কয়লা শিল্পে তিন দিনের ধর্মঘট প্রায় সর্বাত্মক, কয়লা ব্লক নিলামের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে ঝাড়খণ্ড
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: কেন্দ্রীয় সরকারের ৪১টি কয়লা ব্লক নিলাম ও কয়লা শিল্পে বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যিকরণের বিরুদ্ধে তিন দিনের ধর্মঘট শনিবার শেষ হল। গোটা ভারতে ছড়িয়ে থাকে প্রায় ৫ লক্ষ স্থায়ী ও ঠিকা শ্রমিক ব্যাপক মাত্রায় এই ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। সিটু, এআইটিইউসি, আইএনটিইউসি, এইচএমএস, বিমসের মতো পাঁচটি কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়ন ধর্মঘট ডাকলেও অন্যান্য ইউনিয়নগুলিও এই ধর্মঘটে সামিল হয়। তার মধ্যে রয়েছে রানিগঞ্জের ইসিএল ঠিকা শ্রমিক অধিকার ইউনিয়ন, গোদাবরী খনির এআইএফটিইউ সহ সিঙ্গারেনি ট্রেড ইউনিয়ন, জয়েন্ট ফোরাম ইত্যাদি।
ধর্মঘটের তিন দিন পশ্চিমঙ্গের বিভিন্ন খনিতে ৮০ থেকে ১০০ শতাংশ শ্রমিক কাজে অনুপস্থিত ছিলেন। তবে রাজ্যের শাসক দলের ভূমিকা ছিল খুবই খারাপ। তৃণমূলের ইউনিয়ন কেকেএসসি শুধু ধর্মঘটের বিরোধিতাই করেনি, তারা পুলিশকে কাজে লাগিয়ে ধর্মঘট ভাঙার চেষ্টা করেছে। ঝাঝরা কেলিয়ারিতে ধর্মঘট সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয়েছে। লাঠিচার্জও হয়েছে। এসব সত্ত্বেও বেশিরভাগ খনিতে ১০০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধ থেকেছে। শাসক দলের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে শ্রমিকরা ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন। ঝাড়খণ্ডে ইসিএলের রাজমহল, চিত্রা ও মুগমা অঞ্চলে ১০০ শতাংশ উৎপাদন বন্ধ ছিল।
ঝাড়খণ্ডের বিসিসিএল, তেলেঙ্গনায় গোদাবরী খনিতে সিঙ্গারেনি কোল মাইনস লিমিটেডে, ওড়িষার মহানদী কয়লা খনিতে তিন দিন কয়লা উৎপাদন হয়নি। ৮০ শতাংশ শ্রমিক কাজে যোগ দেয়নি। দেশের কোনো কোনো খোলামুখ খনিতে ঠিকা শ্রমিক দিয়ে কাজ হলেও শাসক শ্রেণির হিসেব মতো তিন দিনে প্রায় ৪ মিলিয়ন টন কয়লা উৎপাদন কম হওয়ার সম্ভাবনা।
কোল ব্লকের নিলাম, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব কয়লা শিল্পের বেসরকারিকরণের বিরোধিতার পাশাপাশি পরিবেশ ধ্বংস ও আদিবাসী উচ্ছেদের বিরুদ্ধেও সরব ছিলেন ধর্মঘটী শ্রমিকরা।
এছাড়া এদিনই রাজ্য সরকারের মতামত না নিয়ে রাজ্যের ২০টি কয়লা ব্লক নিলাম করার কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে মামলা করেছে ঝাড়খণ্ড সরকার। কিছুদিন আগেই তারা অতিমারির মধ্যে কয়লা ব্লকের ভার্চুয়াল নিলামের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে একটি পৃথক মামলা করেছে।