পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: পুলিশি সন্ত্রাস অবসানের দাবিতে উত্তাল নাইজেরিয়া। বিশেষ ডাকাতবিরোধী স্কোয়াড (এসএআরএস)নিষিদ্ধকরণের দাবিতে গত মাস থেকে #এন্ডসার্স আন্দোলনে ব্যাপক বিক্ষোভ গোটা নাইজেরিয়া জুড়ে।
৩য় অক্টোবর উঘেলিতে এক তরুণকে গুলি করে হত্যা করে এসএআরএস, রাস্তার পাশে তাকে মৃত অবস্থায় ফেলে তার জিপে নিয়ে চলে যায় তারা। এই ঘটনার ভিডিও ছড়াতেই উত্তাল হয়ে ওঠে নাইজেরিয়া।
অপহরণ এবং সশস্ত্র ডাকাতি সহ উচ্চ স্তরের অপরাধ মোকাবিলা করতে ১৯৮৪ সালে তৈরি হয় এই বিশেষ স্কোয়াড, কয়েক দশক ধরে এই বিশেষ বাহিনীর অফিসাররা সাদা পোশাকে তোলাবাজি, খুন,অত্যাচার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং ধর্ষণের ঘটনায় কুখ্যাত হয়ে উঠেছে। প্রধানত শিক্ষার্থী এবং যুব সম্প্রদায়কে তাদের চুলের ছাঁট বা জামাকাপড়ের জন্যে শিকার হতে হয়েছে এই গুপ্ত বাহিনীর। ফলে জমে থাকা ক্ষোভ দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করেছে এই বিক্ষোভকে।
ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে নাইজেরিয় সরকার বাধ্য হয়ে ১১ অক্টোবর এসএআরএস নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, কিন্তু পুলিশি সন্ত্রাস এবং দুর্নীতির অবসান দাবিতে আন্দোলন চলতে থাকে। ১৯ তারিখ লাগোস রাজ্য সরকার ২৪ ঘন্টা কারফিউ ঘোষণা করে, ২০ তারিখ মোতায়েন করা হয় সৈন্য বাহিনী। সন্ধ্যে বেলা লেকি টোল-গেটের কাছে সিসিটিভি ক্যামেরা এবং লাইট বন্ধ করে বিক্ষোভকারীদের উপরে গুলি চালায় সেনা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় ১৫ জন এবং আহত হয় শতাধিক। এরপরেই জঙ্গি রূপ ধারণ করে #এন্ডসার্স আন্দোলন। ১৯শে অক্টোবর দক্ষিণ নাইজেরিয়ার বেনিন শহরে বিক্ষোভকারীরা জেল ভেঙে প্রায় ২০০ বন্দিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করে। বিক্ষোভকারীরা দেশের অন্যান্য অঞ্চলে থানা এবং পুলিশ ট্রাকে আক্রমণ করতে নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ এবং সেনা। এখনও অবধি মারা গিয়েছে ৭৩ জন। নাইজেরিয়া জুড়ে প্রায় ২০৫ টি থানা পুড়িয়ে দিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। গ্রেফতার করা হয়েছে হাজারেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে।
তবে একগুচ্ছ দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে নাইজেরিয় জনগণ। নয়া-ঔপনিবেশিক অর্থনীতির সঙ্কটে জেরবার নাইজেরিয়ার যুবসমাজের ক্ষোভ, হতাশা ও অসন্তুষ্টির বহিঃপ্রকাশ এই জঙ্গি আন্দোলন।