পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি জোভেনেল মোয়েসের ক্ষমতার অপব্যাবহারের বিরুদ্ধে হাইতির জনগণের ব্যাপক বিক্ষোভ গোটা দেশ জুড়ে। তার অপসারণের দাবিতে রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স, ক্যাপ-হাইতিয়েন, জ্যাকমেল, সেন্ট-মার্ক এবং গোনাইভের মত বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ বিরোধীদের সমর্থনে রাজপথে নামে, বিক্ষোভকারীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে পুলিশের সাথে।
২০১০ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প এবং ২০১৬ সালের হারিকেন ম্যাথুর ক্ষতির থেকে এখনও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে দেশটি। বেড়েছে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক দুর্দশা। বেড়েছে গণধর্ষণ, দলীয় গুন্ডামি; অস্বাভাবিক মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্য ও জ্বালানি প্রায় দুর্লভ হয়ে উঠেছে। জনসংখ্যার ৬০%-র দিনে আয় ২ ডলারেরও কম।
এই ১.১ কোটির জনসংখ্যার দেশটিতে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেয়ে ক্ষমতায় এসেছিলেন মোয়েস। তবে সেবার ভোট দিয়েছিলেন জনসংখ্যার মাত্র ২১ শতাংশ। রাষ্ট্রপতি পদ পাওয়ার পর থেকেই তার পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন সময়ে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে হাইতিতে। তবে ২০১৭ সালের শেষের দিকে থেকে উত্তাল হতে শুরু করেছে তা। উন্নত জীবনযাত্রার দাবি এবং অপরাধ, দুর্নীতির অভিযোগ ও সরকার জ্বালানি ভর্তুকি বন্ধ করার পরে দাম বৃদ্ধির বিরোধী বিক্ষোভে বারবার পথে নেমেছে হাইতির জনগণ।
বিরোধীদের দাবি, মোয়েসের পাঁচ বছরের আইনি মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। সেই হিসেবে অক্টোবর ২০১৯- এ নির্ধারিত ছিল সংসদ নির্বাচন। কিন্তু দেশ জুড়ে ব্যাপক বিক্ষোভের কারণে অনির্দিষ্টকালীন পিছিয়ে দেওয়া হয় তা। বিক্ষোভের জেরে দেশের বেশিরভাগটাই পঙ্গু হয়ে গিয়েছিল। প্রশাসন বাধ্য হয় স্কুল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বেশ কয়েকটি সরকারি দফতর সপ্তাহ খানেকের জন্য বন্ধ রাখতে। ফলে বহু বিলম্বিত নির্বাচন দ্রুত সম্পন্ন করে নতুন সরকার এবং নয়া অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ব্যবস্থা স্থাপনের দাবি মোয়েসের বিরোধীপক্ষের।
আন্তর্জাতিক মহলেও নিন্দা উঠেছে মোয়েসের স্বৈরাচার নিয়ে। মোয়েস এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ভেনিজুয়েলার তেল সরবরাহ বিষয় জালিয়াতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে বিশেষ ক্ষমতাপ্রাপ্ত আদালতের তরফ থেকে।
সম্প্রতি নতুন বছরের একটি টুইট বার্তায় ময়েস ২০২১ সাল কে ”দেশের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বছর ” বলে অভিহিত করেন মোয়েস। তিনি এপ্রিলে একটি সাংবিধানিক গণভোটের আহ্বান, তারপরে সেপ্টেম্বরে সংসদ ও নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পঞ্জি ঘোষণা করেন।
সাংবিধানিক গণভোটের মাধ্যমে ১৯৮৭ সালের নথিতে পরিবর্তনের পাশাপাশি বর্তমান সেনেট এবং চেম্বার অব ডেপুটিগুলির প্রতিস্থাপনের জন্য একটি একক সংসদীয় সংসদ তৈরি করা, সংসদীয় মেয়াদ বাড়ানো এবং বিদেশে বসবাসকারী হাইতিয়ানদের আরও ক্ষমতা প্রদানের মতো প্রস্তাব রয়েছে।
এই গণভোটের প্রস্তাব ও মোয়েসের স্বৈরাচারি শাসনে খুশি নয় অধিকাংশ হাইতিয়ান। তাদের বক্তব্য, “আমাদের দেশের রাজনৈতিক সমস্যাগুলি দীর্ঘ দিনের,এর কোন সমাধান খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। … আমরা কষ্ট ভোগ করে চলেছি”।
আদানিদের পন্য সরবরাহ বন্টন বন্ধ করার চেষ্টা করতে হবে। তবে শুরুর এই চেষ্টা ভালো। ফ্যাসিস্ট রা পাল্টা আঘাত না করলে পেছোয় না,এটাই জনগনকে বোঝানোর চেস্টা চালাতে হবে।