পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: জনগণের প্রতিবাদকে ‘অপরাধ’ তকমা দিয়ে সে দেশে নতুন আইন এনেছে গ্রিসের সরকার। তার প্রতিবাদে উত্তাল গ্রিস। গত ৯ জুলাই ছিল প্রতিবাদ-বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিন। গ্রিস সংসদের সামনে জড়ো হন প্রায় ১০ হাজার মানুষ। প্রতিবাদকে ছত্রভঙ্গ করতে তীব্র দমন নামায় পুলিশ। কিন্তু তা প্রতিরোধ করেন সংগ্রামী মানুষ।
বিকেল নাগাদ এথেন্সের পথে জমায়েত হন হাজার হাজার মানুষ। তাদের শ্লোগান ছিস ‘শ্রমিকদের কণ্ঠস্বরকে স্তব্ধ করা য়াবে না। নতুন আইন পাস করা যাবে না’।
প্রতিবাদ শুরু হওয়ার এক ঘণ্টা পর কাঁদানে গ্যাস, স্টানিং গ্রেনেড ছুঁড়তে থাকে পুলিশ। বামো, পাথর, মলোটভ ককটেল দিয়ে উত্তর দেয় জনতা। দমন চললেও প্রতিবাদ থামাননি মানুষ। নতুন আইন পাস হওয়া অবধি প্রতিরোধ চলতে থাকে।
১ জন প্রতিবাদী আহত হয়, ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়, আটক করা হয় ১৫ জনকে।
এথেন্স ছাড়াও দেশের ৪০টি শহরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। থেসালোনিকি শহরে একটি ব্যাঙ্ক আক্রমণ করে বিক্ষোভকারীরা। জনতাকে আক্রমণ করে পুলিশ। জনগণ তাদের দিকে পাথর ও বোতল ছোঁড়ে।
প্রতিবাদীদের বক্তব্য, ধর্মঘট ও প্রতিবাদের অধিকার নিয়ে কোনো আপস সম্ভব নয়। নতুন আইনের প্রতিবাদে অ্যাটিকা রাজ্যে ধর্মঘটও করে ট্রেড ইউনিয়নগুলি।
২০০৮ সালে পুঁজিবাদী অর্থনীতির সংকটের দিনগুলি থেকে নিদারুণ দারিদ্র্যে দিন কাটাচ্ছেন গ্রিসের মানুষ। জঙ্গি প্রতিবাদ সে দেশে খুব চেনা বিষয়। ২০১০ থেকে ২০১২ পর্যন্ত প্রতিবাদ-ধর্মঘটে উত্তাল ছিল গ্রিস। আধা ঔপনিবেশিক গ্রিক রাষ্ট্র, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার নিদান মেনে অর্থনৈতিক কর্মসূচি লাগু করার প্রতিবাদে সে সময় উত্তাল ছিল এই বলকান দেশটি। বর্তমান সংকটে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের পরিমাণ আরও বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতেই এই নতুন আইন নিয়ে এল প্রতিক্রিয়াশীল গ্রিস রাষ্ট্র।
নতুন আইনে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ দমন করার জন্য একটি বিশেষ সরকারি পদ তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবাদী আন্দোলনকে নিয়ন্ত্রণ এমনকি কোনো কোনো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বেআইনি ঘোষণা করারও সংস্থান রয়েছে এই আইনে। কোনো প্রতিবাদীর দাবারা কোনো সম্পত্তি ধ্বংস হলে ক্ষতিপূরণ নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে আইনে।