![দুর্নীতিগ্রস্থ সরকারের পদত্যাগ দাবি করে টানা ১০ দিন পথে বুলগেরিয়ার জনগণ](https://peoplesmagazine.in/wp-content/uploads/2020/07/bulgaria-cover.jpg)
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: গত ৭ জুলাই বুলগেরিয়ার প্রেসিডেন্ট রুমান রাদেভের বাড়িতে ঢোকে সে দেশের সশস্ত্র সামরিক বাহিনী। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদও করে। পাশাপাশি জেরা করা হয় তার নিরাপত্তা সচিবদেরও। অভূতপূর্ব এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় পূর্ব ইউরোপের দেশটিতে।
আরও পড়ুন: বনভূমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ, আন্দোলনে উত্তর প্রদেশের আদিবাসীরা
বেশিরভাগ বুলগেরিয়াবাসী মনে করেন, দেশের প্রধান বিচারপতি ইভান গেশেভ তার কাজের পরিধির বাইরে গিয়ে প্রেসিডেন্টের বাড়িতে সেনা পাঠিয়েছেন। রাদেভ, প্রধানমন্ত্রী বইকো বরিশভের বিরোধী। তাঁর অভিযোগ, বুলগেরিয়ার সরকার রাজনীতিবিদদের আড়ালে বৃহৎ পুঁজিপতিরা চালাচ্ছেন।
![](https://peoplesmagazine.in/wp-content/uploads/2020/07/bulgaria-1.jpg)
ঘটনার জেরে ৯ জুলাই থেকে রাজধানী সোফিয়া সহ দেশের নানা শহরে রোজ পথে নামছেন ১০-২০ হাজার মানুষ। দুর্নীতিগ্রস্থ বরিসভ সরকারের পদত্যাগ চাইছেন তাঁরা। বি৭ওভের জেরে পেরথম দিন ১৮ জন প্রতিবাদী গ্রেফতার হন। ৪ জন আহত হন। আহত হয় ২ জন পুলিশও। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারের পদত্যাগের পাশাপাশি পুলিশি নিপীড়ন বন্ধ করার দাবিও উঠে আসে। বরিসভ পদত্যাগের দাবি না মানায় আন্দোলন জারি রেখেছেন মানুষ।
অসরকারি সংগঠন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সমীক্ষা অনুযায়ী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ২৭টি দেশের মধ্যে বুলগেরিয়া সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ। ২০০৯ থেকে বরিসভ ক্ষমতায় রয়েছেন। সমালোচকদের বক্তব্য ইতিমধ্যে গোটা দেশটাই বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। ২০১৯ সালের একটি হিসেবে দেখা গেছে, সরকারি লেনদেনের ৩৫% ক্ষেত্রেই দুর্নীতি হয়েছে। তবে শুধু রাজনৈতিক স্তরেই নয়, সামাজিক ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেও দুর্নীতি গ্রাস করেছে দেশটিকে। ইইউ-র সবচেয়ে গরিব অর্থনীতি বুলগেরিয়া।
![](https://peoplesmagazine.in/wp-content/uploads/2020/07/bulgaria-3.jpg)
বরিসভ সাম্রাজ্যবাদী গোষ্ঠী ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিশ্বস্ত দালাল। স্বাভাবিক ভাবেই চলতি আন্দোলনের পেছনে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের প্রভাব রয়েছে। আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিরোধী দলগুলি। তার চায় সরকার পদত্যাগ করে নতুন করে ভোট হোক।
তবে বরিসভ তাতে রাজি নন। ইতিমধ্যে তিনি তিনজন মন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে বললেও সরকারের সার্বিক পদত্যাগের কথা ভাবছেন না। ২০২১-এর শুরুতেই সে দেশে ভোট।
![](https://peoplesmagazine.in/wp-content/uploads/2020/07/bulgaria-cover-1-1024x576.jpg)
আন্দোলনে রয়েছে ‘ওয়ার্কার্স ব্লক’-ও। এই সংগঠনের সঙ্গে রয়েছে সে দেশের কমিউনিস্ট বিপ্লবীরা এবং বেশ কিছু স্বাধীন ট্রেড ইউনিয়ন। তাদের বক্তব্য- বরিসভ সরকার দুর্নীতিগ্রস্থ ঠিকই, কিন্তু নির্বাচনে তাদের হারিয়ে অন্য কোনো দল এলেও, তাদেরকেও নিয়ন্ত্রণ করবে বৃহৎ পুঁজিপতিরা। এই মর্মে তারা আন্দোলনের মধ্যে প্রচারও চালাচ্ছে।
আপাতত অশান্ত বুলগেরিয়া কীভাবে শান্ত হয়, সেদিকে নজর রয়েছে গোটা ইউরোপের।