Home খবর নতুন শ্রম আইন কার্যকর করতে চেয়ে প্রতিবাদের মুখে এ রাজ্যে জুটমিল বন্ধ করল কর্তৃপক্ষ

নতুন শ্রম আইন কার্যকর করতে চেয়ে প্রতিবাদের মুখে এ রাজ্যে জুটমিল বন্ধ করল কর্তৃপক্ষ

নতুন শ্রম আইন কার্যকর করতে চেয়ে প্রতিবাদের মুখে এ রাজ্যে জুটমিল বন্ধ করল কর্তৃপক্ষ
1
শৌর্যদীপ্ত সেনগুপ্ত

কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নতুন শ্রম কোড বিল পাশ করেছে। এই বিল অনুযায়ী ৩০০ শ্রমিক থাকলেও বিনা অনুমতিতে ছাঁটাই বা কারখানা বন্ধ আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। শ্রমিক শ্রেণি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে ১২ ঘণ্টা কাজের জায়াগায় ৮ঘণ্টা কাজের দাবি আদায় করেছিল। খাতায় কলমে ৮ঘণ্টার কথা লেখা থাকলেও বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিকদের ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করা হতো, সেই বেআইনি বাধ্য করাকেও আইনসিদ্ধ করলো বিজেপি সরকার। অর্থাৎ শ্রমিকদের এবার আইনত ১০-১২ ঘণ্টা কাজ করতেই হবে।

ধীরে ধীরে এই আইন সকল জায়াগায় প্রয়োগ করা শুরু হয়েছে, যেমন পশ্চিমবঙ্গের কাঁকিনাড়া রিলায়েন্স জুট মিলে মালিক পক্ষ দ্বারা শ্রমিকদের চাপ দেওয়া হচ্ছিল কাজের সময় বাড়িয়ে বেশি উৎপাদন করার জন্য, যা মানতে নারাজ ছিল সেখানকার শ্রমিকরা, তাঁর মধ্যেই গত রবিবার মিল বন্ধের নোটিস দিয়ে চলে যায় কর্তৃপক্ষ। এড় বিরুদ্ধে যাতে শ্রমিকরা বিক্ষোভ না করতে পারে তাই সেখানে মোতায়েন করা হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী।

লকডাউনের মধ্যে মুকেশ আম্বানির মতো পুঁজিপতিরা প্রতি ঘণ্টায় ৯০ কোটি টাকা আয় করেছে, আর অন্য দিকে আমরা দেখেছি যাদের শোষণ করে এই টাকা পুঁজিপতিরা কামিয়েছে সেই শ্রমিকরা মাইলের পর মাইল হেঁটে বাড়ি ফিরেছে, দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে অনেকের। অনেকে হাঁটতে হাঁটত পথেই মারা গেছেন।

এই লকডাউনকে কাজে লাগিয়েই একের পর এক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বেসরকারিকরণ ও একের পর এক জনবিরোধী আইন পাশ করে গেছে বিজেপি সরকার। এর বিরুদ্ধে সারা দেশ জুড়েই ছলছে আন্দোলন প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ।

শ্রম কোড, কৃষি বিল, নয়া শিক্ষানীতিরই শুধু নয়, বিজেপির আনা প্রত্যেকটি আইনেরই বিরোধিতা করা উচিত। আজ বাংলায় প্রায় পঞ্চান্ন হাজার কল-কারখানা বন্ধ, প্রচুর কারখানা শেষ নিশ্বাস নিচ্ছে সেগুলিকে বন্ধ করে বড়ো বড়ো ফ্ল্যাট, শপিং মল তৈরি করার চক্রান্তও চলছে অনেক জায়াগাতেই।

অন্য দিকে বেঙ্গল কেমিকেলের মতো সরকারি সংস্থা যা সরকার দ্বারা অবহেলিত, তারা যখন নিজের চেষ্টায় ভালো করে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে সেই সময় এই সংস্থাকে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করেছে সরকার।

পুঁজিপতি ও মুনাফালোভীদের স্বার্থে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বেসরকারিকরণ ও কারখানা বন্ধ করার বিরুদ্ধে এক দীর্ঘ লড়াই আবশ্যিকভাবে প্রয়োজন হয়ে পরেছে। একের পর এক ছাঁটাই, শ্রমিক-কৃষকের আত্মহত্যা ঘটেই চলেছে ভারতে। তাঁর বিরুদ্ধে শুধু একটি মিছিল, মিটিং, প্রতিবাদ করে থেমে থাকলেই চলবে না করতে হবে প্রতিরোধ।

Share Now:

Comment(1)

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *