রাত পোহালেই কয়লা শিল্পে তিন দিনের ধর্মঘট, আসানসোলে মিছিল ঠিকা শ্রমিকদের
পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: কয়লা শিল্পকে বেসরকারিকরণ ও বাণিজ্যিকীকরণের বিরুদ্ধে এবং ৪১ টা কোল ব্লক নিলাম করে ব্যক্তি মালিকের হাতে তুলে দেবার বিরুদ্ধে ২,৩ ,৪ জুলাই গোটা দেশে কয়লা শিল্পে ধর্মঘট হতে চলেছে।সেই ধর্মঘটের সমর্থনে বুধবার সকালে মিছিল করে ইসিএল ঠিকা শ্রমিক অধিকার ইউনিয়ন । আসানসোলের বিএনআর থেকে আসানসোল কর্পোরেশনের আফিস পর্যন্ত মিছিল হয়।
ভারতের শিল্পের উন্নতির প্রয়োজনে ১৯৭২-৭৩ সালে কয়লা শিল্পের জাতীয়করণ হয়। কয়লার সাথে সাথে কোল সংস্থাগুলিকেও সরকার অধিগ্রহণ করে। এরপর ১৯৯৩ সাল থেকে কয়লা শিল্পকে ধাপে ধাপে বেসরকারি ব্যক্তি পুঁজির হাতে তুলে দেওয়া শুরু হয়। ভারত সরকার ২০১৫ সালে কোল মাইনস স্পেশাল প্রভিশনস অ্যাক্ট এনে ও বর্তমানে করোনার সুযোগে বেসরকারি কয়লা সংস্থাগুলিকে বাজারে কয়লা বিক্রির জন্য কোল ব্লক বরাদ্দ করে সরকারি কয়লা সংস্থাগুলির ধ্বংসের পথ তৈরি করেছে। এতদিন বেসরকারি কয়লা সংস্থাগুলি নিজেদের বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম কারখানা বা সিমেন্ট কারখানার জ্বালানি হিসেবে নিজেদের উৎপাদিত কয়লা ব্যবহার করতে পারত। বাণিজ্যিক ভাবে বাজারে বিক্রির অনুমতি ছিল না। কয়লাকে বাজারে বিক্রির অনুমতি দেওয়ায় বিভিন্ন শিল্প সংস্থাগুলি বেশি দামের কয়লা কোল ইন্ডিয়া থেকে না কিনে সবাই বেসরকারি সংস্থা থেকে কিনবে।
গত বছর, ২০১৯ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভা কয়লা শিল্পে ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগের ছাড়পত্র দিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগের ফলে দেশি-বিদেশি সংস্থাগুলির হাতে দেশের কয়লা সম্পদ চলে যাবে। বস্তুত, ১৯৯৩ সালে থেকে দেশের কয়লা সম্পদকে বেসরকারি মালিকদের হাতে তুলে দেওয়ার যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, এই সিদ্ধান্তে তা সম্পূর্ণ হয়েছে।
এই অবস্থায় ইসিএল ঠিকা শ্রমিক অধিকার ইউনিয়নের বক্তব্য, শুধু নিলাম বাতিল নয়। কোল মাইনস স্পেশাল প্রভিশনস অ্যাক্ট, ২০১৫-ও বাতিল করতে হবে। এছাড়া রদ করতে হবে ঠিকা প্রথা ও আউটসোর্সিং।
ধর্মঘট থামানোর জন্য ট্রেড ইউনিয়নগুলির সঙ্গে বসতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি ইউনিয়নগুলো। তিনদিনের ধর্মঘটে সামিল রয়েছে আরএসএস-এর ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘও।