Home খবর শ্রমিকদের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ নামাতে অতিমারিকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি: যৌথ বিবৃতি

শ্রমিকদের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ নামাতে অতিমারিকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি: যৌথ বিবৃতি

শ্রমিকদের ওপর সর্বাত্মক আক্রমণ নামাতে অতিমারিকে কাজে লাগাচ্ছে বিজেপি: যৌথ বিবৃতি
0

পিপলস ম্যাগাজিন ডেস্ক: শ্রমিকদের শোষণ করার সুযোগ কারা বেশি দেবে, তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় নেমেছে বিজেপি-শাসিত রাজ্য সরকারগুলো। এই যৌথ প্রেস বিবৃতিতে দাবি করল ছটি ট্রেড ইউনিয়ন। এদের মধ্যে রয়েছে এআইএফটিইউ, এনডিএলএফ, ইসিএলটিএসএইউ, এনটিইউআই, ইফটু ও টিইউসিআই।

দেশের যাবতীয় শ্রম আইনকে চারটি শ্রম কোড বিলের মধ্যে নিয়ে এসে শ্রম সংস্কারের প্রক্রিয়া কেন্দ্রীয় সরকার শুরু করেছিল গত বছরের নভেম্বরেই। লকডাউনের মধ্যে সেই প্রক্রিয়াকেই ত্বরাণ্বিত করতে চাইছে তারা, এমনই অভিমত ট্রেড ইউনিয়নগুলির। কেন্দ্রের লক্ষ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই গুজরাট, হিমাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ ও উত্তর প্রদেশের মতো চারটি বিজেপি শাসিত রাজ্য শ্রম আইনে একগুচ্ছ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। সেগুলো সবই রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।

রজ্যে যে সব বিনিয়োগকারী অন্তত ১২০০ দিনের জন্য বিনিয়োগ করবেন, তাদের জন্য গুজরাট সরকার চমকপ্রদ অফার দিয়েছে। ন্যূনতম মজুরি আইন ও শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আইন ছাড়া তাদের সংস্থায় আর কোনো শ্রমিক আইন থাকবে না।

হিমাচল প্রদেশ সরকার অধ্যাদেশ জারি করে দিনে ১২ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ৭২ ঘণ্টার কর্মদিবস বাধ্যতামূলক করে দিয়েছে। কোনো ওভারটাইমের সুযোগ নেই।

২ মাসের পুরনো মধ্যপ্রদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের কারখানা আইনের প্রায় সবকিছুতেই ছাড় দিয়ে দিয়েছে। এমনকি জল ও বাথরুমের ব্যবস্থাও বাধ্যতামূলক নয়। ৩০০-র বেশি শ্রমিক রয়েছে এমন কোনো সংস্থা যদি ১২০০ দিনের মধ্যে কোনো কারণে কারখানা বন্ধ করে দেয়, তাহলে শিল্পক্ষেত্রে দ্বন্দ্ব সংক্রান্ত আইনকে কাজে লাগিয়ে কোনো অভিযোগ জানানো যাবে না।

বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বেশি সুযোগ অবশ্য দিচ্ছে উত্তর প্রদেশ সরকার। শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ আইন, ভবন ও অন্যান্য নির্মাণ কর্মী আইন, নিদিষ্ট দিনে মজুরি দেওয়ার আইন, মাতৃত্বকালীন সুবিধার আইন এবং শিশু শ্রমিক আইন ছাড়া সব কিছুই বাদ দেওয়া হয়েছে।

পাশাপাশি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার অবিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিকে নিয়মিত চিঠি পাঠাচ্ছে, তারা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য চাকরি ও ১২ ঘণ্টার কর্মদিবসের ব্যবস্থা করার পথে কতদূর এগিয়েছে, তা জানার জন্য। শ্রম আইন সংস্কারের পথে তারা কতটা এগলো, তা জানার জন্য প্রতি সপ্তাহেই যোগাযোগ করা হচ্ছে কেন্দ্রের তরফে।

লকডাউনের সময়, যখন সংসদ ও রাজ্য বিধানসভাগুলির অধিবেশন বসছে না, তখন এই ধরনের আইনগুলো তাড়াতাড়ি পাশ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করাটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে ইউনিয়নগুলো. পুঁজিপতিদের চাপই এর কারণ বলে মনে করছেন তারা।

এই পরিস্থিতিতে অবিজেপি/এনডিএ পার্টিগুলি কী অবস্থান নেয়, সে দিকে নজর রাখার কথা বলা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

ইউনিয়নগুলির অভিযোগ, বিজেপি শ্রমিকদের মানুষ বলে মনে করে না, স্রেফ উৎপাদনের যন্ত্র মনে করে। পরিযায়ী শ্রমিকদের ট্রেনে কাটা পড়ে মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোকপ্রকাশকে ‘কুমিরের কান্না’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে ওই বিবৃতিতে।

শ্রমিকদের সম্পর্কে বিজেপির দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত সীমাবদ্ধ বলে মনে করছে ইউনিয়গুলি। তারা শুধু ঘামরক্ত দিয়ে অর্থনীতিকে এগিয়েই নিয়ে যান না, বেশি মজুরি এবং অধিকার পেলে, ক্রেতা হিসেবেও তারা দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। যা দেশের অর্থনীতিতে সমৃদ্ধি আনতে পারে।

সব মিলিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও বিজেপি শাসিত রাজ্য সরকারগুলির শ্রম আইনে সংস্কার, শ্রমিকদের সংবিধান-স্বীকৃত বুনিয়াদি অধিকারগুলো কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা বলে মনে করছে ছটি ইউনিয়নের ওই যৌথ বিবৃতি।      

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *