পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ৮১ বছরের ভূপিন্দর সিং মান। পাকিস্তানের ফয়জলাবাদে জমিদার পরিবারে জন্ম। দেশভাগের পর ভারতে চলে আসেন। তিনি সারাজীবন কৃষকদের জন্য কাজ করেছেন বলে মনে করে শাসক শ্রেণি। সে জন্য ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রপতি মনোনীত রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। ভারতীয় কিষাণ ইউনিয়ন বা বিকেইউ-র জাতীয় প্রেসিডেন্ট তিনি। কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে সংগ্রামরত এআইকেসিসি-র মধ্যে রয়েছে। তবে গত ১৪ ডিসেম্বর কৃষকদের এক প্রতিনিধি দল কেন্দ্রীয় সরকারকে জানিয়ে আসে তারা নয়া কৃষি আইনের পক্ষে।
মঙ্গলবার কৃষি আইন নিয়ে পর্যালোচনার জন্য সুপ্রিম কোর্ট যে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে, তার অন্যতম সদস্য ছিলেন মান। কৃষকরা শীর্ষ আদালতের আইন স্থগিতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও, জানিয়ে দেয় কমিটির কাছে তারা প্রতিনিধি পাঠাবে না। কারণ কমিটির চার সদস্যই কৃষি আইনের পক্ষে।
বৃহস্পতিবার এই প্রেস বিবৃতি দিয়ে কমিটি থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন মান। তিনি বলেছেন, কৃষক ইউনিয়নগুলি এবং সাধারণ ভাবে জনসাধারণের অনুভূতি ও মনোভাব কৃষি আইনের বিরুদ্ধে। তাই তিনি একজন চাষি ও ইউনিয়ন নেতা হিসেবে যে কোনো পদ ছাড়তে রাজি। কারণ পঞ্জাব ও দেশের কৃষকদের স্বার্থ ক্ষুণ্ণ হয়, এমন কোনো কাজ তিনি করতে চান না।
মান ছাড়াও চার জনের কমিটিতে রয়েছেন মহারাষ্ট্রের শ্বেতকারি সংগঠনার প্রেসিডেন্ট অনিল ঘানওয়াত, ইন্টারন্যাশনমাল ফুড অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের দক্ষিণ এশিয়ার অধিকর্তা প্রমোদ কুমার জোশি এবং কৃষি অর্থনীতিবিদ অশোক গুলাটি।
সুপ্রিম কোর্টের তৈরি কমিটি ঘুর পথে কৃষি আইনে কর্পোরেটদের নিয়ন্ত্রণের সুযোগ করে দিচ্ছিল বলে মনে করছিলেন অনেকেই। মানের পদত্যাগের পর সেই চেষ্টায় একটা ধাক্কা লাগল বলে ধারণা তাদের। তবে মানের মতো ভারতের সামন্ত প্রভুদের প্রতিনিধিরা যে কর্পোরেটদের স্বার্থই দেখে, ভারতের শাসক শ্রেণির জোটে যে কর্পোরেটদের সঙ্গে তারা আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে, ভূপিন্দরের অবস্থান এবং কমিটিতে তার নির্বাচন তারই প্রমাণ। পাশাপাশি প্রমাণ হল, গণ আন্দোলন তীব্র করেই এই শাসক জোটে চিড় ধরানো যায়।