অনেকেই আজ অক্টোবর বিপ্লব ভুলে গেছে এবং প্রশাসন এই বিষয় নীরব। সরকারি ইতিহাস বিষয়টি এইভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করে যে বিপ্লবটি ছিল ইতিহাসের এক এলোমেলো দুর্ঘটনা, পরে ধীরে ধীরে “স্বাভাবিক” অবস্থা ফিরে আসে।
এটা কোন কাকতালীয় ঘটনা নয়। বুর্জোয়াদের মেরুদণ্ডে এখনও বিপ্লবের আশঙ্কায় শিহরণ হয়, তাদের ভয় সৈন্য এবং নাবিকরা এসে বিলাসবহুল প্রাসাদগুলি দখল করে সম্পত্তি কেড়ে নেবে। সুতরাং, তারা ভান করে যে কোনো বিপ্লব ঘটেনি, লক্ষ্যগুলি অর্জন করতে ব্যর্থ একটি ধ্বংসলীলা ঘটেছিলো এবং সেখানে সমাজতন্ত্রের বদলে স্বৈরাচার কায়েম হয়। অক্টোবর বিপ্লব সম্পর্কে ‘বিজ্ঞানীদের’ রচিত সমস্ত বোকা দাবি বিশ্লেষণ করাই যায়, তবে আমরা এখন তা করব না।
অক্টোবর বিপ্লবের অর্থ হ’ল প্রথমবারের মতো জনগণ ক্ষমতা দখল করে কয়েক দশক তা ধরে রাখতে সক্ষম হয়ে, বুর্জোয়া শ্রেণির চেয়ে উন্নত এবং প্রগতিশীল একটি নতুন সমাজ গড়ে তোলে। সোভিয়েত রাশিয়া এবং ইউএসএসআর একটি উদাহরণ হিসেবে সারা বিশ্ব জুড়ে সাধারণ মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছিল এবং অক্টোবর বিপ্লবের পর চিন, পূর্ব ইউরোপে বিপ্লব সফল হয় এবং বিশ্বজুড়ে বিপ্লবী গণ আন্দোলনের উত্থান ঘটে। এই সত্যটি সম্পর্কে চুপ করে থাকা সম্ভব নয়। লাল অক্টোবরের স্মৃতি আমাদের সবচেয়ে অন্ধকার সময়ে বাঁচাবে এবং অনুপ্রেরণা জোগাবে।
আজ পুঁজিবাদ তীব্র লড়াইয়ের পরে সমাজতন্ত্র এবং কমিউনিস্ট আন্দোলনকে চূর্ণ করতে সক্ষম হয়েছে। কেবল বিভিন্ন প্রতিরোধের কেন্দ্রবিন্দু যেমন ভারত এবং ফিলিপাইনস এবং অন্যান্য দেশে মাওবাদী আন্দোলন চলছে। এখনও শ্রমিক শ্রেণি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের দ্বারা কর্মক্ষেত্রে পরিস্থিতি বদল করতে, গণতান্ত্রিক অধিকারের পক্ষে, বর্ণবাদ এবং সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে এবং সকল প্রকার প্রতিক্রিয়ারশীলতার বিরুদ্ধে লড়াই করে চলেছে। এই লড়াইগুলি পৃথক, আলগা ভাবে যুক্ত, কখনও কখনও একে অপরের বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। সময় আসবে যখন সব এক হয়ে তারা আবার শক্তিশালী হয়ে উঠবে। রাস্তায় আবার উদযাপিত হবে উল্লাস।
বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।