অন্যদিকে চারদিকে বাড়তে থাকে নানা ধরনের আর্থিক বিনিয়োগ।
মহামারির ফলে যুদ্ধের সম্ভাবনা, সাম্রাজ্যবাদীদের লাভের তৃষ্ণা এবং পরিবেশের বিপর্যয় বেড়েছে, যা মানবজাতির জন্য অন্যতম প্রধান বিপদ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দুনিয়া জোড়া এই সংকটের ফলে মৌলিক দ্বন্দ্বগুলি অভূতপূর্ব ভাবে তীব্র হয়েছে। নতুন নতুন যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তার সামনের সারিতেই রয়েচে আমেরিকা। তারা রাশিয়া ও চিনের সঙ্গে নতুন করে ঠান্ডা যুদ্ধ তৈরি করতে চাইছে। ন্যাটোর মধ্যে দিয়ে ইউরোপ, জাপানের মতো বেশ কিছু সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সঙ্গে জোট বাঁধতেও চাইছে। আমেরিকা ও ন্যাটো আফগানিস্তান, সিরিয়া, ইরাকে আগ্রাসন চালিয়েই যাচ্ছে। সমস্ত সাম্রাজ্যবাদী শক্তিই দুনিয়ার নানা প্রান্তে যুদ্ধ চালাচ্ছে ও অস্ত্র প্রতিযোগিতা তীব্র করে চলেছে। জনগণ যখন রোগ, দারিদ্র, শোষণ, দূষণ, পরিবেশ ধ্বংসে মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে, তখন সাম্রাজ্যবাদীরা এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকা থেকে শক্তির উৎস ও কাঁচামাল লুঠ করার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ফলে বহু মানুষ উচ্ছেদ হয়ে ব্যাপক দুর্দশা ও মৃত্যুর মুখে পড়ছে।
এই সমস্ত কিছুর মখোমুখি হয়ে, সর্বহারা এবং জনগণের বিদ্রোহ ও প্রতিরোধ গড়ে উঠেছে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে এবং বিশ্বের প্রতিটি কোণে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য সহ। জনসাধারণের গণজাগরণ হয়েছে, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সশস্ত্র সংগ্রাম চলছে, ভারত ও ফিলিপিন্সে জনযুদ্ধ এগোচ্ছে, পেরু, তুরুস্ক জনযুদ্ধের পথে এবং পার্টি ও গেরিলা ফৌজ পুনর্গঠন হচ্ছে।
রাষ্ট্র ও সরকার লকডাউনকে জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ হিসেবে ব্যবহার করে, তাদের রাষ্ট্রগুলিকে শক্তিশালী করতে, আধুনিক ফ্যাসিবাদের বিকাশ ঘটায়, সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলিকে পুলিশ রাষ্ট্রে পরিণত করে এবং নিপীড়িত দেশগুলির অবস্থা আরও খারাপ হয়।
এই বিশ্বকে ছুঁড়ে ফেলতে হবে। শাসক শ্রেণির শাসন চালিয়ে যাওয়ার কোনও অধিকার ও যোগ্যতা নেই।
সর্বহারা ও নিপীড়িত মানুষেরা এই বিশ্বব্যবস্থার অন্তহীন ভয়াবহতা গ্রহণ করতে পারে না, তাদের একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা দরকার- শোষণ, নিপীড়ন, মহামারি এবং যুদ্ধ ছাড়া একটি নতুন সমাজ।
এই বছর প্যারিস কমিউনের ১৫০ তম বার্ষিকী।
মার্কস স্পষ্ট ও বৈজ্ঞানিক উপায়ে সংজ্ঞায়িত করেছেন যেঃ “এটি মূলত একটি শ্রমিক শ্রেণির সরকার ছিল, শাসক শ্রেণির বিরুদ্ধে উৎপাদনকারী শক্তির সংগ্রামের ফল ছিল এটা। এর মধ্যে দিয়েই শেষ পর্যন্ত সেই রাজনৈতিক রূপটি আবিষ্কার হয়েছিল , যার অধীনে শ্রমের অর্থনৈতিক মুক্তি নিয়ে কাজ করা যায়”। (মার্কস, ফ্রান্সের গৃহযুদ্ধ)
এঙ্গেলস বলেছিলেন “প্যারিস কমিউনের দিকে দেখুন, এটিই সর্বহারা শ্রেণির একনায়কতন্ত্র”।
প্যারি কমিউন ডিক্রি জারি করে স্থায়ী সেনাবাহিনীকে নিষ্ক্রিয় করে, বদলে শ্রমিকদের সমান আয়ে অফিসারদের নিয়োগ করে। তাদের যে কোনো সময় সরিয়ে দেওয়ার সুযোগ ছিল। এরা সকলেই ছিল বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের প্রতিনিধি। কারখানা এবং কর্মশালাগুলি বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল।
কমিউন দেখিয়েছিল যে সর্বহারা শ্রেণি জঙ্গি আন্দোলন ছাড়া রাজনৈতিক ক্ষমতা দখল করতে পারে না।
সবচেয়ে বড়ো কথা হল, কমিউন বুঝিয়েছিল যে পুরনো রাষ্ট্রযন্ত্রকে দখল করাটাই শ্রমিক শ্রেণির পক্ষে যথেষ্ট নয়। সেটাকে ধ্বংস করা দরকারকারণ সেটাই সকল গণবিপ্লবের প্রাকশর্ত।
কমিউন ইঙ্গিত দিয়েচিল যে যে সর্বহারা ও জনগণের সমস্যাগুলি সমাধান করার জন্য আজ বিপ্লবের প্রয়োজন যার দ্বারা শ্রমিক শ্রেণী ক্ষমতা দখল করবে এবং কয়েক দিনের মধ্যেই নিজেদের সমস্যার সমাধান করবে।
পুঁজিবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী ব্যবস্থাকে চিরতরে ধ্বংস করার জন্যই সংগঠিত হওয়া এবং লড়াই করা, বাঁচা ও মরা জরুরি। এই ব্যবস্থাই সংকট ও অতিমারি, শোষণ, দারিদ্র, পরিবেশ ধ্বংস, ফ্যাসিস্ট-সেক্সিস্ট ও জাতিবিদ্বেষী বর্বরতা, প্রভুদের সেবায় নিয়োজিত দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদদের সরকার, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরজীবীদের জন্ম দিয়েছে।
এই পয়লা মে সব দেশের সর্বহারা ও জনগণ যতরকম ভাবে সম্ভব নীচের কাজগুলি করার জন্য সমস্ত শক্তি ঢেলে দিন।
– শ্রেণি সংগ্রামকে তীব্র করুন, প্রতিরোধ ও প্রতিরক্ষার উপকরণগুলি মজবুত করুন, ট্রেড ইউনিয়ন – যুদ্ধ ও কমিউনিজম স্কুল – কারখানায় শ্রমিকদের সংগ্রাম, সর্বোচ্চ শোষণের ক্ষেত্রগুলিতে সংগ্রাম বাড়িয়ে তুলুন, অ্যামাজন, রাইডারস, কল সেন্টারের মতো মজুরি দাসত্বের নতুন ক্ষত্রগুলিতে মনোযোগ দিন।
– মোদি সরকারকে উচ্ছেদ করার জন্য ভারতের কৃষক জনতাকে শক্তিশালী করুন ও তাদের সমর্থন করুন। যাতে দুনিয়ার সব নিপীড়িত দেশের কৃষকরা উৎসাহিত হয়।
– বিপ্লবী সর্বহারা নারীবাদী আন্দোলন গড়ে তুলুন।
– বিভিন্ন ধারার আন্দোলনকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টা করুন, ফ্যাসিবাদ বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী, মুৎসুদ্দি বুর্জোয়া বিরোধী, সামন্ততন্ত্র বিরোধী সর্বহারা, কৃষক, ছাত্র, পরিযায়ী শ্রমিক ও নিপীড়িত ও গরিব মানুষের ফ্রন্ট গড়ে তুলে বড়ো আকারের যুক্তফ্রন্ট গড়ে তুলুন।
– ফ্যাসিবাদ ও বর্ণবাদের বিরুদ্ধে জঙ্গি সংগ্রাম তীব্র করুন।
– যুব সমাজের বিদ্রোহকে অগ্রগামী, বিপ্লবী সংগঠনে সংগঠিত করুন।
– সাম্রাজ্যবাদ ও প্রতিক্রিয়াশীলদের জেলে আটক রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তির জন্য লড়াই করুন।
– সাম্রাজ্যবাদী শক্তি দ্বারা নিপীড়িত দেশগুলিতে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে নতুন করে প্রাণ সঞ্চার করুন। বিদেশি সেনাদের দেশ থেকে তাড়ান, তাদের দালাল প্রতিক্রিয়াশীলদের বিরুদ্ধে লড়াই তীব্র করুন।
বিপ্লবী আন্দোলনকে কঠিন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে এবং এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের এই অনুকূল অবস্থাকে ব্যবহার করা উচিত।
এই অনুকূল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে বিপ্লবী আন্দোলনের কঠিন অবস্থাকে আমাদের পেরিয়ে যেতে হবে।
এই বিপুল গণ কার্যকলাপের জন্য প্রয়োজন কমিউনিস্টদের নেতৃত্ব, আজকের কমিউনিস্ট অর্থাৎ মার্কসবাদী-লেনিনবাদী-মাওবাদী। তারা শ্রেণি সংগ্রামের আগুনে পুড়ে, জনগণের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রেখে, নীচের থেকে শুরু করে ওপর থেকে পার্টি গঠন করবেন। যারা লক্ষ্য হবে দেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী সমাজতান্ত্রিক বা নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লবের পথে এগিয়ে চলা।
এই পার্টিই সর্বহারার অগ্রগামী বাহিনীকে সংগঠিত করবে। তারা মার্কসের বিপ্লবী তত্ত্বে শিক্ষিত হবে, লেনিনের শি৭আয় দৃঢ় হবে এবং মাওয়ের কথা মতো জনগণের সেবা করবে।
পার্টির সমালোচনা ও আত্মসমালোচনা করার দক্ষতা থাকবে, তার নিজের দেশের সর্বহারার এবং আন্তর্জাতিক কমিউনিস্ট আন্দোলনের জয়-পরাজয়ের নিখুঁত বিশ্লেষণ করার দক্ষতা থাকবে।
পার্টি সংশোধনবাদ, সুবিধাবাদ, অর্থনীতিবাদ, সংসদীয়বাদ, শান্তির তত্ত্ব থেকে মুক্ত থাকবে, কিন্তু তা সংকীর্ণতাবাদের খপ্পড়ে পড়বে না, গোঁড়ামিবাদী ভুল থেকে পশ্চাদগামী পেটি বুর্জোয়া চরমপন্থারও শিকার হবে না।
শ্রেণি ও জনগণ না থাকলে, পার্টিও থাকে না, বিপ্লবও থাকে না, আন্তর্জাতিকতাবাদও থাকে না।
এই পার্টিগুলিই জনযুদ্ধের বিকাশ ঘটাতে পারবে। ভারতীয় উপমহাদেশের মতো যে সব জায়গায় সংগ্রাম চলছে, সেই সব অঞ্চলে শ্রেণি যুদ্ধ, বিপ্লবী যুদ্ধ ও দীর্ঘস্থায়ী জনযুদ্ধের উজ্জ্বল আঁকাবাঁকা পথ পেরিয়ে অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ক্ষমতা দখলের পথে জনগণ এগিয়ে চলেছেন।
যে সব পার্টি ও সংগঠন ঐকান্তিক ভাবে ও দৃঢ় চিত্তে এই পথে এগিয়ে চলেছে, তাদের আজ ঐক্যবদ্ধ হতেই হবে, অভিজ্ঞতার আদানপ্রদান করতে হবে, সর্বহারার সংগ্রাম, নিপীড়িত মানুষের সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মুক্তি সংগ্রামগুলিতে যুক্ত হয়ে সেগুলিকে একসূত্রে বাঁধার প্রয়াস করতে হবে।
আন্তর্জাতিক শাসক শ্রেণি ও তাদের দালালদের পুঁজিবাদী শোষণের বিরুদ্ধে শ্রমিকদের একসঙ্গে লড়তে হবে। কারণ তাদের জাতিসত্তা, ধর্ম, রাজনৈতিক মত, লিঙ্গ, বর্ণ যাই হোক না কেন, তারা একই শ্রেণির অংশ।
সর্বহারার আন্তর্জাতিকতাবাদ আজ মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদের ভিত্তিতে তৈরি সকল পার্টি ও সংগঠনের একটি আন্তর্জাতিক ঐক্যবদ্ধ সম্মেলনের আহ্বান জানাচ্ছে। এটি হবে দ্বিতীয় পদক্ষেপ। প্রথম পদক্ষেপটি যথেষ্ট গৌরবময় হলেও তা ভেঙে যায় অ্যাভাকিয়ানের নয়া সমন্বয় ও প্রচণ্ড ‘পথ’-এর জন্য। নতুন কমিউনিস্ট আন্তর্জাতিকের জন্য বিপ্লবী আন্তর্জাতিক আন্দোলনকে ১০০ পা এগোতে হবে।
আমরা দৃঢ় ভাবে বলছি, সমস্ত রকমের সাম্রাজ্যবাদী ও প্রতিক্রিয়াশীলদের শেষ অবধি পতন হবেই এবং দুনিয়া জুড়ে সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদের জয়ের পথে এগিয়ে বিশ্বের নিপীড়িত জনগণ নয়া গণতান্ত্রিক বিপ্লব ও সর্বহারার বিপ্লবে বিজয় অর্জন করবেই।
প্যারি কমিউন জিন্দাবাদ!
আসুন সর্বহারার ৭মতা দখলের লক্ষ্যে সঠিক অস্ত্র প্রয়োগ করে আমরা খোলাখুলি সংগ্রাম করি।
মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওবাদ জিন্দাবাদ!
সর্বহারা আন্তর্জাতিকতাবাদ জিন্দবাদ!
পুঁজিবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও সমস্ত রকম প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি নিপাত যাক!
আমাদের শৃঙ্খল ছাড়া হারানোর কিছু নেই, জয় করার জন্য আছে গোটা বিশ্ব!
কমিটি ফর বিল্ডিং দ্য মাওইস্ট কমিউনিস্ট পার্টি, গালিসিয়া, স্প্যানিশ স্টেট
কমিউনিস্ট নিউক্লিয়াস, নেপাল
কমিউনিস্ট (মাওইস্ট) পার্টি অফ আফগানিস্থান
কমিউনিস্ট পার্টি অফ নেপাল( রেভলুশনারি মাওইস্ট)
কমিউনিস্ট ওয়ার্কার ইউনিয়ন(এম এল এম) – কলোম্বিয়া
এল কাদেহিনস পার্টি – তিউনিসিয়া
মাওইস্ট কমিউনিস্ট পার্টি – ইটালি