
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: লকডাউন এবং আংশিক লকডাউনের জেরে গভীর সংকটে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ খেটে খাওয়া মানুষ। আর সেই শ্রমজীবী জনতার মধ্যেও প্রান্তিক অবস্থানে রয়েছেন মহিলারা। অন্যদের থেকে অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। কেন্দ্রীয় সরকার ব্যাপক মানুষের জন্য ১০০ দিনের কাজের কথা বললেও, বহু মহিলাই এখনও কাজ পাননি। বিনামূল্যে খাদ্যশস্য বণ্টনের কর্মসূচি চললেও, তা সব জায়গায় সমান ভাবে মিলছে না। বহু মহিলা খাদ্য নিরাপত্তার আওতা থেকে বঞ্চিত। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্রমাগত বেসরকারিকরণের ফলে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা ক্রমেই দুর্বল হয়েছে। কোভিড ১৯ সংক্রান্ত অসুস্থতা ছাড়া অন্য কোনো রোগে আপদকালীন চিকিৎসা মিলছে না। এরফলে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন গর্ভবতী ও শিশু সন্তানের মায়েরা। এছাড়া লকডাউনের মধ্যে মহিলাদের ওপর গার্হস্থ্য হিংসার ঘটনাও প্রচুর বেড়েছে। মেয়েদের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে হেনস্থা করা হচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে গোটা দেশের মহিলাদের বিপুল ভাবে সমাবেত করে দেশজুড়ে প্রতিবাদের কর্মসূচি নিল জাতীয় স্তরের কয়েকটি নারী সংগঠন। আগামি ২৮ আগস্ট। গত ২৯ ও ৩০ জুলাই এক অনলাইন আলোচনার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সংঘ, ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান উইমেন, অল ইন্ডিয়া প্রোগ্রেসিভ উইমেনস অ্যাসোসিয়েশন, প্রগতিশীল মহিলা সংগঠন, অল ইন্ডিয়া অগ্রগামী মহিলা সমিতি এবং অল ইন্ডিয়া মহিলা সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সংগঠনগুলির বক্তব্য, শ্রমজীবী জনতার সমস্যার সুরাহা করার বদলে কেন্দ্রীয় সরকার লকডাউনের সুযোগে একের পর এক দেশের সম্পদ বেসরকারিকরণ করে চলেছে। অন্যদিকে অতিমারি পরিস্থিতিতে কাজে লাগিয়ে প্রতিবাদী, আন্দোলনকারী ছাত্রযুব, শ্রমজীবী, সাংবাদিকদের গ্রেফতার করছে। কণঠরোধ করছে জনগণের। এমনকি বয়স্ক মানুষদেরও গ্রেফতার করছে না। জেলের মধ্যেকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নির্দিষ্ট নির্দেশিকা থাকলেও, তা মানা হচ্ছে না। দেশের বহু জেলে করোনা ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে গভীর সংকটে বন্দিদের জীবন।
সংগঠনগুলির দাবি, খাদ্য ও কাজের নিশ্চয়তা, বিনামূল্যে চিকিৎসা, পরিযায়ী শ্রমিক ও মহিলাদের হাতে সরাসরি টাকা দেওয়া, কৃষিক্ষেত্রের সংকট দূর করা, শ্রম আইন শিথিল না করা ইত্যাদি। পাশাপাশি সংখ্যালঘু, প্রতিবাদী ও ছাত্রদের ওপর আক্রমণ বন্ধ করারও দাবি তুলেছে তারা। পাশাপাশি তাদের বক্তব্য কোভিডকে ঘিরে সামাজিক ভাবে নানা কুসংস্কার ছড়িয়ে পড়েছে, তা বন্ধ করতে কার্যকর পদক্ষেপ করুক কেন্দ্র।
২৮ আগস্টের কর্মসূচির জন্য গোটা আগস্ট মাস জুড়ে বিভিন্ন রাজ্যস্তরের নারী সংগঠনগুলির সঙ্গে আলোচনা চালানো হবে। বড়ো আকারের জমায়েত করাই এই কর্মসূচির লক্ষ্য। পাশাপাশি শ্রমিক, কৃষিক, খেত মজুর, ছাত্র-যুব ও বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সংগঠনকে এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।