Home খবর বনভূমি বাড়ানোর জন্য আদিবাসী উচ্ছেদ তেলেঙ্গনায়

বনভূমি বাড়ানোর জন্য আদিবাসী উচ্ছেদ তেলেঙ্গনায়

বনভূমি বাড়ানোর জন্য আদিবাসী উচ্ছেদ তেলেঙ্গনায়
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: রাজ্যের বনভূমি ২৪ শাতংশ থেকে বাড়িয়ে ৩৩ শতাংশ করতে হবে। সেই জন্য ২০১৫ সাল থেকে ‘হরিতা হরম’ কর্মসূচি চলছে তেলেঙ্গনায়। সেই কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে ভদ্রাদ্রি খোটাগুদেম জেলায় উচ্ছেদ করা হল আদিবাসীদের।

কোয়া উপজাতি সম্প্রদায়ের ৮০টি পরিবার অভিযোগ করেছে, তাদের থেকে প্রায় ২০০ একর জমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে। সেই জমিতে তারা ডাল, বজরা ও তুলো চাষ করতেন। ২০১৯ সালে জমির অধিকার চেয়ে তারা জেলাশাসকের কাছে আবেদনও জানান। সেই প্রক্রিয়া এখনও সম্পূর্ণ হয়নি। তাদের জমিতে এখন চা বাগান তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

আদিবাসীরা জানিয়েছেন, গত ১৭ জুন থেকে একশো দিনের কাজের প্রকল্পের অধীনে পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে মজুররা এসে জমি খুঁজে বাগান তৈরির কাজ শুরু করে দিয়েছেন। ফসলের বীজ বোনা সত্ত্বেও আদিবাসীদের জমিতে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।

২০০২ সালে একই ভাবে আদিবাসীদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করেছিল বন দফতর। বন দফতরকে বাধা দেওয়ায় ২০টি পরিবারের ওপর মামলা করা হয়। তারপর থেকে ওই ২০টি পরিবার বারবার জমির অধিকার চেয়ে আবেদন করেছেন। অরণ্যের অধিকার আইন জারি হওয়ার পর, ওই আবেদনগুলিকে কাজে লাগিয়ে দেখানো হয় যে, পরিবারগুলি ওই জমিতে চাষ করছেন। কিন্তু তাদের জমির অধিকার দেওয়া হয়নি।

এবার, ৫০ জন কোয়া উপজাতিকে থানায় তুলে নিয়ে যায় পুলিশ। সেখানে তাদের ভয় দেখানো হয় যে, যদি তারা বাগান তৈরির কাজে বাধা দেবেন না জানিয়ে সই না করেন, তাহলে তাদের গ্রেফতার করা হবে। এর ফলে তারা ভয়ে সই করে দেন।

এই জমি তফসিলভুক্ত এলাকার অন্তর্গত। এই জমি অধিগ্রহণ করতে হলে গ্রামসভার অনুমতি দরকার। কিন্তু সরকার কোনো গ্রাম সভার থেকেই অনুমতি নেওয়া হয়নি। আদিবাসীরা জানতে পেরেছেন, আশেপাশের গ্রামের ঝুম চাষের জমিগুলিও সরকার অধিগ্রহণ করবে।

পঞ্চায়েত আইন ১৯৯৬ এবং অরণ্যের অধিকার আইন ২০০৬ অনুসারে আদিবাসী কৃষকদের জমি থেকে উচ্ছেদ বেআইনি। অরণ্যের অধিকার আইন অনুসারে, যথাযথ সমীক্ষা ও তদন্ত ছাড়া কোনো অরণ্যবাসীকে উচ্ছেদ করা যায় না। এই তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু করার অধিকার রয়েছে গ্রাম সভার। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঙওয়ার কথা জেলাস্তরে।      

কেন্দ্রীয় উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রী অর্জুন মুন্ডাকে হিরতা হরম প্রকল্প পুনর্মূল্যান করার আবেদন জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। অভিযোগ, ওই প্রকল্পে রাজ্য সরকার অরণ্যায়নের তহবিলকে কাজে লাগিয়ে ঈদিবাসীদের বুনিয়াদি অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। আদিবাসীদের জোর করে উচ্ছেদ করলে, শুধু যে তাদের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্থ হবে তাই নয়, বাস্তুতন্ত্রেও তা ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে।

পার্শ্ববর্তী খাম্মাম জেলার ৩৫টি আদিবাসী পরিবারকেও কিছুদিন আগে উচ্ছেদ করা হয়। আন্দোলনের জেরে আপাতত তাদের চাষ করতে দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনকারীদের বক্তব্য , আন্দোলনের জেরে সরকার সাময়িক ভাবে কোথাও কোথাও পিছু হঠলেও, উচ্ছেদ হওয়ার ভয় সারাক্ষণই আদিবাসীদের তাড়া করছে।

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *