Home খবর ভারতে করোনা ঠেকাতে ভ্যাকসিনের হয়তো প্রয়োজন হবে না, জল গড়াচ্ছে সেদিকেই

ভারতে করোনা ঠেকাতে ভ্যাকসিনের হয়তো প্রয়োজন হবে না, জল গড়াচ্ছে সেদিকেই

ভারতে করোনা ঠেকাতে ভ্যাকসিনের হয়তো প্রয়োজন হবে না, জল গড়াচ্ছে সেদিকেই
1

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: কলকাতার ২৬% মানুষের মধ্যে কোভিডের বিরুদ্ধে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় সবচেয়ে এগিয়ে বড়োবাজার(৪৭%), আহিরিটোলা-শোভাবাজার(৪৬%), বেহালা(৪২%) ও কাঁকুড়গাছি(৩৮%)। গোটা পশ্চিমবঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়েছে ২৩ শতাংশ মানুষের মধ্যে। থাইরোকেয়ার সংস্থার সাম্প্রতিক অ্যান্টিবডি সূচক সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। সাধারণত জনসংখ্যার ৫০-৬০%-র মধ্যে কোনো ভাইরাসের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়ে গেলে, মনে করা হয় গোটা জনগোষ্ঠীর মধ্যে সংশ্লিষ্ট রোগের বিরুদ্ধে গোষ্ঠী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গিয়েছে। যাদের মধ্যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে গিয়েছে, তারাই অন্যদের মধ্যে রোগের সংক্রমণ হওয়ার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করেন।

থাইরোকেয়ার সংস্থা ৯০০০-এর বেশি কলকাতাবাসী ও ২২,০০০-এর বেশি রাজ্যবাসীর শরীরে অ্যান্টিবডি টেস্ট করেছে। কর্পোরেট সংস্থার কর্মচারী, আবাসনের বাসিন্দা ও পথচলতি মানুষের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে। যাদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, ধরে নিতে হবে তারা রক্তপরীক্ষার আগে কোনো এক সময় কোভিড সংক্রমিত হয়েছিলেন।

বেলভিউ ক্লিনিকের মেডিসিনের চিকিৎসক রাহুল জৈন বলেন, এই তথ্য খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। কারণ এর থেকে বোঝা য়াচ্ছে আমরা গোষ্ঠী প্রতিরোধ ক্ষমতার দিকে নিশ্চিত ভাবে এগিয়ে যাচ্ছি। তাছাড়া ইতিমধ্যেই দেখা গেছে ভারতের অধিকাংশ কোভিড আক্রান্তেরই উপসর্গ অত্যন্ত মৃদু এবং এ দেশে কোভিডের মৃত্যুহার নিতান্তই কম।

থাইরোকেয়ার সংস্থার প্রধান ভেলুমনি বলেন, ভারতের অ্যান্টিবডি সূচক ২৭%, অর্থাৎ দেশের প্রায় ৩০ শতাংশ মানুষ ইতিমধ্যেই কোভিডে সংক্রমিত হয়ে গেছেন। তাতে এখনও পর্যন্ত ৮০হাজার মানুষ মারা গেছেন। এর থেকে বোঝা যাচ্ছে ২০২১ সালের মার্চের মধ্যে জনসংখ্যার ৯০% কোভিডে সংক্রমিত হয়ে যাবেন। তাতে প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ মারা যাবেন (মনে রাখা দরকার, ভারতে বছরে গড়ে ৯৬লক্ষ মানুষ নানা কারণে মারা যান)। তাই এ বছরের শেষে ভ্যাকসিন না বাজারে এলে ভারতে ভ্যাকসিনের কোনো প্রয়োজনই হবে না।

বস্তুত, ৯০% অনেক দূরের ব্যাপার। ৬০% মানুষের সংক্রমণ হয়ে গেলেই দেশে গোষ্ঠী প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়ে যাবে, তারপরই ভ্যাকসিনের প্রয়োজন হওয়ার কথা নয়। ডিসেম্বর-জানুয়ারির মধ্যেই সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েই দিয়েছে, ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণার এই মুহূর্তে যা গতিপ্রকৃতি, তাতে আগামী বছরের মাঝামাঝির আগে বাজারে সর্বসাধারণের জন্য ভ্যাকসিন নিয়ে আসা অসম্ভব। সেক্ষেত্রে, তার অনেক আগেই ভারতে ভ্যাকসিনের প্রয়োজন ফুরোবে।

এই পরিস্থিতি আঁচ করেই, নিয়ম মেনে ভ্যাকসিন তৈরি হওয়ার আগেই ডিসেম্বরে ভারতে ভ্যাকসিন বাজারজাত করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলি। ভারতের মতো বিশাল বাজারে প্রতিষেধক বেচতে না পারলে, গবেষণার খরচ দ্রুত তোলা মুশকিল তাদের পক্ষে। মানুষকে বোকা বানিয়ে আধসেদ্ধ ভ্যাকসিন দেওয়ার চেষ্টার পাশাপাশি টানা আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে, একবার সংক্রমণ হয়ে যাওয়ার পরও নতুন করে কোভিড সংক্রমণ হতে পারে, কোভিড ভাইরাস রূপ পালটে নতুন করে সংক্রমণ ঘটানো শুরু করতে পারে। বলা হচ্ছে সংক্রমিত হওয়ার পরে শরীরে যে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হচ্ছে, তার আয়ু বেশিদিন নয়। অথচ, এসব দাবির কোনোটিরই স্পষ্ট প্রমাণ এখনও মেলেনি। এই আতঙ্ক তৈরি করে রাখার পেছনে উদ্দেশ্য দুটো। প্রথমত, অতিমারি না থাকলেও বা কোভিডের সংক্রমণের গুরুত্ব মানুষের মন থেকে চলে গেলেও ভ্যাকসিনের বাজার বাঁচিয়ে রাখা এবং বৃহৎ ওষুধ সংস্থাগুলির শেয়ারের দর তুঙ্গে তুলে রাখা।

Share Now:

Comment(1)

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *