Home রাজনীতি রেশন-দুর্নীতি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া: একটি রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা

রেশন-দুর্নীতি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া: একটি রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা

রেশন-দুর্নীতি নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে গ্রেফতার হওয়া: একটি রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা
0

সৌম্য মণ্ডল

(দক্ষিণ কলকাতার বাঁশদ্রোণী এলাকায় বস্তিবাসীকে রেশনের প্রাপ্য নিয়ে সচেতন করার কাজ করছিলেন গণ আন্দোলন কর্মী সৌম্য মণ্ডল। সেই কাজ করতে গিয়ে স্থানীয় তৃণমূলকর্মীদের সঙ্গে বচসা-হাতাহাতি হয় তার। ঘটনার জেরে পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। পরে বিভিন্ন্ মানবাধিকার ও রাজনৈতিক কর্মীদের সক্রিয়তায় জামিনে মুক্ত হন। তিনি তার অভিজ্ঞতা বিস্তারে লিখলেন।)

যদিও মার্কসবাদী অর্থনীতি এটাই বলে লকডাউনের বাজারে আজকে যারা ত্রাণ দিচ্ছেন, আগামী কাল তাদেরই ত্রাণের প্রয়োজন হবে। খাবার বিলির এই উৎসাহে ভাটা আসতে বাধ্য। যদিও মানুষ আরো বেশি দারিদ্রে নিমজ্জিত হবে। তাই ফোন নম্বর দিয়ে এসেছিলাম।  যা ভেবেছিলাম হলও তাই। বিহারি ইস্ত্রিওয়ালারা আশেপাশের ফ্ল্যাটগুলো থেকে খাবার পেলেও রিক্সাচালকরা ফোন করতে শুরু করলো। তাদেরকে থানায় নিয়ে গিয়ে খাবার জোগাড় করা হয়েছিলো ৪/৫ দিনের মতো। যদিও থানার দাবি অনুযায়ী এই খাবার তারা নিজেদের পকেট থেকে দিচ্ছে। পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়ার কেন্দ্রী সরকারের নোটিশের কথা বল্লাম।  পুলিশ বলল, এই খাতে তাদের কাছে কেন্দ্র বা রাজ্য কোনো তরফেরই ফান্ড আসেনি। 

যাদের রেশন কার্ড আছে তাদের সাথে গোটা এপ্রিল মাস জুড়ে কথা বলে জানার চেষ্টা করেছি কে কতটা রেশন পাচ্ছেন। আর তাদের নোটিস দেখিয়ে অবগত করেছি কতটা রেশন তার প্রাপ্য। ২৮ তারিখ ৯৮ নং ওয়ার্ডের ১৬৫ নং বস্তির বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে ঠিক করা হয় মে দিবসে সবাই মিলে সকাল ৯টার সময় রেশন দোকান যাওয়া হবে। কিন্তু এই কর্মসূচি ভেস্তে দেবার জন্য তৃণমূলের গুন্ডা নেতারা যা করার করেছিলো। কিন্তু পাল্টা কৌশলের কাছে তৃণমূলের চক্রান্ত শোচনীয় ভাবে পরাস্ত হয়। ১ মে  আমি বস্তির মানুষদের সাথে রেশন দোকানে পৌছে যাই। যদিও যত মানুষ যাবার কথা ছিলো তত মানুষ যাননি। রেশন দোকানের সামনে গিয়ে দেখলাম এক তৃণমূল নেতা তার সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি রেশন দোকানদারের সাথে তর্কে জড়ালে তিনিও রেশন দোকানদারের বিরুদ্ধে হম্বিতম্বি শুরু করেন। তিনি এলাকার কাউন্সিলর বলে নিজের পরিচয় দেন। আমি তাকে ফুড কুপন না পাওয়া মানুষদের কথা জানাই।  তিনি লিস্ট তৈরি করে আমাকে তার সাথে দেখা করতে বলেন। তার পর অন্য রেশন দোকানগুলোতে আমার আগে পৌছানোর জন্য বাইকে চেপে দৌড়ান। ওইদিন রেশন ডিলারের থেকে বস্তিবাসীরা গত মাসের না পাওয়া প্রাপ্য আদায় করে নিয়ে যান । বস্তিবাসীদের মধ্যে খবর ছড়িয়ে পড়ে। এর পর আরো মানুষ এসে আগের মাসের না পাওয়া খাদ্য আদায় করে নিয়ে যান। রেশন ডিলারের সাথে এই কথা হয়েছিলো যে ওইদিন আগের পাওনা মিটিয়ে দেবেন আর পরের দিন মে মাসের রেশন দেবেন। বস্তিবাসীরা পুরো রেশন তুলে নিয়ে যাবেন। এক দানাও কম নেবেনা কেউ। ওই দিন আমি আবার বস্তিতে কথা বলতে গেলে আঞ্চলিক দুজন তৃণমূল নেতা আমাকে বাধা দেয়। আমি ঝামেলা না পাকিয়ে ফিরে আসি। তারপর বস্তিবাসীরা আমাকে ফোন করে তৃণমূলের নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে থাকেন। ওরা বলছিলেন তৃণমূলের এই লোকজন এপ্রিল মাসেও রেশন দোকানের সামনে দাড়িয়েছিলো রাজ্য সরকার ফ্রি তে চাল দিচ্ছে সেটা জানাবার জন্য, কিন্ত কেউ কখনও বলেনি ১ কেজি চিনি প্রাপ্য, ৭/৮ কেজি করে কম চাল গম দেওয়া হচ্ছে ! আজকে আপনি গেলেন বলে ও বাইক নিয়ে দৌড়ালো। আগে কখনো পুরো রেশন পাইনি। আমরা জানতামই না কতটা পাওয়ার কথা। এরা এক দুই কিলো চাল দিয়ে গেছে পার্টি থেকে, কিন্তু ৭/৮ কিলো চাল গম আমার রেশন থেকে চুরি গেল সেটা বলেনি কখনো। বুঝলাম কাজ হয়েছে। রেশন দোকানদারের সাথে আমাদের কথপোকথন কিছুটা ভিডিও করেছিলাম। মানুষ দেখে উৎসাহ পাবে বলে। কিন্তু সেই ভিডিও গণহারে প্রচার করা হয়নি ১ তারিখ। বস্তিবাসীদের যা কাছেই ভিডিও দিয়েছিলাম তার সাথে আলোচনা করলাম রেশন ডিলারকে অপরাধী সাজিয়ে সামাজিক ভাবে হেনস্থা করা আমাদের উদ্দেশ্য নয়। এই সমাজব্যবস্থার জন্যই সেও চুরি করতে বাধ্য হয়। আমরা দেখবো উনি যেন আর চুরি না করেন আর যার যতটা রেশন দরকার সে যেন ততটাই পায়। সমস্যাটা ব্যক্তির নয় বরং সমাজের। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বস্তির কয়েকজনকে দেখিয়ে ভিডিওটি ডিলিট করে ফেল্লেন।                  

পরের দিন ২ তারিখ সকালে আবার ফোন করলেন একাধিক বস্তিবাসী। তাদের দাবি আজকেও রেশনে কম দিয়েছে। আবার তাদের সাথে রেশন দোকান যেতে হবে। জানাই আমি প্রতিদিন যাবো না। 

শুধু বলে দেব আপনার কতটা প্রাপ্য। আপনাকে নিজে গিয়ে ডিলারকে হিসেব বোঝাতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপে তার কিছু বিল পাঠালেন।  বিলগুলো পড়ে দেখলাম রেশন ডিলার ঠিকঠাকই রেশন দিয়েছেন এবার। কিন্তু মানুষ নিজেদের রেশনকার্ডগুলোর পার্থক্য বুঝতে ভুল করছে। তারা শুধু ছোটো কার্ড বড়ো কার্ড বোঝে। ছোটো কার্ডের মধ্যেও যে AAY, SPHH  কার্ডের আলাদা আলাদা প্রাপ্য তা তারা বুঝতে পারছে না। এ ছাড়াও তারা সংবাদপত্রে  পড়েছে ডাল পাওয়ার কথা। কিন্তু রেশন ডিলার ডাল দিচ্ছে না।বাস্তবে সত্যিই কেন্দ্রীয় সরকার ডাল দেবার কথা ঘোষণা করার পর এক দানাও ডাল পাঠায়নি। ১ মে-র ঘটনায় মানুষের মধ্যে উৎসাহ ছড়িয়ে পড়েছে এবার সে তার একটুও প্রাপ্য ছাড়বে না। আমি তাদের বলি কাউন্সিলরের বাড়ি হয়ে ফেরার পথে কোন কার্ডে কী পাওয়া যায় সেটা বুঝিয়ে দিতে আসছি। অর্থাৎ এবার আমাকে যেতে হল অকারণ জনরোষের বিরুদ্ধে রেশন ডিলারের হয়ে সওয়াল করতে। 

জানতে পারলাম ১ মে  রেশন দোকানের সামনে আলাপ হওয়া ওই তৃণমূল নেতা ৯৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নন। তিনি কাউন্সিলর হতে চান। আপাতত তিনি মনে মনে কাউন্সিলর। আসল কাউন্সিলর হলেন সিপিআই(এম) এর  মৃত্যুঞ্জয় বাবু।  সকাল পৌনে বারোটায় তার অফিসে গিয়ে কথা বললাম তিনটি বিষয়ে, প্রথমত জানতে চাইলাম রিক্সা চালক বা অন্য রেশনহীন মানুষেরা, যারা অন্য লোকের দয়াতে খাচ্ছেন তাদের জন্য কী সরকারি ব্যবস্থা আছে? উনি জানালেন এইরকম কোনো সরকারি  ব্যবস্থা নেই। ত্রাণ দিতে গিয়ে ওনার বিশাল অঙ্কের ব্যক্তিগত  টাকা খরচ হয়ে গিয়েছে। এর পর আমাকে উনি কয়েকটা তালিকা দেখিয়ে বললেন রেশন কার্ডহীন এই সমস্ত মানুষদের তালিকা তৈরি করে তিনি ইতিমধ্যে মেয়রকে জমা দিয়েছেন কিন্তু কোনো উত্তর আসেনি। 

দ্বিতীয়ত জানতে চাইলাম আপনার ওয়ার্ডে যাদের ফুড কুপন পাওয়ার কথা তারা অনেকেই সেটা পাননি কেন? ফুড অফিস থেকে তো আপনার কাছে ফুড কুপন পাঠাবার কথা। উনি উত্তরে বললেন, সমস্ত ফুড কুপন বোরো অফিস থেকে তৃণমূল নিয়ে পালিয়েছে।  ওনার কাছে কোনো ফুড কপন আসেনি। আমাকে বোড়ো অফিস গিয়ে ধরতে বললেন। 

তৃতীয়ত রেশন দুর্নীতি রোধে কাউন্সিলের দায়িত্ব পালন করার কথা বললাম, উনি অসহায়ের মত সহমত পোষণ করলেন। 

কাউন্সিলর অফিস থেকে বেড়িয়ে বস্তিতে গেলাম। কার্ড ধরে ধরে বলছিলাম কে কতটা পাবেন। আর ওই বস্তির পড়াশোনা করা কমবয়সিদের বলছিলাম তারা যদি হিসেবটা বুঝে যায়, তবে নিজেরাই বাকিদের বুঝিয়ে দিতে পারবে আমার আর আসার দরকার হবে না। কথা চলতে চলতে হঠাৎ বাইকে চেপে মনে মনে কাউন্সিলর সেই তৃণমূল নেতা সাঙ্গপাঙ্গ নিয়ে ঢুকে আমাকে শারিরীক ভাবে আক্রমণ করেন। প্রথম আঘাত পাল্টা আঘাতের পর পুরোদস্তুর মারামারি শুরু হওয়ার আগেই আমাকে আর তৃণমূলিদের আটকে দিলেন বাসিন্দারা।  এর পর তৃণমূল নেতাকে আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের  ঘিরে ধরে কড়া কড়া প্রশ্নবাণ ছোঁড়েন বিভিন্ন বুডোবুড়ি থেকে শুরু করে যুবক শ্রমজীবীরা। যাকে বলে জনগণের কাছে চুড়ান্ত বেইজ্জত হওয়া। তৃণমূল নেতা আমার বস্তিতে যাওয়ার উদ্দেশ্য জানতে চায়। আমি পাল্টা প্রশ্ন করি কে কতটা রেশন পায়  সেটা মানুষ জানলে আপনার সমস্যাটা কোথায়? আপনার বাধা দেওয়ার উদ্দেশ্যটা কী? গণরোষে তৃণমূলিরা পর্যুদস্ত হয়।তারা পুলিশ ডেকে আনে এবং পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে যায়। প্রথমে ঘন্টা দুয়েক রেখে দেওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু বস্তির মানুষেরা বেশ কয়েকবার থানার গেটে এসেছিলেন, আমাকে ফোন করে বারবার দেখা করে বাড়িতে চা খেয়ে যাওয়ার কথা বলছিলেন। আমি গেলাম চা খেতে। দেখলাম রাস্তার উপর অনেক বস্তিবাসী বসে আছেন। তারা আমাকে দেখে তৃণমূলিদেরকে বিভাবে জব্দ করেছেন সে সব বলতে শুরু করলেন। চা বানানো শুরু হলো।  আবার তৃণমূল পুলিশকে খবর দিলো। পুলিশ আবার আমাকে  থানায় নিয়ে গেল। পুলিশকে বললাম, চা খেতে এসেছি, আড্ডা মারতে নয়, চা খাওয়া হয়েগেলে বাড়ি চলে যাবো। কিন্তু পুলিশ শুনলো না।   

এবার মানি ব্যাগ, ফোন এমনকি বেল্টটা পর্যন্ত খুলে নিয়ে লকাপে ঢুকিয়ে দেওয়া হল। আমাকে বলা হল কালাকানুন  ডিএম আইন অনুযায়ী কেস দেওয়া হবে। আমি ভাবলাম পরের দিন কোর্টে তোলা হবে। বা যদি মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জামিন দিতে চায় তাহলে নেব না। সরকার যদি মানুষের বাইরে বেরোবার কারণ মজুত রাখে তবে মানুষ বাইরে বেরোবেই। খাওয়ার বন্দোবস্ত না করে জরিমানা চলবে না। এতসব ভাবতে ভাবতে লকাপে ঘুমিয়ে পড়লাম।  সন্ধ্যা বেলায় আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুললেন এক পুলিশ কর্মচারী। আমাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। থানায় বিভিন্ন স্তরের পুলিশের সাথে আমার যা কথা হলো তার নির্যাস এই – 

পুলিশ আমাকে লকডাউন ভেঙ্গে না বেরোবার কথা বলছিলো। আমি বলেছি মানুষের সমস্যা সরকারি সংস্থাগুলো মেটাতে না পারার কারণে মানুষ যদি আমাকে ফোন করে ডাকে তবে আমি বেরবো। তৃণমূলিরা যদি লকডাউন ভেঙে বের হয় তবে আমি অবশ্যই বেরবো। তৃণমূল যদি ‘ওয়ার্ক ফ্রম হোম’ করে তবে আমি বাড়িতে বসে ফোনে কাজ সেরে নেওয়ার চেষ্টা করতে পারি। পুলিশ আধিকারিক সহ বেশ কিছু মানুষ আমাকে প্রশ্ন করেছে রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ফুড ডিপার্টমেন্টে অভিযোগ জানাইনি কেন? অভিযোগ জানাইনি তার দুটি কারণ। প্রথমত ফুড ডিপার্টমেন্ট সমস্যার সমাধান না করে রেশন দোকানটাই বন্ধ করে দেওয়ার নীতি নিয়েছে। এটা আসলে গরিব মানুষকে ব্লাকমেল করা ছাড়া কিছু নয়। সরকার বলতে চায় ন্যায্য অধিকার চাইলে যেটুকু পাচ্ছ সেটুকুও আর পাবে না। তাই কোনো রেশন দোকান বন্ধ হওয়াটা সমাধান নয়। রেশন ডিলারকেও সেটা বলে এসেছি। চুরি না করে স্বাভাবিক ভাবে দোকান চালান। 

দ্বিতীয়ত উদ্দেশ্য হল মেহনতি মানুষকে সক্রিয় হতে সাহায্য করা। নিজের অধিকার নিজে বুঝে নিতে সাহায্য করা। চিঠি লিখে দোকান বন্ধ করিয়ে ডিলারের কিছু ক্ষতি হতে পারে, আর আমার “কেমন বাঁশ দিলুম” মার্কা আনন্দ হতে পারে। কিন্তু তাতে মানুষের রাজনৈতিক সক্রিয়তা বাড়ে না।   

২ মের ঘটনা নিয়ে সিপিআই(এম) দলের মুখপত্র গণশক্তিতে একটি খবর বেড়িয়েছে রবিবার। সংবাদটি সাংবাদিকটির কুঁড়েমির নমুনা নাকি রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার ফসল সেটা তিনিই বলতে পারবেন। হ্যাঁ, আমি বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ লিখি, রাজনৈতিক পর্যালোচনা মূলক প্রবন্ধ লিখি। আমার প্রেস কার্ড নেই। তাতে কী যায় আসে? রেশন দূর্নীতি নিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে কথা বললে শাসক দলের আপত্তির কারণ থাকতে পারে। কিন্তু সিপিআই(এম) কাউন্সিলর বা গণশক্তির আমার উদ্দেশ্য নিয়ে  ‘সন্দিহান’ হওয়ার kr কারণ থাকতে পারে সেটা তারাই বলতে পারবেন। 

আমাকে ছাড়াবার জন্য থানায় বস্তিবাসীরা চাপ দিয়েছিলেন, উপস্থিত ছিলেন আঞ্চলিক  সিপিআইএম এবং সিপিআই(এমএল) লিবারেশন সদস্যরা। এপিডিআর, সিআরপিপির সদস্যরা ছাড়াবার জন্য চাপ দিয়েছেন, বিপ্লবী ছাত্র ফ্রন্টের সাথীরা আমার বাড়িতে এসেছিলেন। এ ছাড়াও অনেক বাম, প্রগতিশীল সংগঠন ও  ব্যাক্তিরা পুলিশের উপর চাপ তৈরি করেছেন। প্রশাসন চাপে পড়ে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

আগামী দিনে খাদ্য সংকট এবং খাদ্য আন্দোলন রাজনীতির কেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছে। গুদামে খাবার থাকবে কিন্তু মানুষের হাতে কিনে খাওয়ার পয়সা থাকবে না। গণক্ষমতা বিষয়টাকে মাথায় রেখে ত্রাণ বিলোবার থেকে জনগণকে সক্রিয় হতে সাহায্য করার কর্মসূচিতে সমাজ পরিবর্তনকামি মানুষেরা জোর দেবেন বলে আশা রাখি। যে সময় আসছে তাতে আমার মতে এ যাবৎকালের শ্রেষ্ঠ শ্লোগানটা আবার আরো বেশি প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠবে মনে হয়  

“কেউ খাবে আর 

 কেউ খাবে না

তা হবে না,

তা হবে না”।                                      

Share Now:

LEAVE YOUR COMMENT

Your email address will not be published. Required fields are marked *