পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি জোভেনেল মোয়েসের অপসারণ এবং তার জাতীয় প্রাসাদ ত্যাগ করার দাবিতে ১ ও ২ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী ধর্মঘট পালন করল বেশ কিছু ট্রেড ইউনিয়ন ও সংগঠন। ধর্মঘটীদের মধ্যে ছিল ন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ হাইতিয়ান ওয়ার্কারস, ইউনাইটেড মুভমেন্ট অফ হাইতিয়ান ওয়ার্কার্স (এমইউটিএইচ), মানবাধিকার রক্ষাকারী আইনজীবী সংঘ এবং দুর্নীতি দমন ইউনিয়ন ব্রিগেড (বিএসএসি)। প্রশাসন বিক্ষোভকারীদের দমন করতে রাজধানী এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলিতে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করে। হাইতিয়ান জাতীয় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের হটাতে টিয়ার গ্যাস ও জল কামান ব্যবহার করে।
৩১ জানুয়ারী থেকেই হাইতির জনগণ মোয়েসের পদত্যাগের দাবিতে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের পাশাপাশি পেটিট-গোয়েভ, মিরেবালাইস, ভেরেটিস এবং সেন্ট-মার্কের মত বেশ কয়েকটি বড়ো বড়ো শহরে জ্বলন্ত টায়ার ও পাথর দিয়ে দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও মহাসড়কগুলি অবরোধ করে।
১০ জানুয়ারি থেকেই হাইতির হাজার হাজার নাগরিক, শিক্ষার্থী, শ্রমিক, বিভিন্ন সামাজিক আন্দোলনের সদস্য এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যরা মোয়েসের ঘোষিত এপ্রিলে সাংবিধানিক গণভোট এবং সেপ্টেম্বরে সংসদ ও নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পঞ্জির বিরুদ্ধে নিজেদের সংগঠিত করে চলেছে।
হাইতির মানুষের দাবি, সাংবিধানিক ভাবে মোয়েসের মেয়াদ শেষ ৭ ফেব্রুয়ারি, কিন্তু মোয়েসের তরফ থেকে রাষ্ট্রপতি পদ ছাড়ার কোনও লক্ষণ নেই। বরং তার দাবি যে তিনি ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে পাঁচ বছরের মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন, সুতরাং তিনি ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রজাতন্ত্রের নেতৃত্ব বজায় রাখবেন।
২০১৭ সালের শেষের দিকে থেকে শাসক বিরোধী বিক্ষোভে বারবার পথে নেমেছে হাইতির জনগণ। দেশের নাগরিকরা খাদ্য, জ্বালানির চরম ঘাটতি এবং সরকারের ব্যাপক দুর্নীতির পাশাপাশি, সাম্প্রতিক অপহরণ বৃদ্ধি এবং অপরাধী দলগুলির দৌড়াত্ম্যে জেরবার। স্থানীয় মিডিয়া নেটওয়ার্কগুলির মতে, ২০২০ সালের মাঝামাঝি থেকে এখনও পর্যন্ত হাইতিতে এক হাজারেরও বেশি অপহরণের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। স্কুল শিক্ষার্থীরা তাদের প্রধান লক্ষ্য ফলে রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্কুল অস্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। হাইতিতে ক্রমবর্ধমান নিরাপত্তাহীনতা থেকে বাঁচতে প্রতিবেশী দেশ ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রে পালিয়ে যাচ্ছে বহু পরিবার।