পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ‘রাষ্ট্রীয় সংস্থাগুলির উপর আঘাত’, ‘ঘৃণা ছড়ানোর অপরাধ’ এবং ‘সন্ত্রাসবাদকে মহিমান্বিত করার’ অভিযোগে বছর দুয়েক আগে স্পেনের কমিউনিস্ট র্যাপ গায়ক পাবলো হাসেলের ৯ মাসের কারদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল স্পেনের আদালত। এ বছর সেই সাজা কার্যকর হওয়ার কথা। সেই মতো গত ১৬ ফেব্রুয়ারি, কাতালোনিয়ার লেলিডা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশি অভিযান হয়। পড়ুয়াদের প্রবল বাধার মোকাবিলা করে পাবলোকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
তিনি ইটিএ এবং টেরা লিয়্যুরের মতো সশস্ত্র সংগঠনের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে গানের কথা লেখায় এই গ্রেফতারি।
গ্রেফতারের সন্ধ্যা থেকেই সাধারণ মানুষ এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ এবং সমাবেশ শুরু করে প্রধানত কাতালোনিয়া এবং ভ্যালেন্সিয়াতে। ১৭-১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে মাদ্রিদ, গুয়াদালজারা, জারাগোজা, বার্গোস, গ্রানাডা, সেভিলা এবং আরও অনেক শহরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে। বিক্ষোভকারীদের মিছিল আটকাতে পুলিশ শহরের রাস্তা বন্ধ করে লাঠিচার্জ করে। দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় পুলিশ এবং বিক্ষোভকারীদের মধ্যে। লেলিডায়, বিক্ষোভকারীরা পন্টেন্ট কারাগার পর্যন্ত মিছিল করে।সেখানে হাসলকে বন্দি রাখা হয়েছে। বন্দিরা জেলের জানালা দিয়ে স্লোগান দেয়: “মত প্রকাশের স্বাধীনতা”, “ধনী ব্যক্তিরা এখানে কখনই আসে না, দরিদ্ররা কখনওই (জেল থেকে] বের হয় না”। ১৯ ফেব্রুয়ারি, কাতালান ছাত্র ইউনিয়ন এসইপিসি ছাত্র ধর্মঘট ও বিক্ষোভ প্রদর্শনের ডাক দেয়। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে একজন বলেছিলেন: “যারা জঙ্গি আন্দোলনের বিরোধিতা করছেন, তাদের যুবক ও শ্রমিকশ্রেণির সম্মান ও নিরাপদ ভবিষ্যতের বিষয়ে মনোনিবেশ করা উচিত”। এই ক্ষোভ কেবল হাসলের গ্রেফতারির জন্য নয়, যদিও এই ঘটনা থেকেই আন্দোলনের সূত্রপাত। যা থামার লক্ষণ নেই।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, স্পেনে নিও নাৎসি এবং ডানপন্থীদের বিক্ষোভ প্রদর্শনের অনুমতি দেওয়া হয়, অন্যদিকে প্রতিবার ফ্যাসিবাদবিরোধী যুবকরা রাস্তায় নামলে দাঙ্গা পুলিশ মোতায়েন এবং ব্যাপক রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চালানো হয়। এর ফলে স্পেনের শাসক শ্রেণির নিরপেক্ষতার মুখোশ খসে গেছে। তার হিংস্র দাঁত-নখের বিরুদ্ধে এখন সে দেশের জনগণ লড়ছে।
১৭ তারিখ থেকে একটানা বিক্ষোভে উত্তাল স্পেনে। ক্রমশ বেড়ে চলেছে বিক্ষোভকারী এবং মিছিলের সংখ্যা। শুধু ২০ তারিখেই স্পেনের শহরগুলিতে ১১০ টিরও বেশি মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ হয়। বাক স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রীয় দমনের বিরুদ্ধে এই বিক্ষোভের আঁচে এখন তপ্ত স্পেনের জনগণ।