পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: শেষ চারে কোন কোন দল যাবে, তা নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ ধরে রাখার জন্য আইপিএলের লিগ পর্যায়ের ম্যাচগুলো বেশির ভাগেরই ফলাফল নির্দিষ্ট করা থাকে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন বাণিজ্যিক সংস্থার স্বার্থ এবং বিভিন্ন ক্রিকেটারের ব্র্যান্ড ভ্যালুর ওপর নির্ভর করে প্রতিযোগিতার জয়ী-পরাজিত নির্ধারিত হয়। পাশাপাশি দেখতে হয়, কোনো দলের সমর্থকরাই যেন একেবারে হতাশ না হয়ে পড়ে। আইপিএল আসলে ক্রিকেট নয়, একটা বিনোদন বা ক্রিকেট প্রদর্শনী, যা কেবল ভারতে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা করার জন্যই তৈরি করা হয়েছে। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ বহুদিনের। এ বছর যেন এ সম্পর্কে আর কোনো সন্দেহের অবকাশই আর থাকল না।
ক্রিকেটে ম্যাচ গড়াপেটার অভিযোগ বহুদিনের। ক্রিকেট জুয়াড়িরাই সেই গড়াপেটা করিয়ে থাকেন। বলাই বাহুল্য, ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের ক্ষমতা হাতে থাকলে, জুয়া থেকে অনেক বেশি লাভ করা সম্ভব। গত কয়েক বছরে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অনলাইন গেমিং। ভারতে অনলাইন গেমিং আসার পর স্বাভাবিক ভাবেই তাতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে ক্রিকেট। আইপিএলের সময় এই ব্যবসা তুঙ্গে ওঠে। আগ্রহীকে অ্যাপ ডাউনলোড করতে হয়, তারপর বিভিন্ন ম্যাচের আগে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দলের থেকে খেলোয়াড় বেছে নিজেদের দল বানাতে হয়। ওই ম্যাচে ওই সব খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্সের ওপর ওই ব্যবহারকারীর পয়েন্ট নির্ভর করে। বলাই বাহুল্য, নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দিতে হয়। তারা টাকা ফেরত পান পয়েন্ট হিসেবে। এটাও একরকম জুয়া, এই দাবিতে অনলাইন গেমিং বন্ধের দাবিতে চণ্ডীগড় হাইকোর্টে মামলাও হয়েছে, যদিও আদালত অনলাইন গেমিং-কে জুয়া বলে মানতে রাজি হয়নি। তাদের মতে, জুয়াতে অংশগ্রহণকারীর কোনো দক্ষতা লাগে না। অনলাইন গেমে খেলোয়াড় বাছার ক্ষেত্রে তা লাগে। জুয়া না হোক, অংশগ্রহণকারীদের বাছাই এবং জমা পড়া টাকার অঙ্ক অনুযায়ী ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের একটা গোপন খেলা যে চলে, তা বোঝেন অনেকেই। কিন্তু প্রমাণ করার উপায় নেই। এ বছর সেই সম্ভাবনা আরও বেশি।
কারণ, চিন বিতর্কে ভিভো আইপিএলের টাইটেল স্পনসরশিপ থেকে সরে দাঁড়ানোয় আইপিএল২০২০-র টাইটেল স্পনসর হয়েছে ড্রিম ইলেভেন। এটি একটি গেমিং অ্যাপ। ভারতের গেমিং অ্যাপের বাজারের প্রায় ৯০ শতাংশই এদের দখলে। আইপিএলের ৬টি ফ্যাঞ্চাইজির সঙ্গেও এরা কোনো না কোনো ভাবে জড়িয়ে আছে। গত কয়েক বছর ধরে এরা আইপিএলের স্পনসরদের মধ্যেও রয়েছে। তবে টাইটেল স্পনসর হল এই প্রথম। বলাই বাহুল্য নিজেদের মর্জিমতো ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণের সুযোগ তাদের এবার আরও বেশি।
এই গেমিং অ্যাপগুলির অ্যাম্বাসাডররা সকলেই বড়ো বড়ো ক্রিকেটার। ড্রিম ইলেভেনের অ্যাম্বাসাডর ধোনি, মাই ইলেভেন সার্কেলের সৌরভ গাঙ্গুলি, মাই টিম ইলেভেনের বীরেন্দ্র শেওয়াগ এবং মোবাইল প্রিমিয়ার লিগের বিরাট কোহলি। ভারতে এরকম প্রায় ১৭০টি গেমিং অ্যাপ কাজ করছে।
অনলাইন গেমিং নিষিদ্ধ করার জন্য রবিবার দেশজুড়ে সরব হয়ে ওঠেন ট্যুইটার ব্যবহারকারীরা। ট্রেন্ডিং ছিল #BanOnlineGambling।
#BanOnlineGambling you are successful because of your fans… please don't spoil their lives by misleading ads. @imVkohli @msdhoni @SGanguly99 @KicchaSudeep @prakashraaj @DanishSait @RanaDaggubati @MsKajalAggarwal @iamRashmika @IPL @SharadaDiamond pic.twitter.com/7Lc3v1yqht
— Pavan Patil (@pavan1f) August 23, 2020
Offshore betting companies are apparently using ‘loophole’ in our law to lure Indians to bet on pretty much everything. Our young generation spending lot of their times in this gambling and loosing everything #BanOnlineGambling @narendramodi @PMOIndia
— Ajith Shetty Herenje (@Ajithshettyher1) August 23, 2020
Gambling has destroyed lakhs of lives & families
No one has become rich by gambling but lakhs have lost everything due to this
To build a morally stable society, getting rid of this evil is necessary
I request Govt to ban online gambling#BanOnlineGambling
— Mahesh Vikram Hegde (@mvmeet) August 23, 2020
just open your eyes celbraties….just think for your self? …what you doing for your fans????????#BanOnlineGambling @KicchaSudeep @CMofKarnataka @SharadaDiamond pic.twitter.com/kTOGJevC97
— kiran kumar (@kiranku83880022) August 23, 2020
অন্যদিকে ড্রিম ইলেভেনের বিরুদ্ধে ২৫০০ কোটি টাকা জিএসটি ফাঁকি দেওয়ার মামলা ঝুলছে সুপ্রিম কোর্টে। অনেকেই মনে করেন, ভারতে আইনে ফাঁক থাকার জন্যই অনলাইন গেমিং-এর নামে জুয়া চালাতে পারছে এই সব সংস্থাগুলো। অনলাইন জুয়ার প্রচার করার জন্য় ভারতীয় দলের অধিনায় বিরাট কোহলিকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে একটি আবেদনও হয়েছে মাদ্রাজ হাই কোর্টে। আদালত এই সংক্রান্ত আইন করার জন্য তামিলনাড়ু সরকারকে নির্দেশও দিয়েছে। ওড়িশা, অসম ও তেলেঙ্গনায় অনলাইন গেমিং নিষিদ্ধ।
.