পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: ১৯৭৬ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত দুটি বড়ো বড়ো যুদ্ধ হয়েছে এই অঞ্চলে। পশ্চিম সাহারায়। মরোক্ক ও সাহারাউই পিপলস লিবারেশন আর্মির মধ্যে। শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপে শান্তিচুক্তি হয়। সেই থেকে পশ্চিম সাহারার ৮০ ভাগ অঞ্চলে মরোক্কর দখলদারি চলছে। বাকি ২০ ভাগে রয়েছে স্বাধীন রাষ্ট্র সাহারাউই আরব ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক। যারা মনে করে পশ্চিম সাহারার বাকি ৮০ ভাগ অঞ্চলে তাদের ন্যায্য অধিকার রয়েছে। গোটা দেশটি আগে স্পেনের দখলে ছথিল, তখন এর নাম ছিল স্প্যানিশ সাহারা। স্পেন, মরোক্ক ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ওই দেশে হামলা চালায় মরোক্ক। সে যুদ্ধ রাষ্ট্রপুঞ্জের হস্তক্ষেপে থমকে গিয়েছিল ১৯৯১ সালে। পাঁচদিন হল, শুরু হয়েছে পশ্চিম সাহারার তৃতীয় যুদ্ধ।
সাধারণ ভাবে মরুভূমি অঞ্চল হলেও স্বাধীন দেশটিতে রয়েছে মূল্যবান খনিজ ফসফেট। ওই অঞ্চলে তৈল খনি রয়েছে বলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা। এছাড়া রয়েছে সমুদ্র তীরবর্তী মাছ ধরার বিশাল এলাকা, যার বাণিজ্যিক মূল্য যথেষ্ট।
পশ্চিম সাহারার বহু উদ্বাস্তু পাশ্ববর্তী আলজিরিয়ায় থাকেন। সেখানে এসএডিআরের ‘দূরবর্তী বা নির্বাসিত সরকার’ সক্রিয়।
সম্প্রতি এই দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে মৌরিতানিয়া পর্যন্ত পণ্য আদানপ্রদানের পথ বানাচ্ছিল মরোক্ক। সেখানে বিক্ষোভ দেখায় এসএডিআরের জনগণ ও গণমুক্তি ফৌজের যোদ্ধারা। তারপরই মরোক্কর বাহিনীর ওপর বোমা ফেলা শুরু করে এসএডিআর। তাতে মরোক্কর বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। যুদ্ধের প্রয়োজনে গণমুক্তি ফৌজে প্রতিদিন যোগ দিচ্ছেন দলে দলে তরুণ। সেই দেখে গোটা পশ্চিম সাহারা পুনর্দখল করার দাবিতে দেশ জুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। দেশের প্রেসিডেন্ট ও গণমুক্তি ফৌজের কমান্ডার ইন চিফ ব্রাহমিন গালি রাষ্ট্রপুঞ্জের কাছে আবেদন জানিয়েছেন হস্তক্ষেপের জন্য। তাঁর দাবি, তাঁদের দেশের মধ্যে দিয়ে পথ বানিয়ে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে মরোক্ক।
সাহারা অঞ্চলের লিবিয়ায় জাতীয়তাবাদি গৃহযুদ্ধ চলছে। মালিতে ফরাসি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী যুদ্ধে চালাচ্ছে ইসলামি জিহাদিরা। এ সবের মধ্যেই এই নতুন যুদ্ধে গোটা এলাকা গুরুতর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ওই অঞ্চলে বিভিন্ন প্রগতিশীল ও বিপ্লবী শক্তি সাহারাউই গণমুক্তি ফৌজকে সমর্থন করে আসছে বহুদিন ধরে। সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা নিয়েই ১৯৭৩ সালে তৈরি্ হয়েছিল এই বাহিনী। তারপর তাদের মতাদর্শ ও রাজনীতিতে বেশ কিছু পরিবর্তন হলেও, তাদের লড়াইকে ন্যায্য লড়াই বলেই মনে করেন প্রগতিশীলরা।