পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: এপ্রিল মাসে চাকরি গেছে আড়াই কোটি মার্কিনির। বর্তমানে সে দেশে কর্মহীনতা ১৪.৭%। গত শতকের তিনের দশকে মহামন্দার পর কখনোই এত বেশি কর্মহীনতা দেখেনি সে দেশ। ১৯৩৩ সালে কর্মহীনতা পৌঁছেছিল ২৫ শতাংশয়। তখন অবশ্য সরকারি ভাবে এ সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ করা হত না।
আরও দেখুন: করোনা নয়, ১৬ শ্রমিক সহ লকডাউনের ধাক্কায় এর মধ্যেই প্রাণ গেল ৩০০ মানুষের, ভিডিও
মাত্র দুমাস আগে আমেরিকায় কর্মহীনতার হার ছিল ৩.৫ শতাংশ, যা গত ৫০ বছরে সর্বনিম্ন। অতিমারি শুরু হওয়ার পরই মার্কিন অর্থনীতির বৃদ্ধি গত দশ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছয়। খুচরো ব্যবসা পৌঁছয় সবচেয়ে খারাপ অবস্থায়।
মার্কিন শ্রম দফতর থেকে প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই পতন হয়েছে, তবে সবচেয়ে বেশি পতন হয়েছে বিনোদন ও আতিথেয়তা(হোটেল, পর্যটন, রেস্তোরাঁ, বার ইত্যাদি) শিল্পে। এই দুই ক্ষেত্রে ৭৭লক্ষ মানুষের চাকরি গেছে, যা মোট চাকরির ৪৭%। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আড়াই লক্ষ মানুষের চাকরি গেছে, খুচরো ব্যবসায় চাকরি গেছে ২লক্ষ ১০ হাজার মানুষের।
তবে শ্রম দফতর জানিয়েছে, যাদের চাকরি গেছে, তাদের এক তৃতীয়াংশই বলছে যে তারা অস্থায়ী ভাবে কর্মহীন। এর অর্থ তারা কিছুদিন পর চাকরি ফিরে পাবেন। অর্থাত নাকি অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে।
কিন্তু অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পরিস্থিতি এতটা ভালো নাও হতে পারে। কারণ অতিমারির পর রেস্তোরাঁগুলি কম লোক নিয়ে কাজ করবে, ফলে কর্মীর সংখ্যা কম লাগবে। তাই সকলে কাজ ফিরে পাবে না। অন্যদিকে যদি বেশিদিন লকডাউন চলে, তাহলে অনেক ব্যবসাই বন্ধ হয়ে যাবে, তখন কাজ ফিরে পাওয়ার প্রশ্নই উঠবে না।
শুধু আমেরিকা নয়, মন্দার প্রভাব পড়েছে সর্বত্রই। ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ড বলেছে ঐতিহাসিক ভাবে সবেচেয়ে তীব্র মন্দার মধ্যে রয়েছে দেশ। কানাডা জানিয়েছে, সে দেশের মোট কর্মীর এক তৃতীয়াংশের হয় কাজ নেই, অথবা তারা যতক্ষণ কাজ করতেন, তার অর্ধেক সময় কাজ করছেন। ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন তো আগেই জানিয়েছে, ইতিহাসের সবচেয়ে বড়ো মন্দার মধ্যে রয়েছে তারা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অবশ্য এসবকে পাত্তা দেনি। তার কথায় এটা ‘প্রত্যাশিত’ই ছিল। এই মন্দা ‘কৃত্রিম’ ভাবে তৈরি হয়েছে। সব চাকরিই নাকি ফিরে আসবে এবং ‘সামনের বছরটা দারুণ যাবে’।